
Home দৃষ্টিপাত (Visibility) > ঝিনাইদহের ১৩টি সিনেমা হল বন্ধ
এই পৃষ্ঠাটি মোট 15410 বার পড়া হয়েছে
ঝিনাইদহের ১৩টি সিনেমা হল বন্ধ
স্যাটেলাইট চ্যানেলের প্রভাব, কাটপিসের দৌরাত্ম্য, পুঁজি সঙ্কট ও দর্শকের অভাবে ঝিনাইদহ জেলার সিনেমা হলগুলো একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে ১৭টির মধ্যে ১৩টি সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে। জেলার ৬টি উপজেলায় ১৭টি সিনেমা হলের মধ্যে এখন মাত্র ৪টিতে ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে। বন্ধ ১৩টি সিনেমা হল ভেঙে বাসাবাড়ি ও বাণিজ্যিক কেন্দ্রে রূপান্তরিত করা হয়েছে। ফলে এই ঐতিহ্যবাহী বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে জড়িত এই জেলার প্রায় ৩শ’ মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে।
ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনের রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ৫টি সিনেমা হল ছিল। এরমধ্যে ১৯৫৫ সালে নির্মিত ছবিঘর সিনেমা হল ও ১৯৭০ সালে তৈরি প্রিয়া সিনেমা হল চালু রয়েছে। এরপর রমরমা বাজার ধরতে আশির দশকে গড়ে ওঠে ঝিনাইদহের চান্দা, হাটগোপালপুরের হ্যাপি ও ’৯০-এর দশকে তৈরি ডাকবাংলা বাজারের স্বর্ণালী সিনেমা হল ২০০৯ সালে দর্শকের অভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
জেলার অন্যান্য সিনেমা হলগুলোর মধ্যে রয়েছে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার গোধূলী, মল্লিকা, মৌসুমী, প্রিয়াঙ্কা ও রংমহল। কালীগঞ্জ উপজেলায় শ্রীলক্ষ্মী ও ছন্দা সিনেমা হল দুটি পুঁজি সঙ্কট ও লোকসান সত্ত্বেও বর্তমানে কোনো রকমে টিকে আছে। কোটচাঁদপুর উপজেলার একমাত্র লাভলী সিনেমা হলটি ২০ বছর আগে বন্ধ হয়ে গেছে। ভবনটি ভেঙে সেখানে বাড়িঘর তৈরি করা হয়েছে। মহেশপুর উপজেলার বিউটি ও দুলারী সিনেমা হল তিন বছর আগে দর্শক সঙ্কটে বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া শৈলকূপা উপজেলায় নূপুর ও কিছুক্ষণ সিনেমা হল দুটি বন্ধ হয়েছে বছর সাতেক আগে। ৪৫ বছর ধরে সিনেমা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ঝিনাইদহ শহরের প্রিয়া হলের ব্যবস্থাপক লুত্ফর রহমান লুথু জানান, মূলত নায়ক-নায়িকা সঙ্কটের কারণে সিনেমা হলে দর্শক আসে না। বাংলাদেশের একমাত্র নায়ক সাকিব খান ও দুই নায়িকা সাহারা এবং অপু বিশ্বাসের ছবি ছাড়া দর্শকরা কোনো ছবি দেখে না। নায়ক মান্নার মারা যাওয়ার পর এই ব্যবসায় আরও ধস নামে।
তিনি অভিযোগ করে জানান, বর্তমান আর্টিস্টরা ভালোভাবে কথাই বলতে পারেন না। এরপর রয়েছে আকাশ সংস্কৃতির প্রভাব ও নতুন নতুন তথ্য প্রযুক্তির দৌরাত্ম্য।
ছবিঘর সিনেমা হলের কর্মচারী রওশন আলী জানান, ১০ বছর আগেও সিনেমা হলে দর্শক আসতেন। কিন্তু এখন ভালো ছবির অভাবে তারা আসেন না। ঘরে বসে তারা পাঁচমিশালী বিনোদনের পাশাপাশি অন্য দেশের ভালো ছবি দেখতে পাচ্ছেন স্যাটেলাইট চ্যানেলের কল্যাণে।
ঝিনাইদহ শহরের সিনেমাপ্রেমী আজগার আলী ও আমজাদ হোসেন জানান, তিনি নিয়মিত সিনেমা দেখতেন। কিন্তু মানসম্মত ছবি ও অশ্লীলতার কারণে তিনি সিনেমা দেখা বন্ধ করেছেন। ঝিনাইদহ ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী প্রিয়া জানান, পরিবারের সঙ্গে ছবি দেখার পরিবেশ এখন নেই। তাই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তিনি সিনেমা হলে যান না। ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার গোধূলী সিনেমা হলের মালিক আবকর আলী জানান, ’৯৬ সালের পর থেকে অশ্লীল ছবিতে বাজার ছেয়ে যায়। সে সময় সিডি, ভিসিপি, ভিসিআরের মাধ্যমে ওইসব নগ্ন ছবি বাজার, ঘাট, এমনকি গ্রামে অল্প টাকায় দেখানো হতো। সেখান থেকেই এই ব্যবসায় ধস নামে। ঝিনাইদহের মল্লিকা সিনেমা হলের মালিক সাজেদুর রহমান টানু মল্লিক জানান, মূলত মানসম্মত ও রুচিশীল ছবির অভাবে দর্শকরা সিনেমা হলে আসতে চান না। ঝিনাইদহের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও অঙ্কুর নাট্য একাডেমির পরিচালক নাজিম উদ্দীন জুলিয়াস জানান, সরকার বিভিন্ন সময় অশ্লীলতারোধে পদক্ষেপ নিলেও এক শ্রেণীর পরিচালকের কারণে তা সম্ভব হয়নি। কারণ সেন্সর বোর্ডে এক রকম ছবি দেখানো হয়, আর সিনেমা হলগুলোতে ছবি মুক্তি পাওয়ার পর তাতে কাটপিস দেখে রুচিশীল দর্শকরা বিব্রত হন। এসব কারণে সিনেমা প্রেমীরা সিনেমা হলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। আর এভাবেই একের পর এক ঝিনাইদহের ১৩টি হল বন্ধ হয়ে গেছে।
নিউজ সূত্রঃ যশোর নিউজ ২৪
ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনের রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ৫টি সিনেমা হল ছিল। এরমধ্যে ১৯৫৫ সালে নির্মিত ছবিঘর সিনেমা হল ও ১৯৭০ সালে তৈরি প্রিয়া সিনেমা হল চালু রয়েছে। এরপর রমরমা বাজার ধরতে আশির দশকে গড়ে ওঠে ঝিনাইদহের চান্দা, হাটগোপালপুরের হ্যাপি ও ’৯০-এর দশকে তৈরি ডাকবাংলা বাজারের স্বর্ণালী সিনেমা হল ২০০৯ সালে দর্শকের অভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
জেলার অন্যান্য সিনেমা হলগুলোর মধ্যে রয়েছে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার গোধূলী, মল্লিকা, মৌসুমী, প্রিয়াঙ্কা ও রংমহল। কালীগঞ্জ উপজেলায় শ্রীলক্ষ্মী ও ছন্দা সিনেমা হল দুটি পুঁজি সঙ্কট ও লোকসান সত্ত্বেও বর্তমানে কোনো রকমে টিকে আছে। কোটচাঁদপুর উপজেলার একমাত্র লাভলী সিনেমা হলটি ২০ বছর আগে বন্ধ হয়ে গেছে। ভবনটি ভেঙে সেখানে বাড়িঘর তৈরি করা হয়েছে। মহেশপুর উপজেলার বিউটি ও দুলারী সিনেমা হল তিন বছর আগে দর্শক সঙ্কটে বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া শৈলকূপা উপজেলায় নূপুর ও কিছুক্ষণ সিনেমা হল দুটি বন্ধ হয়েছে বছর সাতেক আগে। ৪৫ বছর ধরে সিনেমা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ঝিনাইদহ শহরের প্রিয়া হলের ব্যবস্থাপক লুত্ফর রহমান লুথু জানান, মূলত নায়ক-নায়িকা সঙ্কটের কারণে সিনেমা হলে দর্শক আসে না। বাংলাদেশের একমাত্র নায়ক সাকিব খান ও দুই নায়িকা সাহারা এবং অপু বিশ্বাসের ছবি ছাড়া দর্শকরা কোনো ছবি দেখে না। নায়ক মান্নার মারা যাওয়ার পর এই ব্যবসায় আরও ধস নামে।
তিনি অভিযোগ করে জানান, বর্তমান আর্টিস্টরা ভালোভাবে কথাই বলতে পারেন না। এরপর রয়েছে আকাশ সংস্কৃতির প্রভাব ও নতুন নতুন তথ্য প্রযুক্তির দৌরাত্ম্য।
ছবিঘর সিনেমা হলের কর্মচারী রওশন আলী জানান, ১০ বছর আগেও সিনেমা হলে দর্শক আসতেন। কিন্তু এখন ভালো ছবির অভাবে তারা আসেন না। ঘরে বসে তারা পাঁচমিশালী বিনোদনের পাশাপাশি অন্য দেশের ভালো ছবি দেখতে পাচ্ছেন স্যাটেলাইট চ্যানেলের কল্যাণে।
ঝিনাইদহ শহরের সিনেমাপ্রেমী আজগার আলী ও আমজাদ হোসেন জানান, তিনি নিয়মিত সিনেমা দেখতেন। কিন্তু মানসম্মত ছবি ও অশ্লীলতার কারণে তিনি সিনেমা দেখা বন্ধ করেছেন। ঝিনাইদহ ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী প্রিয়া জানান, পরিবারের সঙ্গে ছবি দেখার পরিবেশ এখন নেই। তাই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তিনি সিনেমা হলে যান না। ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার গোধূলী সিনেমা হলের মালিক আবকর আলী জানান, ’৯৬ সালের পর থেকে অশ্লীল ছবিতে বাজার ছেয়ে যায়। সে সময় সিডি, ভিসিপি, ভিসিআরের মাধ্যমে ওইসব নগ্ন ছবি বাজার, ঘাট, এমনকি গ্রামে অল্প টাকায় দেখানো হতো। সেখান থেকেই এই ব্যবসায় ধস নামে। ঝিনাইদহের মল্লিকা সিনেমা হলের মালিক সাজেদুর রহমান টানু মল্লিক জানান, মূলত মানসম্মত ও রুচিশীল ছবির অভাবে দর্শকরা সিনেমা হলে আসতে চান না। ঝিনাইদহের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও অঙ্কুর নাট্য একাডেমির পরিচালক নাজিম উদ্দীন জুলিয়াস জানান, সরকার বিভিন্ন সময় অশ্লীলতারোধে পদক্ষেপ নিলেও এক শ্রেণীর পরিচালকের কারণে তা সম্ভব হয়নি। কারণ সেন্সর বোর্ডে এক রকম ছবি দেখানো হয়, আর সিনেমা হলগুলোতে ছবি মুক্তি পাওয়ার পর তাতে কাটপিস দেখে রুচিশীল দর্শকরা বিব্রত হন। এসব কারণে সিনেমা প্রেমীরা সিনেমা হলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। আর এভাবেই একের পর এক ঝিনাইদহের ১৩টি হল বন্ধ হয়ে গেছে।
নিউজ সূত্রঃ যশোর নিউজ ২৪