
Home দৃষ্টিপাত (Visibility) > কেশবপুরে দিনমজুর তৌহিদুল জিপিএ-৫ পেয়েও অর্থ অভাবে উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকায়
এই পৃষ্ঠাটি মোট 4579 বার পড়া হয়েছে
কেশবপুরে দিনমজুর তৌহিদুল জিপিএ-৫ পেয়েও অর্থ অভাবে উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকায়
কেশবপুরের পাড়াগায়ের হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান দিনমজুর তৌহিদুল ইসলাম দারিদ্রতার সাথে সংগ্রাম করে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। কেশবপুর উপজেলায় সেই একমাত্র মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। জিপিএ-৫ পাওয়ার পরও প্রচন্ড অর্থের অভাবের কথা ভেবে তৌহিদুল উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকায় ভুগছে।
জানা গেছে, যশোরের কেশবপুর উপজেলার দোরমুটিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগ নিয়ে ২০১৩ সালে এসএসসি পরীক্ষা অংশ নিয়ে তৌহিদুল ইসলাম জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে উপজেলার দোরমুটিয়া গ্রামের হতদরিদ্র আজগার আলী ও ছবিরণ নেসার পুত্র। পিতা আজগার আলী দিনমজুর ও উম্মুক্ত জলাশয়ে মাছ শিকার করে জিবীকা নির্বাহ করে থাকে। পরিবারে প্রচন্ড অর্থ সংকট বিরাজ করায় তৌহিদুলের বিজ্ঞান বিভাগে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও প্রাইভেট পড়ার খরচের কথা ভেবে সে মানবিক বিভাগ পড়তে বাধ্য হয়। তৌহিদুল নিজে দিনমজুরের কাজ করে পড়ালেখার খরচ মিটানোর পাশাপাশি অভাবী পিতাকে সংসার চালাতে সহযোগিতা করে থাকে। টাকার অভাবে প্রাইভেট পড়তে পারেনি। তারপরও তৌহিদুল চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে কেশবপুর উপজেলার মধ্যে প্রথম হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নীল রতন সরকার জানান, দরিদ্র পরিবারের সন্তান তৌহিদুল খুব মেধাবী। অর্থের অভাবে কোন দিন প্রাইভেট পড়তে পারেনি। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে পরীক্ষায় সে এই সাফল্য অর্জন করেছে। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের সময়ও সে অন্যের জমিতে দিন মজুরির কাজ করছিল। বর্তমানে সে যশোরের উত্তরে ধান কাটার কাজ করতে গেছে।
প্রধান শিক্ষক আরো জানান, পরীক্ষার অভাবনীয় ফলাফলের কথা শোনার পর তার চোখে মুখে ছিল হতাশার ছাপ। আজগার আলী জানান, তার একান্ত ইচ্ছা তৌহিদুল উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করে মানুষের মতো মানুষ হবে। তিনি আরো বলেন, শ্রম বিক্রির টাকায় পরিবারের সদস্যদের মুখে দু’বেলা খাবার তুলে দিতে যেখানে হিমশিম খেতে হচ্ছে সেখানে তৌহিদুলের উচ্চ শিক্ষার ব্যয়ভার বহন করা কথা চিন্তা করে তিনি কোন কুলকিনারা পাচ্ছে না। তৌহিদুলের পিতা আরো জানান সমাজের দানশীল ব্যক্তি বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে তৌহিদুলের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার আকাঙ্খা পূরন হওয়া সম্ভব।
তৌহিদুল ইসলাম জানায়, তার এই সাফল্যের জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবদানের কথা সে কখন ভুলবেন না। তৌহিদুল আরো জানান, পিতা-মাতা খেয়ে না খেয়ে আমার লেখাপড়া করাছেন তাদের অবদানের কথা বলে শেষ করা যাবে না। উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য দিনমজুর তৌহিদুল সকলের সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করেছেন।
জাহিদ আবেদীন বাবু
কেশবপুর।
সূত্র: যশোর ২৪ রেডিও