
Home দৃষ্টিপাত (Visibility) > অস্তিত্ব বিপন্ন হতে বসেছে শার্শার বেতনা নদী - আপডেট চলছে
এই পৃষ্ঠাটি মোট 15238 বার পড়া হয়েছে
অস্তিত্ব বিপন্ন হতে বসেছে শার্শার বেতনা নদী - আপডেট চলছে
নির্বিচারে দখলের ফলে শার্শার বেতনা নদী এখন মৃতপ্রায়। নদীটি রক্ষার জন্য স্থানীয় লোকজন দীর্ঘদিন ধরে সোচ্চার হলেও এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোন উদ্যোগ না থাকার জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিগত সরকারগুলোর আমলে এলাকার প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, মৎস্য ব্যবসায়ী, সরকারী চাকুরীজীবী ও মাস্তানদের দখলে এককালের খরস্রোতা বেতনা নদীর অস্তিত্ব এখন বিপন্ন হতে বসেছে। বর্তমান সরকার দেশব্যাপী অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম চালালেও বেতনা নদী থেকে দখলদারদের উচ্ছেদ করতে পারেনি। বহাল তবিয়তে রয়েছে দখলদাররা। একদিকে বেপরোয়া দখল, অন্যদিকে শুকনো মৌসুমে বেতনা নদী থেকে শার্শার চাষীরা সেচ কাজ চালাতে পারছে না। বর্ষা মৌসুমে নদীর দুকূল ছাপিয়ে প্রতিবছর শত শত জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয় জনগন বলেছে, বেতনা নদীর অবৈধ বাধ তুলে অচিরেই খনন কার্যক্রম চালালে এটি আবার খরস্রোতা হয়ে উঠবে। আর এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে নদীটির মৃত্যু ঘটবে। এর ফলে প্রতি বছর শার্শার মাঠ-ঘাট ভাসিয়ে হাজার হাজার একর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে কোটি কোটি টাকার ফসল নষ্ট হবে। শার্শার বেতনা নদী, হাওর বাওড় ও বিলে অবৈধ বাঁধের কারণে প্রতিবছর ৮৩৫ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে বেনাপোলের পাচুর বাওড় ঘিবা বাওড় রঘুনাথপুর বাওড় ও বাহাদুরপুর বাওড়ের পানি বর্ষাকালে ফুলে ফেপে বেড়ে এক ফসলি জমির ধান নষ্ট হচ্ছে। কারণ বেনাপোলের নামাজ গ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া বেতনা নদী বাহাদুরপুর বাওড় পর্যন্ত সম্পূর্ণ অবৈধ দখলে চলে গেছে। বেতনা নদীর ওপর গড়ে উঠেছে বড় বড় অট্টালিকা। বাহাদুরপুর সোনামুখী ও পাচুর বাওড়ের পানি এ নদী দিয়ে ইছামতি নদীতে পড়ত। যার ফলে এসব বাওড় বিলে ধান ফলে না। অল্প বৃষ্টি হলেই কিছুটা মাছের চাষ হয়। বেশী বৃষ্টি হলে আবার প্লাবিত হয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়। ফলে ব্যাপক সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, ৯০ এর দশকের পর থেকে নামাজ গ্রামের ভেতর দিয়ে ভরাট করে বড় বড় অট্টালিকা তৈরীর প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপর এ নদীর বেনাপোলের সাদীপুরের মুখ থেকে শুরু করে নারায়নপুর পর্যন্ত সম্পূর্ণ দখল হয়ে গেছে। বিএনপি আওয়ামী লীগ ও বিগত জোট সরকারের আমলে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীরা দখল উৎসবে মেতে ওঠে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, শার্শার বাসাবাড়ী, কাজির বেড় উত্তর বুরুজবাগান নিশ্চিন্তপুর রাজনগর ¯^iƒc`v, বেড়ি নারায়নপুর, সুবর্ণখালী ও ওয়াপদা এলাকায় বর্তমানে অবৈধ দখল করে রয়েছে প্রায় ৫০০ স্থাপনা। বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর নাবারণ, শার্শা বেনাপোল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করলেও বেতনা নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কোন অভিযান চালানো হয়নি। ভূমি অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব ভূমির অধিকাংশই রাতের আধারে দখল করে প্রভাব কাটিয়ে স্থাপনা গড়ে তোলার পর ভূমি অফিস থেকে মাত্র ৫ বছরের অস্থায়ী বন্দোবস্ত (ডিসিআর) নিয়েছে। পরে ভূমি অফিস আর বন্দোবস্ত দেয়নি। প্রভাবশালীরা দখল করে বেতনা নদীর দুপাড়ে বাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনা সহ পুকুর তৈরী করেছে। ২০০৬ সালের শেষের দিকে বেতনা নদী থেকে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করার উদ্দেশ্যে উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিয়েছিল। শার্শার অধিকাংশ এলাকা উন্মুক্ত করলেও বেনাপোল ও শার্শার বেতনা নদীতে অজানা কারণে হাত পড়েনি। যার ফলে অবৈধ দখলদাররা বহাল তবিয়তে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ বেতনা নদী বাঁচাতে তারা দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছেন। সরকারী বহু দফতরে বারবার যোগাযোগ করেছেন। কোন ফল হয়নি। বরং প্রভাবশালীদের রোষানলে পড়তে হয়েছে।