
Home উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা / High Ranking officers > মোঃ সাইফুল হাসিব / Md. Saiful Hasib (1958) (Additional Secretary)
এই পৃষ্ঠাটি মোট 19189 বার পড়া হয়েছে
মোঃ সাইফুল হাসিব / Md. Saiful Hasib (1958) (Additional Secretary)
মোঃ সাইফুল হাসিব
Md. Saiful Hasib
Home District: Magura, Salikha
পা

জনাব মো: সাইফুল হাসিব বৃহত্তর যশোরের মাগুরা জেলায় একজন অধিবাসী। তিনি বর্তমানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একজন অতিরিক্ত সচিব হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি ১৯৫৮ সালের ১৩ই ডিসেম্বর মাগুরা জেলার শলিখা উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম ডাঃ মোঃ আবদুর রহিম এবং মাতার নাম মরহুমা সুফিয়া বেগম। তাঁর পিতা পেশায় ছিলেন একজন চিকিৎসক এবং মাতা ছিলেন গৃহিনী। শালিখা উপজেলায় একেবারে প্রথমে যাঁরা উচ্চশিক্ষা লাভ করেন তাঁদের মধ্যে তাঁর পিতা ছিলেন অন্যতম। পিতা-মাতার ৪ (চার) পুত্রের মধ্যে জনাব হাসিব হচ্ছেন সর্বকনিষ্ঠ। অন্যদিকে, তাঁর দুই বোন তাঁর থেকে কনিষ্ঠ। ভাই-বোনদের মধ্যে সর্বজ্যেষ্ঠ জনাব মোঃ আসাদুল বাকী বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন; চাকরি হতে তিনি স্বেচ্ছা অবসর নিয়ে বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে সেখানে সপরিবার বসবাস করছেন; তাঁর দ্বিতীয় ভাই জনাব মোঃ বফিকুল বারী সরকারি চাকরি হতে অবসর গ্রহণ করেছেন। অন্যদিকে তাঁর তৃতীয় ভাই মোঃ ইনামুল কবির ১৯৯৬ সালে ৪০ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেছেন। তাঁর দুই বোনের মধ্যে বড় বোন বর্তমানে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে যশোর সদর উপজেলায় কর্মরত আছেন। কনিষ্ঠ বোন একজন গৃহবধূ এবং তিনি যশোর শহরে বসবাস করেন।
জনাব মোঃ সাইফুল হাসিব ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। তিনি ঢাকায় চাকরিরত অবস্থায় ১৯৮৯ সালের ১২ অক্টোবর তারিখে বেগম ইসমত আরা পারভীনের সাথে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হন। বেগম পারভীন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের চিওড়ার বিখ্যাত কাজী পরিবারের কন্যা। তাঁর জন্ম, বেড়ে ওঠা ও লেখাপড়া ঢাকাতে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। তিনি একজন সুগৃহিনী। জনাব হাসিব ও বেগম পারভীন দুই সন্তানের জনক-জননী। তাঁদের বড় সন্তান নাজিফা তাসনিম হাসিব বর্তমানে নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ ২য় সেমিস্টারের ছাত্রী, আর পুত্র তাহমিদ মোহতাসিম হাসিব রাজধানীর Sunbeams নামক একটি স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত।
শিক্ষাজীবন:
জনাব মো: সাইফুল হাসিব তাঁর গ্রামের বাড়ির অদূরে সীমাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু করেন। তিনি খুব মেধাবী ছাত্র ছিলেন। বরাবরই তিনি তাঁর ক্লাসে ১ম স্থান অধিকার করতেন। সীমাখালী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর হতে ৩৬ বছরে তিনিই প্রথম উক্ত বিদ্যালয় হতে প্রাথমিক বৃত্তিলাভ করেন। তিনি সীমাখালী উচ্চ বিদ্যালয় হতে জুনিয়র বৃত্তিও প্রাপ্ত হন। তিনি ১৯৭৩ সালে এস,এস,সি, পাশ করেন। এরপর ১৯৭৫ সালে এইচ,এস,সি, পরীক্ষা দেয়ার কথা থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার দরুণ সেবার পরীক্ষা দিতে ব্যর্থ হন; এর প্রেক্ষিতে তিনি ১৯৭৬ সালে সরকারি বি,এল, কলেজ হতে এইচ,এস,সি পাশ করেন। ১৯৭৬ ও ১৯৭৭ সালে এইচ,এস,সি, পাশ করা ছাত্র-ছাত্রীদের এক শিক্ষাবর্ষে উচ্চশিক্ষাগ্রহণের বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের কারণে তিনি ১৯৭৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি হন ইংরেজী ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে এবং ১৯৮১ সালে অনুষ্ঠিত ১৯৮০ সালের অনার্স পরীক্ষায় বিশেষ কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। এরপর একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১৯৮৩ সালে অনুষ্ঠিত ১৯৮১ সালের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে কৃতিত্বের সাথে ইংরেজী সাহিত্যে তিনি মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি মাস্টার্স ডিগ্রিতে অধ্যয়নকালে বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এবং মাস্টার্স ডিগ্রি সমাপ্ত করার পর বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে যোগদান করেন।
পেশাগত জীবন:
জনাব মো: সাইফুল হাসিব ১৯৮৪ সালের ০৬ই মার্চ তারিখে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সহকারী সচিব হিসেবে যোগদানের মধ্যমে তাঁর সরকারি চাকরিজীবন শুরু করেন। অবশ্য এর আগে তিনি বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের পূর্বে প্রায় ৬ মাস সোনালী ব্যাংকে প্রবেশনার অফিসার হিসেবে চাকরি করেন এবং অল্প কিছুদিন শালিখা উপজেলার বুনাগাতি কলেজে ইংরেজী বিষয়ে শিক্ষাকতা করেন।
জনাব মোঃ সাইফুল হাসিব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সহকারী সচিব হিসেবে কর্মজীবন শুরু করার পর সংস্থাপন মন্ত্রণালয় (বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়), পাট মন্ত্রণালয় (বর্তমানে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়), পরিসংখ্যান বিভাগ (বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অংশ) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সহকারী সচিব/সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। এরপর তিনি উপজেলার নির্বাহী অফিসার হিসেবে ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলায় দায়িত্বপালন করেন। অতঃপর তিনি ঝিনাইদহ পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, কক্সবাজার জেলা পরিষদের সচিব ও লালমনিরহাট কালেক্টরেটে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। লালমনিরহাটে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি ২০০১ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি তারিখে উপসচিব পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হন। এরপর তিনি কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব, জাতীয় জাদুঘরের সচিব এবং নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ভোলা ও গাজীপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে দায়িত্বপালন করেন। পরবর্তীতে তিনি প্রাইভেটাইজেশন কমিশনে বদলি হন। এখানে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি গত ২০০৬ সালের ৩ জুলাই তারিখে যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি পান। যুগ্মসচিব হিসেবে প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের পরিচালক পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি তারিখে সরকারের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে পদোন্নতি পান। পদোন্নতির পর তাঁকে পরিচালক পদেই প্রাইভেটাইজেশন কমিশনে পদায়ন করা হয়।
সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড :
জনাব মোঃ সাইফুল হাসিব একজন সাহিত্য ও সংস্কৃতিমনা ব্যক্তিত্ব। ছাত্রজীবনে তিনি কবিতা আবৃত্তি, নাটকে অভিনয় এবং বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতেন। তাঁর অল্পবিস্তর লেখালেখির অভ্যাসও রয়েছে। তিনি বাংলা একাডেমির তত্ত্বাবধানে ‘Technology in America’ নামক গ্রন্থের অনুবাদ করেন যা উক্ত একাডেমি হতে ‘আমেরিকার প্রযুক্তি’ নামে ২০০০ সালে প্রকাশিত হয়। এছাড়া, তিনি অনেক প্রবন্ধ, কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী ইত্যাদি রচনা করেছেন।
সামাজিক কর্মকান্ড:
জনাব মোঃ সাইফুল হাসিব বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্ট। তিনি গাজীপুর জেলা পরিষদে কর্মরত থাকা অবস্থায় ‘গাজীপুর সাহিত্য পরিষদ’ নামক সংগঠনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। সেখানে কর্মরত থাকাকালে তিনি বৃহত্তর যশোর সমিতি গাজীপুর নামক সংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্ট হয়ে পড়েন এবং ২০০৫ সালে উক্ত সমিতির সভাপতি মনোনীত হন। এরপর হতে অদ্যাবধি উক্ত সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন। তাঁর ঐকান্তিক লক্ষ্য হচ্ছে ঢাকা ও এর আশেপাশে বসবাসরত বৃহত্তর যশোরের বিভিন্ন পেশার লোকদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপন এবং তাঁদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বৃহত্তর যশোরের অধিবাসীদের ঐক্যের বন্ধন দৃঢ় করা।
সাক্ষাৎকার গ্রহণে:
মো: হাসানূজ্জামান বিপুল
সর্বশেষ আপডেট:
আগস্ট ২০১১