
Home ঝিনাইদহ জেলা / Jhenidah District > মহেশপুর জনপদ / Maheshpur region
এই পৃষ্ঠাটি মোট 99749 বার পড়া হয়েছে
মহেশপুর জনপদ / Maheshpur region
মহেশপুর জনপদ
Maheshpur region
অনেক কারণে প্রবীণতার দাবীদার মহেশপুর। চন্দ্রদ্বীপ, সূর্যদ্বীপ নাম ত্যাগ করে বর্তমানে মহেশপুর পরিচয়ে পরিচিত। বার ভূঁইয়াদের আমলে এলাকার নাম ছিল চন্দ্রদ্বীপ (সতীশ চন্দ্র মিত্র, যশোর-খুলনার ইতিহাস, পৃঃ-৪৫)। বৌদ্ধ আমলে চন্দ্রদ্বীপ যোগিন্দ্র দ্বীপ নাম ধরে ৪০০ শত বছর বৌদ্ধ-শাসিত হয়ে একাদশ শতকে সেন আমলে হিন্দুদের হাতে আসে। ১০৬৩খৃঃ লক্ষণ সেন (বাংলার রাজা বল্লাল সেনের পুত্র) জনপদের মালিক ছিলেন (ইমপিরিয়াল গেজেটিয়ার অব ইন্ডিয়া, ২য় খন্ড, পৃঃ-১৪১)। জেলার রাজস্ব নথিপত্রে সুলতানপুর মৌজা বলে একটা মৌজা আছে। মৌজাটি মহেশপুর উপজেলার অধীন। সূর্য নামের এক ধীবর পাটনীর ব্যবসাকালে রাজা বল্লাল সেনকে সহযোগিতা দিয়ে যোগিন্দ্র দ্বীপের মালিক হন। অতঃপর রাজা বঙ্গে মুসলমান শাসকগণ আসবার পর পর সুর্য সুলতান নাম নেন বলে জনশ্রুতি আছে। সুলতানপুর মৌজা তার নামে এসেছে। রাজস্ব লাভ করে সূর্য জনপদের নাম রাখেন সূর্যদ্বীপ। মহেশপুরের নিকটবর্তী ‘সূর্যদিয়া’ গ্রামে তার রাজধানী ছিল। তিনি অতঃপর সুলতানপুর পরগণার শাসনকর্তা ছিলেন (সীমান্ত-ঈদসংখ্যা’ ৮৮, প্রান্তিক সাহিত্য পরিষদ, মহেশপুর)। সবলের কাছে দুর্বলের পরাজয় ঘটেছে বারে বারে। এখনো তার পরিবর্তন ঘটেনি। সুলতান সাহেবের ভাগ্যেও ঘটলো এক ঘটনা। বৃটিশ ভারতের যাত্রাকালে সুলতান সাহেব হারিয়ে গেলেন। জনপদটি হিন্দুদের হাতে এলো জমিদারীর সূত্র ধরে। ইতিহাস বলে ১৩৩৮-১৫৩৮ দু’শত বছর বঙ্গদেশ স্বাধীন ছিল (সতীশ চন্দ্র মিত্র, যশোর-খুলনার ইতিহাস, পৃঃ-৫০)। সেন রাজত্বকালে মহেশ্বরের মন্দির স্থাপিত হয়। মহেশপুর হাই স্কুল (১৮৬৩) এবং পৌরসভা (১৮৬৯) সংলগ্ন মহেশ্বর মন্দিরটি আজও বিদ্যমান। জমিদারী পর্বে একাধিক পরিবার ভূখন্ডের মালিক হয়েছেন। এককালের জমিদার অবিনাশ চন্দ্র রায় চৌধুরীর মেয়ে এবং নলডাঙ্গা রাজবাড়ীর রাণী সুরমা দেবী দেবরায় প্রদত্ত নথিপত্রে জানা যায় মহেশ্বর নাম থেকে মহেশপুর হয়েছে (জনশ্রুতি)। ইং ৩ নভেম্বর' ৯০ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল মালেক, মহেশপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ওয়ালিউর রহমান সাহেবের উপস্থিতিতে নামকরণের কথা ব্যক্ত করেন। ইংরেজ আমলে এখানকার জমিদাররা জলপথে প্রথমে বজরায় এবং পরবর্তীতে বাষ্পীয়যানে করে যাতায়াত করতেন। মন্দির গাত্রের শিলালিপি থেকে জানা যায় মন্দিরটি ৬০০ বছরের অধিক পুরানো। ১৭৯১ খৃঃ মহেশপুরে থানা ছিল (জে ওয়েস্টল্যান্ড, যশোর বিবরণী, পৃঃ-৫৮)। মহেশপুরের অনেক অনেক অজানা কথা এখনও মাটির নীচে চাপা পড়ে আছে।
তথ্য সূত্র:
যশোর গেজেটিয়ার