
Home নড়াইল জেলা / Narail District > নড়াইল জমিদারদের ইতিহাস / History of Narail Jamindar
এই পৃষ্ঠাটি মোট 100153 বার পড়া হয়েছে
নড়াইল জমিদারদের ইতিহাস / History of Narail Jamindar
নড়াইল জমিদারদের ইতিহাস
History of Narail Jamindar
নড়াইল নামের সাথে নড়াইল জমিদারদের ইতিহাস ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কালী শঙ্কর রায় ছিলেন নড়াইলে জমিদারীর প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা। কালী শঙ্করের পিতা রূপরাম রায় স্বীয় যোগ্যতাবলে নাটোর রাজ সরকারের উকিল রূপে রাণী ভবানীর অনুগ্রহ লাভ করে নড়াইলের আদালৎপুর তালুক ক্রয় করেন। এই তালুকের অন্তর্গত নড়াইল নামক স্থানে তিনি বসতবাড়ি নির্মাণ করেন এবং এর অদূরে চিত্রা নদীর তীরে রূপগঞ্জ নামে একটি রাজার প্রতিষ্ঠা করেন যা নড়াইলের শ্রেষ্ঠ ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে খ্যাত।
কালীশংকর রায় পিতার মতই নাটোর রাজ সরকারের কর্মচারীরূপে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ছিলেন সুচতুর এবং বুদ্ধিমান। লর্ড কর্ণওয়ালিশের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তিত হবার ফলে নাটোরের বিশাল জমিদারী বাকী খাজনার দায়ে নিলামে বিক্রয় হতে থাকলে কালীশঙ্কর সুকৌশলে নাটোরের বিভিন্ন তালুক ও মহাল নিলামে ক্রয় করে পিতার ক্ষুদ্র জমিদারীর পরিধি বৃদ্ধি করেন। নড়াইলে মৌজায় তিনি বৃহৎ অট্টালিকা ও নাট মন্দির নির্মাণ এবং দীঘি ও পুস্কুরিনী খনন করে এক বিশাল রাজবাড়ি নির্মাণ করেন।
কালীশঙ্কর রায়ের জীবদ্দশায় তার পুত্রদ্বয়ের মৃত্যু হলে পৌত্রগণ পিতামহের ঐতিহ্য বজায় রাখেন। তারা নীলচাষের ব্যবসা করে, নালকুঠি স্থাপন করে প্রচুর অর্থের অধিকারী হন। এইসব নীলকুঠির এখন আর কোন অস্তিত্ব নেই।
নড়াইলে জমিদারগণ শিক্ষা এবং জনহিতকর কার্যের জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন। জমিদার কালীদাস বাবু নড়াইলে শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি বৃহৎ পুকুর খনন করেন যা কালীদাস ট্যাঙ্ক নামে খ্যাত ছিল। বর্তমানে এটি পৌরসভা পুকুর নামে পরিচিত। এই পুকুরপাড়ে পৌরসভা অফিস, নড়াইল ক্লাব, রেডক্রিসেন্ট অফিস এবং ক্যড়া সংস্থার কার্যালয় অবস্থিত। জমিদার রতন বাবুর সময় তৎকালীন ভারত সম্রাজ্ঞী মহারাণী ভিক্টোরিয়ার নামে একটি উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয় স্থাপিত হয় যা বর্তমানে ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট হাই স্কুল নামে পরিচিত। এই বিদ্যালয়কে ভিত্তি করে ১৮৮৬ সনে একই নামে একটি দ্বিতীয় শ্রেণীর কলেজ স্থাপন করা হয় যা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সকল কলেজের মধ্যে প্রাচীনতম দ্বিতীয় কলেজ এবং খুলনা বিভাগের মধ্যে প্রাচীনতম কলেজ। কলেজ সংলগ্ন একটি ভবনে জমিদারগণ একটি দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করেন। বর্তমানে এটি পুলিশ বাহিনীর অধিকার আছে।
নড়াইল জমিদার বাড়ি একটি বিস্তীর্ণ স্থান জুড়ে বহুসংখ্যক সুরম্য অট্টালিকা নাট্যমঞ্জ, পুজামন্ডপ, মন্দির, কাচারী ভবন, বহুসংখ্যক ছোট বড় পুকুর, দীঘি ও ফলের বাগানে সজ্জিত ছিল। বর্তমানে এই ভবনগুলি জীর্ণ প্রায়। সংস্কারের অভাবে পুরনো ভবনগুলি ধ্বংস হতে থাকে। ফলের বাগান নিশ্চিহ্ন। অনেক গুলি পুকুর মজে গিয়ে ধানচাষ করা হয়। জমিদার বাড়ি সংলগ্ন ঝিল পুকুরটি এখনো ভাল আছে। জমিদার বাড়ির পূর্ব-দক্ষিণে বৃক্ষলতা বেষ্ঠিত একটি সুরম্য বাগান বাড়ী অবস্থিত। বাড়িটি আজো কালের সাক্ষী হয়ে টিকে আছে।
মহাকুমা সদর হিসেবে নড়াইলের প্রতিষ্ঠা ১৮৬১ সনে। মহকুমা সুদরের জন্য স্থান নির্বাচনের জন্য প্রথমে গোপালগঞ্জ পরে ভাটিয়াপাড়া, লোহাপাড়া, কুমারগঞ্জ্ এবং সর্বশেষ মহিষখোলা আলাদাৎপুর মৌজার নড়াইল মহকুমা সদর স্থাপিত হয়। এই শহরটি গড়ে উঠে মহকুমা প্রশাসক অফিস, ফৌজদারী ও দেওয়ানী আদালত, জেলখানা, ট্রেজারী ভবন এবং আইনজীবীদের বাস ভবনকে কেন্দ্র করে। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের ফলে নড়াইল মহকুমা ১৯৮৪ সনে জেলায় পরিণত হয়। ১৯১৪ সনে নড়াইল টাউন হল নির্মিত হয়। ১৯৪৮ সনে টাউন হলের নাম পরিবর্তন করে নামকরণ করা হয় নড়াইলে রাইফেল ক্লাব। ১৯৬০ সনে পুনরায় নাম পাল্টিয়ে রাখা হয় নড়াইল ক্লাব।
তথ্যসূত্র: অজ্ঞাত
কালীশংকর রায় পিতার মতই নাটোর রাজ সরকারের কর্মচারীরূপে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ছিলেন সুচতুর এবং বুদ্ধিমান। লর্ড কর্ণওয়ালিশের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তিত হবার ফলে নাটোরের বিশাল জমিদারী বাকী খাজনার দায়ে নিলামে বিক্রয় হতে থাকলে কালীশঙ্কর সুকৌশলে নাটোরের বিভিন্ন তালুক ও মহাল নিলামে ক্রয় করে পিতার ক্ষুদ্র জমিদারীর পরিধি বৃদ্ধি করেন। নড়াইলে মৌজায় তিনি বৃহৎ অট্টালিকা ও নাট মন্দির নির্মাণ এবং দীঘি ও পুস্কুরিনী খনন করে এক বিশাল রাজবাড়ি নির্মাণ করেন।
কালীশঙ্কর রায়ের জীবদ্দশায় তার পুত্রদ্বয়ের মৃত্যু হলে পৌত্রগণ পিতামহের ঐতিহ্য বজায় রাখেন। তারা নীলচাষের ব্যবসা করে, নালকুঠি স্থাপন করে প্রচুর অর্থের অধিকারী হন। এইসব নীলকুঠির এখন আর কোন অস্তিত্ব নেই।
নড়াইলে জমিদারগণ শিক্ষা এবং জনহিতকর কার্যের জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন। জমিদার কালীদাস বাবু নড়াইলে শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি বৃহৎ পুকুর খনন করেন যা কালীদাস ট্যাঙ্ক নামে খ্যাত ছিল। বর্তমানে এটি পৌরসভা পুকুর নামে পরিচিত। এই পুকুরপাড়ে পৌরসভা অফিস, নড়াইল ক্লাব, রেডক্রিসেন্ট অফিস এবং ক্যড়া সংস্থার কার্যালয় অবস্থিত। জমিদার রতন বাবুর সময় তৎকালীন ভারত সম্রাজ্ঞী মহারাণী ভিক্টোরিয়ার নামে একটি উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয় স্থাপিত হয় যা বর্তমানে ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট হাই স্কুল নামে পরিচিত। এই বিদ্যালয়কে ভিত্তি করে ১৮৮৬ সনে একই নামে একটি দ্বিতীয় শ্রেণীর কলেজ স্থাপন করা হয় যা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সকল কলেজের মধ্যে প্রাচীনতম দ্বিতীয় কলেজ এবং খুলনা বিভাগের মধ্যে প্রাচীনতম কলেজ। কলেজ সংলগ্ন একটি ভবনে জমিদারগণ একটি দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করেন। বর্তমানে এটি পুলিশ বাহিনীর অধিকার আছে।
নড়াইল জমিদার বাড়ি একটি বিস্তীর্ণ স্থান জুড়ে বহুসংখ্যক সুরম্য অট্টালিকা নাট্যমঞ্জ, পুজামন্ডপ, মন্দির, কাচারী ভবন, বহুসংখ্যক ছোট বড় পুকুর, দীঘি ও ফলের বাগানে সজ্জিত ছিল। বর্তমানে এই ভবনগুলি জীর্ণ প্রায়। সংস্কারের অভাবে পুরনো ভবনগুলি ধ্বংস হতে থাকে। ফলের বাগান নিশ্চিহ্ন। অনেক গুলি পুকুর মজে গিয়ে ধানচাষ করা হয়। জমিদার বাড়ি সংলগ্ন ঝিল পুকুরটি এখনো ভাল আছে। জমিদার বাড়ির পূর্ব-দক্ষিণে বৃক্ষলতা বেষ্ঠিত একটি সুরম্য বাগান বাড়ী অবস্থিত। বাড়িটি আজো কালের সাক্ষী হয়ে টিকে আছে।
মহাকুমা সদর হিসেবে নড়াইলের প্রতিষ্ঠা ১৮৬১ সনে। মহকুমা সুদরের জন্য স্থান নির্বাচনের জন্য প্রথমে গোপালগঞ্জ পরে ভাটিয়াপাড়া, লোহাপাড়া, কুমারগঞ্জ্ এবং সর্বশেষ মহিষখোলা আলাদাৎপুর মৌজার নড়াইল মহকুমা সদর স্থাপিত হয়। এই শহরটি গড়ে উঠে মহকুমা প্রশাসক অফিস, ফৌজদারী ও দেওয়ানী আদালত, জেলখানা, ট্রেজারী ভবন এবং আইনজীবীদের বাস ভবনকে কেন্দ্র করে। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের ফলে নড়াইল মহকুমা ১৯৮৪ সনে জেলায় পরিণত হয়। ১৯১৪ সনে নড়াইল টাউন হল নির্মিত হয়। ১৯৪৮ সনে টাউন হলের নাম পরিবর্তন করে নামকরণ করা হয় নড়াইলে রাইফেল ক্লাব। ১৯৬০ সনে পুনরায় নাম পাল্টিয়ে রাখা হয় নড়াইল ক্লাব।
তথ্যসূত্র: অজ্ঞাত