
Home দৃষ্টিপাত (Visibility) > ৩ মন্ত্রণালয়ের টানটানিতে স্থগিত যশোর মেডিক্যালের রাস্তা
এই পৃষ্ঠাটি মোট 7485 বার পড়া হয়েছে
৩ মন্ত্রণালয়ের টানটানিতে স্থগিত যশোর মেডিক্যালের রাস্তা
পড়া লেখা বা মেধা বিকাশের জন্য চাই উপযুক্ত পবিবেশ। আর তা যদি হয় দৃষ্টি নন্দন তা হলে তো খুশির সীমা থাকে না। কিন্তু সেই খুশি থেকে বঞ্চিত

কলেজের অ্যাকাডেকি ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হলেও সেখানে প্রবেশের একমাত্র সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী। তাই নতুন ভবনে পা রাখতে পারছে না তারা। এতে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম সাংঘাতিকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
সড়কটি সরকারের কোন মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে তা নিয়ে চলছে রশি টানা টানি। প্রায় ৪ বছর পার হতে চললেও এর সমাধান করতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। কবে নাগাদ এর সমাধান হবে তা কেউই বলতে পারছে না।
যশোর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. মাহাবুব উল মওলা চৌধুরী রাইজিংবিডিকে জানান, ২০১১ সালে যশোর মেডিক্যাল কলেজে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। চারটি ব্যাচে বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩০০ জন। কিন্তু নিজস্ব অ্যাকাডেমিক ভবন না থাকায় বর্তমানে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে যশোর আড়াইশ শয্যা হাসপাতালের একটি ভবনে। মেডিক্যাল কলেজের জন্য কোটি কোটি টাকা মূল্যের আধুনিক যন্ত্রপাতি দেওয়া হলেও নিজস্ব ভবন না থাকায় তা ব্যবহার উপযোগী করা সম্ভব হয়নি। ফলে উপযুক্ত শিক্ষা গ্রহণ এবং ইন্টার্নি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
তিনি বলেন, ‘কলেজে প্রবেশ দ্বারের রাস্তাটি উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষকে বারবার পত্র দেওয়া হলেও নানা অজুহাতে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে।
মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র নাজমুল হাসান তুহিন জানান, তাদের চরম দুরাবস্থার মধ্যে লেখা পড়া করতে হচ্ছে।স্থান সংকুলান না হওয়ায় তারা এক সঙ্গে ক্লাস করতে পারেন না। এক ব্যাচের ক্লাস হলে অপর ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। তিনি কলেজের প্রবেশ পথ উন্নয়নসহ দ্রুত নতুন ভবনে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করার দাবি জানান।
গণপুর্ত বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী গোলাম কাদের রাইজিংবিডিকে জানান, যশোর মেডিক্যাল কলেজ সরকারিভাবে অনুমোদন লাভ করে ২০০৮ সালে। পরে স্থান নির্ধারণের পর শহরের প্রায় ৩ কিলোমিটার দক্ষিণে বিল হরিণায় ( মেডিকেল কলেজের জন্য) ২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ২০১০ সালে সেখানে প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়।
ইতিমধ্যে প্রসানিক ও অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা। বর্তমানে সেখানে একটি ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, হোস্টেল, মসজিদ ও গবেষণাগারসহ কলেজ সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু করা হয়েছে। এসব উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নের জন্য হাতে নেওয়া হয়েছে ৫৪৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প।
কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় প্রকল্পটি এখনো একনেকের সভায় পাশ হয়নি। এইচ পি এন এস পিডি অপারেশন প্লানের আওতায় থোক বরাদ্দ (বিদেশি অর্থ) প্রাপ্তি স্বাপেক্ষে মেডিক্যাল কলেজের উন্নয়নের কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তবে এর গতি অত্যন্ত ধীর।
এ অবস্থা চলতে থাকলে কবে কলেজের কাজ পুরোপুরি শেষ হবে তা বলা যাচ্ছে না বলে জানান সহকারী প্রকৌশলী গোলাম কাদের।
গণপুর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ার বিশ্বাস বলেন, ‘কলেজে প্রবেশের এক মাত্র সড়কটির উন্নয়ন নিয়ে বিপাকে পড়েছি। মাত্র ২২০০ ফিট রাস্তটি সরকারের কোন বিভাগ বাস্তবায়ন করবে তা নিয়ে চলছে রশি টানা টানি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে তারা বলছে। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় বলছে, আমরা নয় ওই রাস্তার কাজ করবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বলছে, ওই রাস্তা উঁচু করা বা মাটি ফেলার কাজ তাদের নয়।’
তিনি বলেন, ‘রাস্তাটি উন্নয়নের জন্য চার বছর ধরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চিঠি চলাচালি চলছে। সর্বশেষ বুধবার জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভায় বিষয়টি তুলে ধরেন গনপুর্ত বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী গোলাম কাদের।’
এর আগে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে বলে জানান যশোর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. মাহাবুব উল মওলা চৌধুরী। তবে যে সংস্থাই কাজটি করুক না কেনো, রাস্তাটি দ্রত বাস্তবায়ন হোক এমনটি আশা করছেন তিনি।