
Home ঝিনাইদহ জেলা / Jhenidah District > কামান্না ২৭ শহীদের মাজার / 27 Martyrs shrine of Kamanna
এই পৃষ্ঠাটি মোট 99630 বার পড়া হয়েছে
কামান্না ২৭ শহীদের মাজার / 27 Martyrs shrine of Kamanna
কামান্না ২৭ শহীদের মাজার
27 Martyrs shrine of Kamanna
১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ শৈলকুপা ইতিহাস হয়ে আছে। ৫ এপ্রিল গাড়াগঞ্জ যুদ্ধ, ৪ আগষ্ট আলফাপুরের যুদ্ধ, ১৩ অক্টোবর আবাইপুরের যুদ্ধ, ২৬ নভেম্বর কামান্নার যুদ্ধ এবং ৮ এপ্রিল, ৬ আগস্ট, ১৭ আগষ্ট ও ১১ নভেম্বর শৈলকুপা থানা আক্রমণের মাঝ দিয়েই শৈলকুপা শত্রুমুক্ত হয়। মুক্তিসেনারা উত্তোলন করেন স্বাধীন বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা। শৈলকুপায় পাক-হানাদার ও তাদের সহযোগীরা চালিয়েছে নির্বিচারে হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট। যার জলন্ত সাক্ষী হয়ে রয়েছে কামান্না ও আবাইপুরের হত্যাযজ্ঞসহ আরো বেশ কিছু নারকীয় ঘটনা। কামান্না যুদ্ধ এসবের সর্বাধিক গুরুত্ববাহী।
১৯৭১ সালের ২৬ নভেম্বর ভোর রাতে কামান্না গ্রামে পাক হানাদার বাহিনীর নারকীয় হত্যাযজ্ঞে নিহত হন ২৭ জন বীর মুক্তিসেনা। আর আহত হন অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী। চৌকশ ও সাহসী ৪২ জন মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষন শেষে ভারত থেকে কামান্নার মাধব চন্দ্রের বাড়িতে আশ্রয় নেন। মাগুরার শ্রীপুর, মাগুরা সদর ও শৈলকুপা উপজেলায় এঁদের বাড়ি। শৈলকুপার মালিথিয়া গ্রামের আলমগীর ও শ্রীপুরের আবুবকর ছিল এদের মধ্যে প্রধান।
মুক্তিযোদ্ধাদের এ উপস্থিতির সংবাদ স্থানীয় রাজাকারদের তৎপরতায় দ্রুত চলে যায় ঝিনাইদহ ও মাগুরার আর্মি ক্যাম্পে। হানাদারদরা ঝিনাইদহ ও মাগুরা থেকে ভারী অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রাতের অন্ধকারে পৌছে যায় মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের খুব কাছাকাছি। দুরে তাদের গাড়িগুলো রেখে পায়ে হেটে এগিয়ে এসে রাতের অন্ধকারে হঠাৎ করেই হানাদাররা মুক্তিসেনাদের আশ্রয়স্থল লক্ষ্য করে মর্টারের ভারী গোলা ছোড়ে। আকস্মিক এ আত্রমণে পথক্লান্ত মুক্তিসেনারা হকচকিয়ে যায়। সামলে নিয়ে শক্ত হাতে তুলে নেয় হাতিয়ার। প্রতিআক্রমণ চালায়। কিন্তু আকর্ষিক আক্রমণে মুক্তিসেনারা তাদের সামনে বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি। ঘরের মাঝে আটকা পড়ে যায় অনেকে। পাকসেনারা তাঁদেরকে গুলি ছুঁড়ে হত্যা হরে। তারা গ্রামটিকেও তছনছ করে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ফণিভূষণ কুন্ডু ও রঙ্গবিবিকে গুলি করে হত্যা করে। তাদের এলোপাতাড়ি গুলিতে অনেক গ্রামবাসীও আহত হয়। হানাদাররা স্থান ত্যাগ করার পর পরই আশে পাশের গ্রাম থেকে হাজার হাজার লোক এসে জড়ো হয়। ঘরের মেঝেয়, উঠানে, বাড়ির আঙিনায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল মুক্তিসেনাদের ক্ষত বিক্ষত নিষ্পাপ দেহ। রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল বাড়িটির সারা আঙিনা। সববগুলো লাশ জড়ো করা হয় এক জায়গায়। কামান্না হাই স্কুলের খেলার মাঠের উত্তর পাশে কুমার নদ ঘেঁষে ৬ জন করে দুটি ও ৫ জন করে তিনটি গণকবরে এ ২৭ বীর শহীদের কবর ঘেঁষে নির্মিত হয়েছে একটি শহীদ মিনার, যার গায়ে লেখা রয়েছে ২৭ শহীদের নামঃ
১। মোমিন ২। কাদের ৩। শহীদুল ৪।ছলেমান ৫। রাজ্জাক ৬। ওয়াহেদ ৭। রিয়াদ ৮। আলমগীর ৯। মতলেব ১০। আলী হোসেন ১১। শরীফুল ১২। আলীমুজ্জামান ১৩। আনিছুর ১৪। তাজুল ১৫। মনিরতজ্জামান ১৬। মমিন ১৭। রাজ্জাক ১৮। কওছার ১৯। ছলেমান ২০। আজিজ ২১। আবকর ২২। সেলিম ২৩। হোসেন ২৪। রাশেদ ২৫। গোলজার ২৬। অধীর ২৭। গৌর।
তথ্যসূত্র:
ঝিনাইদহ জেলা তথ্য বাতায়ন