
Home ব্যবসায়ী / Businessman > আব্দুল মুক্তাদির / Abdul Muktadir
এই পৃষ্ঠাটি মোট 100302 বার পড়া হয়েছে
আব্দুল মুক্তাদির / Abdul Muktadir
আব্দুল মুক্তাদির
Abdul Muktadir
Home District: Magura

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে স্ত্রী মোছাঃ হাসনিনের সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। স্ত্রী হাসনিন মুক্তাদির ফার্মেসী বিষয়ে উচ্চ ডিগ্রী অর্জন করেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তিনি উর্ধ্বতন কর্মকর্তা পদে কাজ করেছেন।
জনাব আব্দুল মুক্তাদির মাগুরা এ.জি একাডেমী স্কুল থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে মাগুরা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণীতে ভর্তি হন। এখান থেকে........... সালে এস.এস.সি পাশ করেন। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসী বিভাগে ভর্তি হন। অত্র বিশ্ববিদ্যলয় থেকে কৃতিত্বের সাথে ফার্মাসিস্ট ডিগ্রী অজন করার পর জনাব আব্দুল মুক্তাদির আমেরিকার নিউইয়ার্কে উচ্চ শিক্ষায় সরকারি বৃত্তি পেয়ে চলে যান আমেরিকার ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফার্মেসীর উপর এম.এস ডিগ্রী অর্জন করেন। এম.এস ডিগ্রী অর্জন করার পর আমেরিকাতেও অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানে তিনি চাকুরী করার সুযোগ পান। কিন্তু স্বপ্ন ছিল তার দেশের মাটিতে কিছু করার। সেই লক্ষ্যে ১৯৮৫ সালে আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে (ঢাকা) ফিরে আসেন। চলে এসে প্রথমে ফাইসন্স ঔষধ কোম্পানী লিঃ মার্কেটিং এ উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। এরপর বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল্স লিমিটেড এ ১৫ বছর চাকুরী করেন। এখানে তিনি মার্কেটিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
অনেক আগে থেকেই তিনি একটি ঔষধ শিল্প প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন। এ দেশের মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশ দরিদ্র সীমার নীচে বাস করে। তাদের হাতে কম পয়সায় গুণগত মানের ঔষধ পৌঁছে দেওয়ার একটি তাগিদ অনুভব করেন জনাব আব্দুল মুক্তাদির। তাই চাকরী থেকে ইস্তফা দিয়ে সিদ্ধান্ত নেন, ব্যবসাই করবেন। কিন্তু স্ত্রী দ্বিমত পোষন করেন। কারণ তার ধারণা সৎ ভাবে টিকে থাকা কঠিন কাজ। ব্যবসায় নয় চাকুরী করবেন তারা। অত্যন্ত ধার্মিক এই দম্পতি অনেক আলোচনার পর অনেকটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে ব্যবসায় শুরু করেন। তারা প্রমাণ করতে চান শতভাগ সততার মাধ্যমে যে কোন কাজ করা যায়। স্বামী/স্ত্রী দুজনোই চাকুরী ছেড়ে দেন। ২০০০ সালে শুরু হয় তাদের নুতন চলাচল। ব্যাংক ঋণ এবং নিজেদের সঞ্চয় নিয়ে। কঠিন পরিশ্রমের সঙ্গে গড়ে তোলেন ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেন আব্দুর মুক্তাদির। তিনি মনে করেন যে কোন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রথমে হোঁচট খেতে হয়। ধৈর্য সহকারে সেটি সামাল দিতে হয়। এমনিভাবে আব্দুল মুক্তাদির এবং তার সহধর্মীনি এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে অনেক কঠিন অবস্থা পার করতে হয়েছে। আর্থিক সংকটে পড়েছেন বহুবার। ব্যবসার কৌশলে আবার কাটিয়ে উঠেছেন। প্রতিষ্ঠালগ্নে দেখা দিয়েছে নতুন নতুন সমস্যা। এ ক্ষেত্রে স্ত্রীকে সার্বক্ষণিক সঙ্গী হিসেবে মিসেস হাসনিনকে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিঃ এর পরিচালক (পরিকল্পনা এবং কমার্শিয়াল) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। জনাব আব্দুল মুক্তাদির চাকুরী জীবনের দীর্ঘ সময়ের যে দক্ষতা অর্জন করেছেন এ ব্যবসায় সম্প্রসারণে ইতিবাচক সহায়তা রেখেছে। প্রথম অবস্থায় স্থানীয় বাজারে ঔষধ সরবরাহ করাই ছিল তার প্রতিষ্ঠানের মুল লক্ষ্য। অবশ্য ব্যবসায় শুরুর ৫ বছর পর থেকে তাদের আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। জনাব আব্দুল মুক্তাদির কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিঃ এর প্রস্তুতকৃত ঔষধ বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশের মানুষের কাছে ঔষধের গুণাগুণ এর প্রতি আস্থা তৈরী হয়েছে। জনাব আব্দুল মুক্তাদির দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, মান সম্পন্ন ঔষধ কম দামে ক্রেতার হাতে পৌছে দিতে পারে, যে প্রতিষ্ঠান, তার জন্য সামনে শুধু এগিয়ে যাওয়ার দরজায় খোলা থাকে। এ প্রতিষ্ঠানটি ২০১১ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ৩৩ টি দেশে তাদের প্রস্তুতকৃত ঔষধ রপ্তানী করেছে। বর্তমানে প্রায় ৫ হাজার কর্মকর্তা/কর্মচারী তার প্রতিষ্ঠিত ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যাল্স লিমিটেড বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠানটি ইইউ এবং জিএমপি সার্টিফিকেট অর্জন করছে। এছাড়াও এ প্রতিষ্ঠান থেকে ভ্যাকসিন তৈরী হচ্ছে, যা এদেশের প্রস্তুতকৃত / আবিস্কৃত ঔষধ হবে। ভ্যকসিন তৈরীর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির হরমোন প্লান্ট এবং বাইয়ো সেমিনার প্লান তৈরীর পরিকল্পনা রয়েছে। যা অতি শিঘ্রই বাস্তবায়িত হবে। জনাব আব্দুল মুক্তাদির বর্তমানে (২০১১) বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন। জনাব আব্দুল মুক্তাদির তার প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি বছর বিভিন্ন জেলায় শীত বস্ত্র বিতরণ করে থাকে। এছাড়াও বণ্যা দূর্গত এলাকার জন্য বিনামূল্যে ঔষধ প্রদান করে থাকে। জনাব আব্দুল মুক্তাদির বিভিন্ন সামাজিক ও কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানসহ দুঃস্থ্যদেরকে বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করে থাকেন। জনাব আব্দুল মুক্তাদির মাগুরার অসংখ্য বেকার যুবকদের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। যা মাগুরাবাসী মনে রাখবে। জনাব আব্দুল মুক্তাদির ২০০৪ সালের ৮ই জানুয়ারী ঔষধ প্রস্ততকৃত প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, সমাজ উন্নয়নমূলক কার্যক্রম এবং অসংখ্য বেকার যুবকদেরকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়ার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ মাগুরা জেলার ঐতিহ্যবাহী সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান কাজী আব্দুল হক মেমোরিয়াল কল্যাণ ফাউন্ডেশন এদেশে সর্ব প্রথম স্বর্ণপদক ও সনদপত্র প্রদান করেছেন।
তথ্য সূত্র:
মাগুরা এডুকেশন ডাইরেক্টরী
সংগ্রহ:
মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান
জেলা শিক্ষা অফিসার, মাগুরা