
Home জামাই-পুত্রবধু / Son-in-law & Daughter-in-law > শাবানা / Shabana (1953)
এই পৃষ্ঠাটি মোট 100672 বার পড়া হয়েছে
শাবানা / Shabana (1953)
আফরোজা সুলতানা (শাবানা)
Afroza Sultana (Shabana)
Home District: Chittagong, Raozan
পারিবা

প্রকৃত নাম আফরোজা সুলতানা রত্না আর চলচ্চিত্রের নাম শাবানা, যা চিত্র পরিচালক এহতেশাম প্রদান করেন। তার পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ডাবুয়া গ্রামে। তার বাবা ফয়েজ চৌধুরী একসময় চিত্র পরিচালক ছিলেন। মা ফজিলাতুন্নেসা ছিলেন গৃহিনী। পরিবারিক আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় মেয়েকে ফিল্মে দিয়ে এবং নিজে চলচ্চিত্রে জড়িয়ে ভাগ্য গড়ার চেষ্টা চালাতে থাকেন। একদিন তার সে আশা পূরণ হয়েছিল।
১৯৭৩ সালে তিনি যশোর কেশবপুরের ছেলে ওয়াহিদ সাদিককে বিয়ে করেন শাবানা। তিনি একজন সরকারী কর্মকর্তা ছিলেন। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মরহুম এ এস এইচ কে সাদেক ওয়াহিদের বড় ভাই। স্বামী ওয়াহিদ সাদিক, দুই মেয়ে সুমী ও উর্মি এবং একমাত্র পুত্র নাহিনকে নিয়ে তিনি এখন বসবাস করছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে।
শিক্ষাজীবন:
শাবানা গেন্ডারিয়া হাই স্কুলে ভর্তি হলেও তার পড়ালেখা ভালো লাগত না। শাবানা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার তাই ইতি ঘটে মাত্র ৯ বছর বয়সে।
চলচ্চিত্রে আগমন:
১৯৬২ সালে মাত্র ৯ বছর বয়সে ‘নতুন সুর’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন ছোট্ট মেয়ের চরিত্রে। ১৯৬৩ সালে তিনি উর্দু ‘তালাশ’ ছবিতে নাচের দৃশ্যে অংশ নেন। তারপর বেশ কিছু চলচ্চিত্রে তিনি এক্সট্রা হিসেবে কাজ করেন। ‘আবার বনবাসে রূপবান’ এবং ‘ডাক বাবু’ সিনেমাতে তিনি সহনায়িকার কাজ পান। এভাবে কয়েকবছর কাটানোর পর ১৯৬৭ সালে 'চকোরী' ছবিতে চিত্রনায়ক নাদিমের বিপরীতে তাঁর চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে আবির্ভাব ঘটে, যার পরিচালক ছিলেন এহতেশাম। ‘চকোরী’ ছিল একটি দারুণ ব্যবসা সফল ছবি। তখন উর্দু ছবির সাথে বাংলা ছবির প্রতিযোগিতা হত এবং শাবানা প্রথমদিকে উর্দু ছবিই বেশি করতেন। ‘অবুজ মন’ এবং ‘মধু মিলন’ এই ২টি সিনেমার মাধ্যমে তিনি রা

উল্লেখযোগ্য সিনেমা:
বেগম রোকেয়া, ঝড় তুফান, বানজারান, রাজনন্দিনী, জননী(১৯৭৭), সখি তুমি কার (১৯৮০), দুই পয়সার আলতা (১৯৮২), নাজমা (১৯৮৩), ভাত দে (১৯৮৪), অপেক্ষা (১৯৮৭), মরণের পরে (১৯৯০), অচেনা (১৯৯১), রাঙাভাবী (১৯৯৩), গরীবের বউ (১৯৯৪), অবুজ মন, মধু মিলন, চকোরী, স্বামী কেন আসামী, মাটির ঘর, রাজলক্ষী-শ্রীকান্ত, লাল কাজল, দস্যু রাণী, নুপুর।
সম্মাননা:
শাবানা মোট ১০ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৭ সালে তিনি প্রথম এই পুরস্কার পান ‘জননী’ সিনেমার জন্য। এরপর ১৯৮০, ১৯৮২, ১৯৮৩, ১৯৮৪, ১৯৮৭,১৯৯০, ১৯৯১, ১৯৯৩ এবং ১৯৯৪ সালেও তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। তাঁর অন্যান্য পুরস্কারের মধ্যে আছে ১৯৯১ সালে প্রযোজক সমিতি পুরস্কার, ১৯৮২ ও ১৯৮৭ সালে বাচসাস পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে আর্ট ফোরাম পুরস্কার, ১৯৮৮ সালে আর্ট ফোরাম পুরস্কার, ১৯৮৮ সালে নাট্যসভা পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে কামরুল হাসান পুরস্কার, ১৯৮২ সালে নাট্য নিকেতন পুরস্কার, ১৯৮৫ সালে ললিতকলা একাডেমী পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে সায়েন্স ক্লাব পুরস্কার, ১৯৮৯ সালে কথক একাডেমী পুরস্কার এবং ঐ বছরই জাতীয় যুব সংগঠন পুরস্কার।
বর্তমান অবস্থান:
১৯৯৭ সালে শাবানা হঠাৎ চলচ্চিত্র-অঙ্গন থেকে বিদায় নেওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর তিনি আর নতুন কোনো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেননি। ২০০০ সালে শাবানা সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। শাবানা মস্কো ফ্লিম ফেস্টিভ্যাল, রুমানিয়া ফ্লিম ফেস্টিভ্যাল, কান ফ্লিম ফেস্টিভ্যালসহ আরো বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন।

ভুল ভেঙেছে ঢালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবানা এখন তিনি ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসারী। বড় পর্দার শাবানার সঙ্গে বাস্তবের শাবানার এখন কোনো মিল নেই। ফুলহাতা কামিজ ও হিজাব সেই শাবানাকে সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়েছে। এখন তার দেখা পাওয়া সাধারণ মানুষের পক্ষে তো বটেই, কোনো সাংবাদিকের পক্ষেও প্রায় অসম্ভব। কোটি দর্শকের স্বপ্নের নায়িকা হিজাবপরা শাবানাকে এখন দেশে-বিদেশে দেখলে তার পরিচিতরা অবাক হন।
কেশবপুরে রাজনৈতিক পরিবারের গৃহবধূ জনপ্রিয় চিত্র নায়িকা শাবানা মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মান, বাড়ি নির্মানের উদ্ভোধন অনুষ্ঠানসহ পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন । ফলে শাবানার রাজনৈতিক মতাদর্শ, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার অংশ গ্রহন করা না করাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উপজেলার সর্বত্র আলোচনা চলছে।
জানা গেছে, যশোরের কেশবপুর উপজেলার বড়েঙ্গা গ্রামে বাড়ি করছেন জনপ্রিয় চিত্র নায়িকা শাবানার স্বামী ওয়াহিদ সাদেকের ভাইপো সুমন সাদেক। আরিফ সাদেক সুমনের বাড়ি নির্মান কাজের উদ্ভোধন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ২০১১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বিকালে চিত্র নায়িকা শাবানা উপজেলার বড়েঙ্গা গ্রামের শ্বশুর বাড়িতে আসেন । শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার আগমনের বিষয়টি গোপন করেন। তারপরও শাবানার আগমনের খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন পেশার অসংখ্যক মানুষ তার শ্বশুর বাড়িতে ভিড় করে। সাধারন মানুষসহ সবার সঙ্গে অতি আন্তরিকতার সাথে খোলামেলা আলাপচারিতা করেন। তিনি এলাকার মানুষের খোঁজখবর নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, তার স্বামী ওয়াহিদ সাদেক, ভাতিজা সুমন, যশোর-৬ কেশবপুর আসনের সাবেক সংসদ ও উপজেলা আ’লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল হালিম, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাবেক আহবায়ক আলহাজ্ব আব্দুস শহীদ, সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল্যা নুর আল আহসান বাচ্চু, বোন সীমা। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকরা সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন ও রাজনীতিতে আশার ইচ্ছা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টা ভেবে দেখব। ইতি পুর্বে শাবানা শ্বশুর বাড়ির আঙ্গিনা একটি মসজিদ তৈরি করে দিয়েছেন। এছাড়া শাবানার স্বামী ওয়াহিদ সাদেক একটি মাদ্রাসাও নির্মান করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে তার স্বজনরা জানান। এভাবে মসজিদ, মাদ্রাসা নির্মান, বাড়ি নির্মান কাজের উদ্ভোধন অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন করাসহ রাজনৈতিক পরিবারের গৃহবধূ চিত্র নায়িকা শাবানারা সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন করা না করা, কোন দলের প্রার্থী হবেনসহ নানা বিষয় নিয়ে কেশবপুর উপজেলার সর্বত্র আলোচনা চলছে ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আ’লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মন্ডোলীর সদস্য এ, এস, এইস, কে সাদেক যশোর-৬ কেশবপুর আসন থেকে পর পর দু’বার এমপি নির্বাচিত হন। তিনি শিক্ষা মন্ত্রী থাকালে কেশবপুরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্তো হওয়া, রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্টানের অবকাঠামো উন্নয়নসহ সর্ব ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়। ২০০৭ সালে মিঃ সাদেক মারা যাওয়ার পর থেকে কেশবপুরবাসি উন্নয়ন বঞ্চিত হওয়াসহ যোগ্য নেতৃত্ব শুন্যতায় ভূগছে। এ শুন্যতা পুরুনের আশায় কেশবপুরের অবহেলিত বঞ্চিত আ’লীগ নেতাকর্মীসহ সুশীল সমাজ যোগ্য নেতৃত্বের সন্ধান করায় জনপ্রিয় চিত্র নায়িকা শাবানার নাম আলোচনায় আসছে।
তথ্য সূত্র:
বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত
সম্পাদনা:
মো: হাসানূজ্জামান (বিপুল)
সর্বশেষ আপডেট:
জুলাই ২০১২