
Home সাহিত্যিক / Litterateur > আজীজুল হক / Azizul Haq (1930-2001)
এই পৃষ্ঠাটি মোট 17942 বার পড়া হয়েছে
আজীজুল হক / Azizul Haq (1930-2001)
আজীজুল হক
Azizul Haq
Home District: Magura, Sreepur
পারিবারি
ক পরিচিতি:
সাহিত্যানুরাগী, প্রকৃতি প্রেমী, শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক, গবেষক কবি আজীজুল হক, ১৯৩০ সালের মার্চ মাসের ২ তারিখে তদানীন্তন যশোর জেলার মাগুরা মহাকুমার শ্রীপুর থানার তারাউজাল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মুন্সী মোহাম্মদ জবেদ আলী এবং মাতা রহিমা খাতুন।
শিক্ষাজীবন:
আজীজুল হকের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হয় নিজ গ্রামের আপার প্রাইমারী স্কুলে এবং পরে আম তৈল মধ্য ইংরেজী স্কুলে। ১৯৪৭ সালে তিনি শ্রীপুর মহেশচন্দ্র উচ্চ ইংরেজী স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করে বাগেরহাট পি. সি. কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই ১৯৪৯ সালে আই. এ. পাশ করেন। ১৯৫১ সালে আজীজুল হক ঢাকা কলেজ থেকে বি. এ এবং ১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম. এ ডিগ্রী লাভ করেন।
পেশাগত জীবন:
১৯৫৭ সালে সাতক্ষীরা ডিগ্রী কলেজে অধ্যাপনার মাধ্যমে কবি আজীজুল হকের শিক্ষকতা শুরু হয়। ১৯৫৮ সালে তিনি মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে যোগদান করেন এবং সুদীর্ঘ দিন শিক্ষকতা করার পর ১৯৮৮ সালে অবসরগ্রহণ করেন। তাঁর দীর্ঘ শিক্ষকতাকালীন তিনি সৃষ্টি করেছেন অসংখ্য কৃতিসন্তান আর গড়ে তুলেছেন যশোরের এক রূপময় সাংস্কৃতিক অঙ্গন।
সাহিত্যকর্ম:
বাংলা সাহিত্যের শক্তিধর কবি পুরুষ আজীজুল হকের কাব্যজীবনের সূচনা হয় বিদ্যালয়ে পাঠকালীন সময়ে। এ সময় থেকেই সাহিত্যচর্চা ও কবিতা লেখার ব্যাপারে তিনি ছিলেন চরম ও পরম আগ্রহী। কিশোর কবি আজীজুল হকের কাব্যজীবনের প্রথম ফসল।
আমরা আসিনি ধরণীর বুকে
টাকা ঝনাৎ শুনতে
অংক শিখিনি দালালী চাকতি
কী করে হবে শুনতে
ব্যথিতের বুকে ব্যথা ঝনঝনা
এতিম সহিছে শত গঞ্জনা
প্রভাতের মাঠে মুঠো মুঠো
করে জমাট কান্না শুনতে
আমরা এসেছি চুপিচুপি নামা
অশ্রু তাদের শুনতে।
কবিতাটি ১৯৯৪ সালে শিশু সওগাত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। পরবর্তী পর্যায়ে কলকাতার ‘ইত্তেহাদ’ এর কিশোর মজলিসে তাঁর লেখা নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হতে থাকে।
পঞ্চাশের দশকের সূচনালগ্ন কবি আজীজুল হক কবিতায় রাজধানী ঢাকাতে পা রাখেন। এ সময় ঢাকায় প্রখ্যাত কবিদের সাথে তাঁর সখ্যতা গড়ে ওঠে এবং বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় তাঁর কবিতা মুদ্রিত হতে থাকে। বিশেষ করে, ইত্তেফাক, ইত্তেহাদ, মাসিক মাহেনও এবং এই আজাদ এ প্রতিনিয়তই তাঁর কবিতা প্রকাশিত হতো। পরবর্তীতে সংবাদ ও জনকণ্ঠসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠিত পত্রিকাগুলোতেও কবি আজীজুল হকের লেখা ছাপা হয়।
আজীজুল হক একজন আত্নসচেতন কবি। সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে কাব্যরচনা তাঁর পরিচয়ও নয়, বৈশিষ্ট্যও নয়। তার ফলশ্রুতিতে তাঁর কবিতাকাল উত্তীর্ণে সক্ষম হবে বলে ভাবা যেতে পারে।
ভাষা ও সাহিত্যের মধ্য দিয়ে তিনি অবিরল ধারায় মনের চর্চা করেছেন। তাঁর কবিতার উপজীব্য বিষয় মানুষ, সমাজ, সময়, দেশ, প্রকৃতি প্রেম, নদ ও নারী। আর শব্দ চয়নের ক্ষেত্রে, তিনি ছিলেন অসাধারণ নিপুণ শিল্পী।
১৯৬৮ সালে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ঝিনুক মুহূর্ত সূর্যকে’। ১৯৭৬ সালে দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘বিনষ্টের চিৎকার’ ১৮৮৯ সালে তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘ঘুম ও সোনালী ঈগল’ এবং ১৯৯৪ সালে ‘আজীজুল হকের কবিতা’ নামক কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়।
প্রবন্ধ রচনার ক্ষেত্রে তাঁর নিরীক্ষাধর্মী চিন্তা-চেতনা পাঠক সমাজকে করেছে বিমুগ্ধ - অবহিত। সংখ্যার আধিক্যতায় নয়, বিষয় বৈচিত্রে ও চিন্তা-চেতনায় তিনি ছিলেন অনন্য। ১৯৮৫ সালে বাংলা একাডেমী কর্তৃক প্রকাশিত ‘অস্তিত্ব চেতনা ও আমাদের কবিতা’ প্রবন্ধটি বাংলা সাহিত্যের একটি স্মরণীয় প্রয়াস।
কবি আজীজুল হকের গানে সমাজ সচেতনতার প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাওয়া যায়, যা অনাদিকাল ধরে প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে মানুষের মনে।
আজীজুল হকের দেশাত্নবোধক জনপ্রিয় একটি গান যার সুর করেছেন বেতার ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব, প্রখ্যাত সঙ্গীতকার, সুরকার ও সুরবিতান সঙ্গীত একাডেমীর অধ্যক্ষ শাহ্ মোহাম্মদ মোর্শেদ।
সাবধান সাবধান সাবধান, বাংলার শত্রুরা সাবধান
ভাঙ্গবোই দস্যুর ঐ সাম্রাজ্য, বাংলার শত্রুর ভাগ্যে।
মৃত্যু আজ অনিবার্য।।
মেঘনা কি যমুনা কি পদ্মা লালে লাল শত্রুর রক্তে
বঙ্গসাগর আজ ক্ষুব্ধ জালিম কাঁপছে শাহী তখতে।।
দেখছো তো জনতার শক্তি শান্তির বিনিময়ে শান্তি
রক্তের বিনিময়ে রক্ত অস্ত্রের বিনিময়ে অস্ত্র
আমরা সশস্ত্র।
সবুজের বুকে লাল সূর্য উড়বেই আকাশের ঊর্ধ্বে
বাংলার জয় হাঁকে তূর্য সাড়ে সাত কোটি চলে যুদ্ধে।
সাহিত্যাঙ্গনে বিভিন্ন ধারায় রচয়িতা আজীজুল হক বেশ কিছু নাটক, গীতিনাট্য ও ছায়া নাট্য রচনা করে মঞ্চস্থ করেছেন। কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনাবলম্বনে ‘অগ্নিবীণা’ ছায়া নাট্য রূপায়ণের সার্থক রূপকার আজীজুল হক। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত ‘কৃষ্ণ চূড়ার তৃষ্ণা’ কবি আজীজুল হকের সমাজ সচেতনতার ও শিল্প রূপায়নের অপূর্ব বহিঃ প্রকাশ।
সম্মাননা:
বরেণ্য কবি আজীজুল হক সাহিত্য ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্যে বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৯৮৫ সালে ‘সুহৃদ সাহিত্য পুরস্কার’, ১৯৮৬ সালে ‘যশোর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার’, ১৯৮৯ সালে ‘বাংলা একাডেমী’ পুরস্কার ও ‘মধুসূদনের একাডেমী পুরস্কার’, ১৯৯৪ সালে ‘যশোর শিল্পী গোষ্ঠীপদক’ এবং ১৯৯৬ সালে ‘চাঁদের হাট পদক’ অন্যতম।
বিবাহিত জীবন:
আজীজুল হক ১৯৬২ সালে সাতক্ষীরা জেলার সুলতানপুর গ্রামের সেলিনা বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের দুই পুত্র এম. এম. সবজুল হক ও এম সীমাউল হক।
পরলোক গমন:
শব্দ ও ছন্দ ও বিষয়ের পরিমিতি বোধ সম্পন্ন প্রিয়ভাষী কবি আজীজুল হক দেশ, মাটি ও মানুষের কাছে তাঁর দায়বদ্ধতা পরিশোধ করে ২৭ আগস্ট ২০০১ সকাল দশটায় অনন্ত শষ্যায় শায়িত হন। যশোর কারবালাস্থ গোরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
তথ্য সূত্র :
যশোরের যশস্বী, শিল্পী ও সাহিত্যিক
লেখক : কাজী শওকত শাহী
সম্পাদনা :
মোঃ হাসানূজ্জামান বিপুল
সর্বশেষ আপডেট:
ফেব্রুয়ারী ২০১২ ইং
ইউনুচ আলী

সাহিত্যানুরাগী, প্রকৃতি প্রেমী, শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক, গবেষক কবি আজীজুল হক, ১৯৩০ সালের মার্চ মাসের ২ তারিখে তদানীন্তন যশোর জেলার মাগুরা মহাকুমার শ্রীপুর থানার তারাউজাল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মুন্সী মোহাম্মদ জবেদ আলী এবং মাতা রহিমা খাতুন।
শিক্ষাজীবন:
আজীজুল হকের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হয় নিজ গ্রামের আপার প্রাইমারী স্কুলে এবং পরে আম তৈল মধ্য ইংরেজী স্কুলে। ১৯৪৭ সালে তিনি শ্রীপুর মহেশচন্দ্র উচ্চ ইংরেজী স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করে বাগেরহাট পি. সি. কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই ১৯৪৯ সালে আই. এ. পাশ করেন। ১৯৫১ সালে আজীজুল হক ঢাকা কলেজ থেকে বি. এ এবং ১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম. এ ডিগ্রী লাভ করেন।
পেশাগত জীবন:
১৯৫৭ সালে সাতক্ষীরা ডিগ্রী কলেজে অধ্যাপনার মাধ্যমে কবি আজীজুল হকের শিক্ষকতা শুরু হয়। ১৯৫৮ সালে তিনি মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে যোগদান করেন এবং সুদীর্ঘ দিন শিক্ষকতা করার পর ১৯৮৮ সালে অবসরগ্রহণ করেন। তাঁর দীর্ঘ শিক্ষকতাকালীন তিনি সৃষ্টি করেছেন অসংখ্য কৃতিসন্তান আর গড়ে তুলেছেন যশোরের এক রূপময় সাংস্কৃতিক অঙ্গন।
সাহিত্যকর্ম:
বাংলা সাহিত্যের শক্তিধর কবি পুরুষ আজীজুল হকের কাব্যজীবনের সূচনা হয় বিদ্যালয়ে পাঠকালীন সময়ে। এ সময় থেকেই সাহিত্যচর্চা ও কবিতা লেখার ব্যাপারে তিনি ছিলেন চরম ও পরম আগ্রহী। কিশোর কবি আজীজুল হকের কাব্যজীবনের প্রথম ফসল।
আমরা আসিনি ধরণীর বুকে
টাকা ঝনাৎ শুনতে
অংক শিখিনি দালালী চাকতি
কী করে হবে শুনতে
ব্যথিতের বুকে ব্যথা ঝনঝনা
এতিম সহিছে শত গঞ্জনা
প্রভাতের মাঠে মুঠো মুঠো
করে জমাট কান্না শুনতে
আমরা এসেছি চুপিচুপি নামা
অশ্রু তাদের শুনতে।
কবিতাটি ১৯৯৪ সালে শিশু সওগাত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। পরবর্তী পর্যায়ে কলকাতার ‘ইত্তেহাদ’ এর কিশোর মজলিসে তাঁর লেখা নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হতে থাকে।
পঞ্চাশের দশকের সূচনালগ্ন কবি আজীজুল হক কবিতায় রাজধানী ঢাকাতে পা রাখেন। এ সময় ঢাকায় প্রখ্যাত কবিদের সাথে তাঁর সখ্যতা গড়ে ওঠে এবং বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় তাঁর কবিতা মুদ্রিত হতে থাকে। বিশেষ করে, ইত্তেফাক, ইত্তেহাদ, মাসিক মাহেনও এবং এই আজাদ এ প্রতিনিয়তই তাঁর কবিতা প্রকাশিত হতো। পরবর্তীতে সংবাদ ও জনকণ্ঠসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠিত পত্রিকাগুলোতেও কবি আজীজুল হকের লেখা ছাপা হয়।
আজীজুল হক একজন আত্নসচেতন কবি। সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে কাব্যরচনা তাঁর পরিচয়ও নয়, বৈশিষ্ট্যও নয়। তার ফলশ্রুতিতে তাঁর কবিতাকাল উত্তীর্ণে সক্ষম হবে বলে ভাবা যেতে পারে।
ভাষা ও সাহিত্যের মধ্য দিয়ে তিনি অবিরল ধারায় মনের চর্চা করেছেন। তাঁর কবিতার উপজীব্য বিষয় মানুষ, সমাজ, সময়, দেশ, প্রকৃতি প্রেম, নদ ও নারী। আর শব্দ চয়নের ক্ষেত্রে, তিনি ছিলেন অসাধারণ নিপুণ শিল্পী।
১৯৬৮ সালে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ঝিনুক মুহূর্ত সূর্যকে’। ১৯৭৬ সালে দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘বিনষ্টের চিৎকার’ ১৮৮৯ সালে তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘ঘুম ও সোনালী ঈগল’ এবং ১৯৯৪ সালে ‘আজীজুল হকের কবিতা’ নামক কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়।
প্রবন্ধ রচনার ক্ষেত্রে তাঁর নিরীক্ষাধর্মী চিন্তা-চেতনা পাঠক সমাজকে করেছে বিমুগ্ধ - অবহিত। সংখ্যার আধিক্যতায় নয়, বিষয় বৈচিত্রে ও চিন্তা-চেতনায় তিনি ছিলেন অনন্য। ১৯৮৫ সালে বাংলা একাডেমী কর্তৃক প্রকাশিত ‘অস্তিত্ব চেতনা ও আমাদের কবিতা’ প্রবন্ধটি বাংলা সাহিত্যের একটি স্মরণীয় প্রয়াস।
কবি আজীজুল হকের গানে সমাজ সচেতনতার প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাওয়া যায়, যা অনাদিকাল ধরে প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে মানুষের মনে।
আজীজুল হকের দেশাত্নবোধক জনপ্রিয় একটি গান যার সুর করেছেন বেতার ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব, প্রখ্যাত সঙ্গীতকার, সুরকার ও সুরবিতান সঙ্গীত একাডেমীর অধ্যক্ষ শাহ্ মোহাম্মদ মোর্শেদ।
সাবধান সাবধান সাবধান, বাংলার শত্রুরা সাবধান
ভাঙ্গবোই দস্যুর ঐ সাম্রাজ্য, বাংলার শত্রুর ভাগ্যে।
মৃত্যু আজ অনিবার্য।।
মেঘনা কি যমুনা কি পদ্মা লালে লাল শত্রুর রক্তে
বঙ্গসাগর আজ ক্ষুব্ধ জালিম কাঁপছে শাহী তখতে।।
দেখছো তো জনতার শক্তি শান্তির বিনিময়ে শান্তি
রক্তের বিনিময়ে রক্ত অস্ত্রের বিনিময়ে অস্ত্র
আমরা সশস্ত্র।
সবুজের বুকে লাল সূর্য উড়বেই আকাশের ঊর্ধ্বে
বাংলার জয় হাঁকে তূর্য সাড়ে সাত কোটি চলে যুদ্ধে।
সাহিত্যাঙ্গনে বিভিন্ন ধারায় রচয়িতা আজীজুল হক বেশ কিছু নাটক, গীতিনাট্য ও ছায়া নাট্য রচনা করে মঞ্চস্থ করেছেন। কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনাবলম্বনে ‘অগ্নিবীণা’ ছায়া নাট্য রূপায়ণের সার্থক রূপকার আজীজুল হক। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত ‘কৃষ্ণ চূড়ার তৃষ্ণা’ কবি আজীজুল হকের সমাজ সচেতনতার ও শিল্প রূপায়নের অপূর্ব বহিঃ প্রকাশ।
সম্মাননা:
বরেণ্য কবি আজীজুল হক সাহিত্য ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্যে বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৯৮৫ সালে ‘সুহৃদ সাহিত্য পুরস্কার’, ১৯৮৬ সালে ‘যশোর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার’, ১৯৮৯ সালে ‘বাংলা একাডেমী’ পুরস্কার ও ‘মধুসূদনের একাডেমী পুরস্কার’, ১৯৯৪ সালে ‘যশোর শিল্পী গোষ্ঠীপদক’ এবং ১৯৯৬ সালে ‘চাঁদের হাট পদক’ অন্যতম।
বিবাহিত জীবন:
আজীজুল হক ১৯৬২ সালে সাতক্ষীরা জেলার সুলতানপুর গ্রামের সেলিনা বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের দুই পুত্র এম. এম. সবজুল হক ও এম সীমাউল হক।
পরলোক গমন:
শব্দ ও ছন্দ ও বিষয়ের পরিমিতি বোধ সম্পন্ন প্রিয়ভাষী কবি আজীজুল হক দেশ, মাটি ও মানুষের কাছে তাঁর দায়বদ্ধতা পরিশোধ করে ২৭ আগস্ট ২০০১ সকাল দশটায় অনন্ত শষ্যায় শায়িত হন। যশোর কারবালাস্থ গোরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
তথ্য সূত্র :
যশোরের যশস্বী, শিল্পী ও সাহিত্যিক
লেখক : কাজী শওকত শাহী
সম্পাদনা :
মোঃ হাসানূজ্জামান বিপুল
সর্বশেষ আপডেট:
ফেব্রুয়ারী ২০১২ ইং
ইউনুচ আলী