
Home যশোর জেলা / Jessore District > যশোরে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য / Liberation Sculpture in Jessore District
এই পৃষ্ঠাটি মোট 99858 বার পড়া হয়েছে
যশোরে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য / Liberation Sculpture in Jessore District
জীবন অনেক বড়; কিন্তু তার চেয়ে বড় শিল্পকীর্তি। নিজেকে এবং প্রতিবেকে সুন্দর করা মানুষের অন্যতম মৌল কর্তব্য। আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে অনেক বড় মাপের শিল্পকর্ম হতে পারত। লিখিত হতে পারত হৎ কোন উপন্যাস, অঙ্

শিল্প নিজ শক্তিতেই শিল্পীর প্রকাশিত বিশেষ আবেগের শক্তিতে শ্রোতা বা দর্শকের সাধারণ অনুভূতিকে প্রভাবিত করে। আর তাই ইতিহাসে দেখা যায়, যে কোন জাতির সর্বোচ্চ বিকাশলগ্নে মহান শিল্পের অভ্যুদয় ঘটেছে। মহান শিল্প সব সময় আমাদরে প্রতিটি বোধ্য উদ্দীপনা ও আনন্দের উৎস হতে পারে। বাংলাদেশ যখন ইতিহাসের গর্ভে তখনই নির্মিত হয় ম্রেষ্ঠ সিনেমা জীবন থেকে নেয়া বা স্টপ জেনোসাই। এই চিত্রে আমরা প্রত্যক্ষ করি ইতিহাসের প্রসব বেদনা। জন্মদানের আনন্দ- গৌরবে তা বর্ণনাতীত সৌন্দর্যে আবির্ভূত, উপস্থাপতি। আবার যুদ্ধোত্তর কালে নির্মিত হয়েছে অরুণোদয়ের অগ্নিপরীক্ষা এবং মুক্তির গান। চিরায়ত অভিধায় সেগুলি সংস্কৃতির ইতিহাসে যোগ্য আসন নিয়েছে। তবু মুক্তি সংগ্রামের বিপুল শিল্প সম্ভাবনাকে তা কিছুতেই নিঃশ্বেস করে না।
শিল্পের একটি শক্তিশালি মাধ্যম ভাস্কর্য। বাংলাদেমশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে, শিল্পের এই মহাকাব্যিক উপাদানকে অ

যশোর স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম শত্রুমুক্ত জেলা শহর। যশোর ক্যান্টনমেন্ট ছিল পাকিস্থানীদের একটি শক্ত ঘাটি। সেই শক্ত ঘাটি ত্যাগ করে পাকিস্তানী বাহিনী পালিয়ে যায় ৬ ডিসেম্বর রাতে। আর যৌথবাহিনী হরে প্রবেশ করে ৭ ডিসেম্বর। প্রবাস থেকে এসে 11 ডিসেম্বর যশোর টাউন হল ময়দানে বাংলাদেশ সরকার আর স্বাধীনতার আনন্দে উদ্বেলিত হাজার হাজার বিজয়ী মানুষ আয়োজন করে এক বিশাল সমাবেশ। শুরু হয় বাংলাদেশের প্রথম জেলা প্রশাসন।

এই শহরের প্রথম বিজয় স্তম্ভটি নির্মিত হয় স্বাধীনতার অব্যবহিত পরই যশোর সিটি কলেজেরসম্মুখে সাবেক কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে। দীর্ঘদিন যাবৎ এই বিজয় স্তম্ভটি চরমভাবে অবহেলিত। নুতনভাবে, নতুন ডিজাইনে পাশেই আর এক

এই শহরের দ্বিতীয় ভাস্কর্য স্তাপিত পুরাতন কসবায়, এই সড়ক দ্বীপে। জাগ্রত বাঙালি নামের এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেন ভাস্কর রকিবুল ইসলাম শাহিন। নয় বছর পূর্বে নির্মিত এই ভাস্কর্যে মুক্তির জন্য যুদ্ধ এবং শান্তির বার্তা ঘোষণা করা হয়েছে।
মাইকেল মধুসুধন কলেজে স্তাপিত হয়েছে চেতনায় চিরঞ্জীব। ভাস্কর চারুপীঠের অধ্যক্ষ মাহবুব শামীম। কলেজের শিক্ষক ছাত্রীদের দীর্ঘদিনের দাবিতে এই ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়। অপার শান্তির লক্ষেই মুক্তি। এই বার্তা মূর্ত হয়েছে প্রজ্জ্বলিত কিন্তু এখন সে অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। খোলা দুয়ার’ নীতির কারণে

ভাষার প্রতিযোগিতার প্রশ্ন যখন উঠল তখন বিনিয়োগ ও লাভের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক কারণে যদি আমাদের ইংরেজি ভাষা শেখা দরকার হয় তাহলে প্রশ্ন উঠবে বাংলাদেশের ১৪ কোটি মানুষের মধ্যে কতজনের সেই ইংরেজি জানা প্রয়োজন? যদি তার সংখ্যা এক লক্ষও হয় তবে সেজন্য গোটা জাতির ঘাড়ে সে ভাষার ভার দেওয়া কেন? গোটা জাতিকে এই বিদেশি ভাষা শেখাবার জন্য কত কোটি টাকা লাগি করা প্রয়োজন হবে? বাংলাদেশের মত একটি গরীব দেশ কি সেই অর্থ যোগান দিতে পারে? অর্থনৈতিক অগ্নিশিখায়। ১৯৭১ সালের আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যে অগ্নিশিখায় জলে উঠেছিল সমগ্র জাতি এবং অগ্নিশুদ্ধ হয়ে ওঠে নয় মাসের অগ্নিঝরা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। এই ভাস্কর্যে দেখানো হয়েছে কীভাবে গ্রামের বাউল, ছাত্র, কৃষকজনতা তথা সমগ্র জাতি প্রজ্জ্বলিত করেছিল আন্দোলন- যুদ্ধের অগ্নিশিখা। আজও তারা সে অগ্নিশিখা বহন করে চলেছেন, মুক্তির চুড়ান্ত বিজয় অর্জন পর্যন্ত তা বহন করে যাবেন তারা।
যশোর মহিলা কলেজে স্তাপিত হয়েছে প্রদীপ্ত স্বাধীনতা ভাস্কর্য। খন্দকার বদরুল ইসলাম এই ভাস্কর্যে সাদা, কালো লাল ও সবুজ রঙ ব্যাবহার করেছেন প্রতীক হিসেবে। সেখানে বিধৃত হয়েছে একই সঙ্গে শ্যামল বাংলার বুকে রক্তের হোলিখেলা, শোক, বিজয়ের আনন্দ এবং শান্তির বাণী। লাল সূর্য একই সঙ্গে সংগ্রাম এবং অরুণোদয়ের প্রতিকও । এখানে নির্মিত অন্য কোন ভাস্কর্যে রঙের একন প্রতিীকি ব্যবহার করা হয়নি।
বাণিজ্যিক জেস গার্ডেনে স্থাপন করা মুক্তিযুদ্ধের আরেকটি ভাস্কর্য। দেশ মাতৃকার মুক্তির জন্য জীবন বাজি রেখে একজন মুক্তিযোদ্ধার যুদ্ধরত ভঙ্গি সকলকে উজ্জ্বীবিত করে।
ভাস্কর্যের বড় সুবিধা হল তা সকল দর্শকের সম্মুখে সুন্দরকে প্রকাশ করে এবং সকলেই তা উপবোগ করতে পারে। দৃশ্যমানতা ভাস্কর্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য। তাই ভাস্কর্য কখনও দৃষ্টির আড়ালে যায় না, অল্প মানুষের না হয়ে তা প্রত্যেকের হয়ে ওঠে। এই সর্বজনীন ধর্মের কারণে, সার্বজনীন প্রভাবের কারণে ভাস্কর্য সকলের বিশেষ প্রিয় একটি শিল্প মাধ্যম। আর তাই, যশোর শহরের প্রবেশ দ্বারে সড়কদ্বীপে, কলেজ প্রাঙ্গণে স্থাপিত আমাদের চিরকালীন সম্পদ এসব ভাস্কর্য সকলের প্রিয় শিল্পকর্ম হয়ে উঠেছে।
তথ্যসূত্র: অজ্ঞাত
Liberation Sculpture in Jessore District