
Home যোদ্ধা-বিদ্রোহী / Fighters-Rebel > রবিউল আলম / Rabiul Alam (1950)
এই পৃষ্ঠাটি মোট 99967 বার পড়া হয়েছে
রবিউল আলম / Rabiul Alam (1950)
রবিউল আলম
Rabiul Alam
Home District: Jessore

১৯৫০ সালের ২রা জুন যশোর শহরে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে রবিউল আলম জন্ম গ্রহণ করেন। পিতার নাম মোঃ ইসহাক সরদার এবং মাতার নাম মোমেনা খাতুন। সম্মিলনী ইন্সটিটিউটশন, যশোর এ তার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক লেখাপড়া। ১৯৬৮ সালে সম্মিলনী স্কুল থেকে এস.এস.সি এবং ১৯৭০ সালে যশোর এম. এম. কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাশ করেন। পরবর্তীতে তিনি বি.এ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ পাশ করেন। অতঃপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এল.এল.বি ডিগ্রী অর্জন করেন।
১৯৬৬ সালে নবম শ্রেণীতে পড়ার সময় ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। পাকিস্তানের তথাকথিত লৌহমানব প্রেসিডেন্ট আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে রবিউল আলম ছিলেন যশোরের পরিসরে এক দুর্বার অগ্নি স্ফুলিঙ্গ। শুধু তাই নয়, ঐতিহাসিক ৬ দফা প্রচার আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান অবশেষে ৭১ এর অসহযোগ তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ, বৃহত্তম যশোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে একজন সফল ছাত্রনেতা ও রাজনৈতিক সংগঠক হিসাবে যশোরবাসীর নিকট সুবিশাল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চের পর প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং ভারত গমন করে সেখানে বি.এল.এফ (মুজিব বাহিনী) এর ট্রেনিং গ্রহণ করে মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি বৃহত্তর যশোর জেলা বি.এল.এফ (মুজিব বাহিনী) এর উপ-প্রধান হিসাবে নেতৃত্ব দেন এবং একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠক হিসাবে অসামান্য সাহস ও প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এর রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে জাসদ, যশোর জেলা সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে রাজনৈতিক কারণে ২বার গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘকাল কারাভোগ করেন।
১৯৭৬ সালে ঐতিহাসিক তথাকথিত রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল তাহেরের ফাঁসি এবং অন্যান্য জাসদ নেতার বিভিন্ন মেয়াদের যে কারাদন্ড হয়েছিল রবিউল আলম সেই গোপন সামরিক আদালত কর্তৃক শাস্তিপ্রাপ্ত রাজনীতিকদের মধ্যে অন্যতম। উক্ত মামলার তার ৫ বৎসর কারাদন্ড হয়েছিল। যদিও ২০১১ সালে মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশে উক্ত মামলাটি তৎকালীন সামরিক সরকারের হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক ও মিথ্যা বলে বাতিল হয়ে যায় এবং আদালত কর্তৃক শাস্তিপ্রাপ্তরা সকলে দেশপ্রেমিক হিসাবে আখ্যায়িত হন।
জনাব রবিউল আলম ১৯৮৫ সালে দেশের প্রথম উপজেলা নির্বাচনে জনগণের ভোটে যশোর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং যথাযথ যোগ্যতা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বর্তমানে জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি এবং যশোর জেলা সংগঠনের সভাপতি। এছাড়া তিনি যশোর জেলা চাঁদের হাট ও পিলু খান ফাউন্ডেশনের সভাপতি, তীর্যক যশোর এর সহ সভাপতি এবং যশোর উদীচী ও সুরধুনীর উপদেষ্টা। বর্তমানে তিনি নিজ গ্রামস্থ কাশিমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি। ইতোপূর্বে তিনি বেশ কয়েকটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের পরিচালনা পরিষদের দায়িত্বশীল পদে অধিষ্ঠিত থেকে শিক্ষার উন্নয়নে যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন। সর্বোপরি যশোরের প্রায় সকল প্রগতিশীল সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও আন্দোলনে সর্বদা সক্রিম ভূমিকা রেখে চলেছেন। প্রগতিশীল, অসামপ্রদায়িক বিজ্ঞান মনষ্ক, রুচিশীল, সাহসী সমাজকর্মী হিসাবে রবিউল আলম যশোরবাসীর কাছে এক বরেণ্য ব্যক্তিত্ব। সরকারী ও রাজনৈতিক সফরে তিনি ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, চীন এবং ব্যক্তিগত সফরে ভারত, গ্রীস, স্পেন ও ফ্রান্স ভ্রমণ করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই পুত্রের জনক।
তথ্য সূত্র:
সাক্ষাৎকার
সহযোগিতায়:
মো: হাবিবুর রহমান খান
সর্বশেষ আপডেট:
জানুয়ারী ২০১২