
Home মাগুরা জেলা / Magura District > মাগুরা জেলার বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব / Prominent political personalities of Magura Dist.
এই পৃষ্ঠাটি মোট 4905 বার পড়া হয়েছে
মাগুরা জেলার বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব / Prominent political personalities of Magura Dist.
মাগুরা জেলার বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
Prominent political personalities of Magura District
মাগুরা জেলার রাজনৈতিক অঙ্গন যে সমস্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের পদচারণায় মুখরিত হয়েছিল তাদের সংক্ষিপ্ত পরিচিত নিম্নে প্রদত্ত হলো :
ব্যরিস্টার ব্যোমকেস চক্রবর্তী :
সদর উপজেলাধীন আঠারখাদা ইউনিয়নের কান্দা বাসকোটা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আইন আইন পেশায় নিয়েজিত ছিলেন। পরবর্তীতে রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং ভারতের গজ-চক্রবর্তী মন্ত্রী সভার সদস্য হিসেবে দায়িত্বপালন করেন।
জনাব মরহুম আব্দুল খালেক :
মাগুরা উপজেলার মোহাম্মদপুর থানার রামপুর গ্রামের অধিবাসী। পাকিস্তান আন্দোলনের সময়ই তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন এবং পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ১৯৫৬-৫৮ সালে যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রী সভায় গণপূর্ত মন্ত্রী হিসেবে তিনি যোগদান করেন। আয়ুব খানের সামরিক শাসন জারির পূর্ব পর্যন্ত তিনি মন্ত্রিপরিষদে ছিলেন। তৎকালে এ অঞ্চলের উন্নয়নে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন এবং বেশ কিছু শিক্ষিত ছেলের উচ্চ পদে চাকুরি প্রাপ্তিতে সহায়তা করেন।
মরহুম আব্দুল আওয়াল:
সদর উপজেলাধীন বেরইল পলিতা গ্রামের অধিবাসী ছিলেন। পাকিস্তান আন্দোলনে এ অঞ্চলে নেতৃত্ব দেন। ১৯৩৭ সালে তিনি অবিভক্ত বাংলার আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
মরহুম আব্দুর রউফ, বিএবিএল :
মাগুরা শহরতলির শিবরামপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। পাকিস্তান আন্দোলনের সময় থেকেই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। তিনি দীর্ঘদিন যশোর জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
মরহুম মীর হাসেম আলী :
মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার রামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আইন পেশায় জড়িত ছিলেন এবং মাগুরা শহরের কাউন্সিল পাড়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। ১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তান এমএলএ (মেম্বার অব লেজিসলেটিভ এ্যাসেম্বলি) নির্বাচিত হন। তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান রেলওয়ে বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। ১৯৭৬ খ্রিঃ তার মৃত্যু হয়।
মরহুম সৈয়দ আতর আলী :
সদর উপজেলাধীন কুচিয়ামোড়া ইউনিয়নের পাটখালী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে আইন পেশায় জড়িত হন। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন এবং ১৯৭০ এর নির্বাচনে এমপিএ (মেম্বার অব প্রভিনশিয়ান এ্যাসেম্বলি) নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সংগঠক হিসেবে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ১৩ অক্টবর ইন্তেকাল করেন। চৌগাছা সীমান্তের কাশিপুরে তাকে দাফন করা হয়। তার স্মরণে মাগুরা শহরে একটি প্রধান সড়ক এবং একটি পাবলিক লাইব্রেরির নামকরণ করা হয়েছে।
এড. মোঃ সোহরাব হোসেন :
মাগুরা শহরের উপকণ্ঠে ভায়না গ্রামের অধিবাসী। পরবর্তী শহরের এম আর রোডে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। ৫০ এর দশকে তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৬২ সালেই তিনি এম, এন, এ নির্বাচিত হন। খ্যাতমান আইনজীবী ও রাজনীতিক হিসেবে মাগুরায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সামাজিক উন্নয়নে ও মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করার কাজে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। ১৯৭২ সালে বন ও পশুপালন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং পরে গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিভাগের মন্ত্রী ছিলেন। ১৯৯৮ সালের ২৬ জানুয়ারি ইন্তেকাল করেন।
মশিহুল আজম খান :
তার পৈতিক নিবাস শ্রীপুর উপজেলাধীন রায়নগর গ্রামে। পরবর্তীতে মাগুরা শহরে এম আর রোডে স্থায়ী হন এবং আইন ব্যবসা শুরু করেন। তিনি মুসলিম লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৬২ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের ডেপুটি স্পিকার ছিলেন। মাগুরার উন্নয়নে তার ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।
এড. আছাদুজ্জামান :
মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলার জোকা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আইন পেশার পাশাপানি তিনি রাজনৈতিক অঙ্গনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭০ সালে এমপিএ নির্বাচিত হন এবং পরবর্তীতে আরও চারবার তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। মাগুরায় মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করাসহ জেলার সার্বিক উন্নয়নে তিনি বিশেষ অবদান রাখেন। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের দলীয় সচিব হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। সংসদ সদস্য থাকাকালীন ১৯৯৩ সালে ২৫ ডিসেম্বর তারিখে ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যু নিয়ে রহস্য রয়েছে। পেটের পীড়া সহ্য করতে না পেরে তিনি ঘুমের ওষধ খেয়ে আত্মহত্যা করেন বলে প্রচার রয়েছে।
আব্দুর রশিদ বিশ্বাস :
মাগুরা মোহাম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের খালিয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি মাগুরার রাজনীতিক তৎপরতায় যুক্ত ছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মাগুরা অঞ্চলে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। ১৯৯৩ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেন।
মেজর জেনারেল (অবঃ) এম মজিদুল-উল-হক :
মাগুরা শহরের এম আর রোডে পৈত্রিক বাড়ি। তারও আগে ছিল নড়াইলের বৈখালী গ্রামে। সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণের পর ১৯৭৬ সালে রাজনীতিতে যুক্ত হন। মাগুরা থেকে তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। বাংলাদেশ সরকারের সংস্থাপন মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, সেচ ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বপালন করেন। মাগুরা জেলার সঠিক উন্নয়নে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন।
এড. নিতাই রায় চৌধুরী :
১৯৪৯ সালে মোহাম্মদপুর উপজেলাধীন হাটবাড়িয়া গ্রামের জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে আইন পেশায় আত্মনিয়োগ করেন। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী এবং আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্বপালন করেন। তিবি মাগুরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্বপালন করেন। তিনি বর্তমানেও রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন।
কাজী সালিমুল হক কামাল :
শালিখা উপজেলাধীন বামনখালী গ্রামে তার পৈত্রিক নিবাস। তিনি দেশের একজন প্রখ্যাত শিল্পপতি। ১৯৯৪ এবং ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-২ আসন থেকে সদস্য সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি স্কুল কলেজসহ অনেক সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বর্তমানে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত আছেন।
প্রফেসর ডাঃ সিরাজুল আকবর :
মাগুরার শহরের মহিলা কলেজ সড়কের বাসিন্দা। পৈত্রিক নিবাস সদর উপজেলাধীন হাজিপুর গ্রামে। তিনি দেশের একজন প্রখ্যাত শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ এবং ঢাকা শিশু হাসপাতালের সাবেক পরিচালক। তিনি ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮ সালে মাগুরা-১ নির্বাচনী এলাকা থেকে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এড. শ্রী বীরেন শিকদার :
শালিখা উপজেলাধীন সিংড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আইন পেশার সাথে জড়িত। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে মাগুরা-২ আসন থেকে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন।
তথ্যসূত্র :
জেলা কালেক্টরেট, মাগুরা।
সংগ্রহ :
আবু বাসার আখন্দ
মাগুরা
০১৭১৬২৩২৯৬২
akhand07@gamil.com