
Home দৃষ্টিপাত (Visibility) > শার্শার সিনেমা হলগুলো বিলুপ্তির পথে
এই পৃষ্ঠাটি মোট 15806 বার পড়া হয়েছে
শার্শার সিনেমা হলগুলো বিলুপ্তির পথে
যশোরের শার্শা উপজেলায় ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এখানকার সিনেমা হলগুলো একসময়

উপজেলার নাভরনের সোনালী সিনেমা হলটি ভেঙে একবছর আগে ‘সোনালী কমপ্লেক্স’ নামে একটি মার্কেট চালু করা হয়েছে।
সেখানে যে সিনেমা হল ছিলো তার নাম-নিশানা এখন আর খুঁজে পাওয়া যাবেনা। অপর দিকে নাভরন পুরোনো বাজারে রূপালি সিনেমা হলটি মালামাল রাখার গোডাউন হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
উপজেলার বাঁগআচড়া বাজারে একমাত্র বিলাশ বহুল সিনেমা হল ময়ূরী এখনো দর্শকের বিনোদনের খোরাক যুগিয়ে যাচ্ছে।
যশোর জেলায় ১০টি সিনেমা হলের মধ্যে মাত্র তিনটি সিনেমা হল চালু আছে। এগুলো হচ্ছে-যশোরের মনিহার ও তজবীর মহল ও বাগআঁচড়ার ময়ূরী সিনেমা হল। আর অনান্য সব সিনেমা হলগুলো লোকসানের বোঝা টানতে টানতে অবশেষে বন্ধ হয়ে গেছে।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল তথা এশিয়ার সবচেয়ে বিলাশ বহুল সিনেমা হল যশোরের মনিহারের আদলেই তৈরি হয়েছে বাগআঁচড়ার ময়ূরী সিনেমা হলটি। ঢাকা থেকে কোনো নতুন ছবি মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ময়ূরী সিনামা হলে প্রদর্শিত হয়। যার কারণে কোনো রকমে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে হলটি। দর্শকের চাহিদা মেটাতে লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো মতে হলটি চালু রেখেছেন।
এ ব্যাপারে ময়ুরী সিনেমা হলের মালিক নজরুল ইসলাম জানান, যশোর জেলার ১০টি সিনেমা হলের মধ্যে ৬টি তার ছিল। অতিরিক্ত মাত্রায় লোকসানের কারণে ইতোমধ্যে তিনি ৫টি বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন একটি মাত্র সিনেমাহল চালু আছে। বন্ধ হওয়া সিনেমা হল ভেঙে মাকেট ও গোডাউন তৈরি করা হয়েছে।
সিনেমা ব্যবসাতে দর্শক কম ও লোকসানের কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ্য করে বলেন, আমাদের দেশের তৈরি সিনেমায় আকর্ষণীয় তেমন কোনো কাহিনী থাকে না। সব ছবি প্রায় একই ধরনের তৈরি হচ্ছে। এ কারণে সিনেমা হলগুলোতে দর্শকের সংখ্যা একেবারে নাই বললেই চলে। প্রতি শো’তে মাত্র ৮ থেকে ১০ জনের বেশি দর্শক হয়না। এছাড়া সরকারের বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি, কর্মচারীর বেতন ভাতা বৃদ্ধিও লোকসান বাড়ার কারণ।
তিনি আরো বলেন, সিনেমা হলে প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ সিনেমা দেখতে আসেন। কিন্তু ঘরে ঘরে এখন ক্যাবল লাইন সংযোগ থাকায় বাচ্চাদের লেখা পড়ার ক্ষতি হচ্ছে। ডিস কেবল সংযোগ বন্ধ করে সিনেমা শিল্পটাকে বাঁচানোর জোর দাবি জানান তিনি।
শার্শার বাগআঁচড়ার সাহিত্যি ব্যক্তিত্ব বকতিয়ার উদ্দিন জানান, চিত্রনাট্য, কাহিনী ও সংলাপ সিনেমা শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু আমাদের দেশে তৈরি সিনেমায় এসবের ওপর খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয়না। এ কারণে সিনেমা শিল্প বিলুপ্তের দিকে যাচ্ছে। এদিকে বিশেষভাবে নজর রেখে সিনেমা তৈরি করলে তা দর্শকের আকৃষ্ট করবে এবং সিনেমা হলগুলোতে পূনরায় দর্শকের সরগরম হয়ে উঠবে।