
Home শিল্পী / Artist > সিমলা / Simla
এই পৃষ্ঠাটি মোট 7475 বার পড়া হয়েছে
সিমলা
Simla
Home District: Jhenaidah, Shailkupa
পারিবারিক পরিচিতি:
আধুনিক চলচ্চিত্রের অন্যতম অভিনেত্রী সিমলা আশির দশকে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপাতে জন্মগ্রহণ করেন। জন্ম তারিখ ১২ এপ্রিল। বাবা প্রয়ত আব্দুল মাজেদ একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। মা একজন গৃহিণী। ৬ ভাই ও ৫ বোনের মধ্যে সিমলা সবার ছোট।
শিক্ষাজীবন:
শিক্ষাজীবনের শুরু শৈলকূপা মডেল স্কুলে। এখানে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর ৬ষ্ঠ শ্রেণী হতে শৈলকূপা গার্লস স্কুলে লেখাপড়া করেন। এখান থেকে এস. এস. সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ইন্টারমিডিয়েট ভর্তি হন শৈলকূপা সরকারী কলেজে। এইচ. এস. সি দ্বিতীয়বর্ষে পড়াকালীন চলচ্চিত্রে ডাক পান, ফলে শিক্ষাজীবন ব্যাহত হয়।
শিল্পীজীবন:
১৯৯৯ সালে ম্যাডাম ফুলি ছবিতে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে সিমলা চলচ্চিত্রের নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। অভিনয়ে আসার আগে কখনই তিনি অভিনয় জগতের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না। প্রবল আগ্রহের করণে তিনি নিজেকে একজন অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন।
বিশিষ্ট গীতিকার ও সুরকার মিল্টন খন্দকার সিমলার চাচাতো ভাই। সিমলার চলচ্চিত্রে আগমনের পেছনে প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন মিন্টন খন্দকার। আর চিত্র পরিচালক শহীদুল ইসলাম খোকন অভিনয়ে সুযোগ সৃষ্টি করে দেন। প্রথম সাক্ষাতেই শহীদুল ইসলাম সিমলাকে তিনটি ছবিতে চুক্তি করলেন। প্রথম ছবি ‘ম্যাডাম ফুলি’, দ্বিতীয় ছবি ‘পাগলা ঘন্টা’ এবং তৃতীয় ছবি ‘বওয়া’। সেই থেকে সিমলা একের পর এক ছবিতে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে নিজেকে একজন প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। ২০০৭ সাল পর্যন্ত সিমলা ৩০টিরও অধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে ম্যাডাম ফুলি ছবিতে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন।
সিমলার বিপরীতে নায়ক:
সিমলা যে সকল নায়কের সাথে কাজ করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম রিয়াজ, ফেরদৌস, শাকিব খান, মান্না, আমিন খান, হেলাল খানসহ বর্তমান প্রজন্মের প্রায় সকল নায়ক।
অভিনীত ছবি:
সিমলা যে সকল ছবিতে অভিনয় করেছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ‘ম্যাডাম ফুলি’, ‘বোমা হামলা’, ‘হাসন রাজা’, ‘ধাওয়া’, ‘না বোলো না’, ‘পরম প্রিয়া’, ‘ঠেকাও মসত্মান’, ‘লাল সবুজ’, ‘গন্ডোগোল’, ‘কালো বিড়াল’, ‘বিবেক’, ‘ছোট বোন’, ‘ঝন্টু মন্টু দুই ভাই’ ও ‘সুখ বসনত্ম’ প্রভৃতি। মুক্তির অপেক্ষায় আছে আরও বেশ কিছু ছবি।
নায়িকা হতে মডেল তারকা:
অভিনয়ের প্রথম দিকে সিমলা বেশকিছু বিজ্ঞাপনচিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েও গ্রহণ করেননি। কিন্তু পরবর্তীতে আফজাল হোসেন ও ইলিয়াস কল্লোলের মত স্বনামধন্য ব্যক্তিদের প্রস্তাব তিনি আর ফিরিয়ে দিতে পারেননি। মূলত ইলিয়াস কল্লোলের নির্মিত বিজ্ঞাপনে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে তিনি তার মডেলিং ক্যারিয়ার শুরু করেন। তার দ্বিতীয় বিজ্ঞাপন আফজাল হোসেনের ডাবলকোলা গ্রুপের চেজারের বিজ্ঞাপন। তার বিপরীতে ছিলেন নায়ক ফেরদৌস।
চলচ্চিত্র হতে টেলিভিশনে:
সিমলা মূলতঃ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী হিসেবে খ্যাত হলেও তিনি নিজেকে শুধুমাত্র চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি। বেশকিছু টিভি নাটকেও সিমলাকে দেখা যায়। বড় পর্দা ও ছোট পর্দা সব শ্রেণীর দর্শকদের কাছে যাবার জন্য মূলত চলচ্চিত্রের পাশাপাশি তিনি নাটকে অভিনয় করেছেন। ইতোমধ্যে তিনি বেশকিছু সিরিয়াল ও প্যাকেজ নাটকে অভিনয় করেছেন। বর্তমানে বিটিভি, এটিএন বাংলা, চ্যানেল আইসহ অধিকাংশ টিভি চ্যানেলে তার অভিনীতি নাটকগুলি প্রচারিত হয়েছে। তার নাটকগুলির মধ্যে উলেস্নখযোগ্য হচ্ছে তিন পুরুষ, ফ্লাট নং ৪০ ইত্যাদি।
স্মরণীয় ঘটনা:
ছোট বেলায় সিমলা গাছে উঠতে ও মাছ ধরতে পছন্দ করতেন। একবার উঠানের উপর একটি পেয়ারা গাছের মগডালে একটি পাকা পেয়ারা দেখে তার লোভ হয়। তখন টিপ টিপ বৃষ্টি হচ্ছিল। পেয়ারা গাছের পাশে ছিলো একটা কাঁঠাল গাছ। মা বললেন কিছু কাঁঠালের পাতা ভেঙ্গে নিয়ে আসতে। এটা করতে গিয়ে তিনি টিনের চালের উপর পড়ে গেলেন এখান থেকে গড়িয়ে আবার মাটিতে পড়লেন। মজার ব্যাপার ছিলো পড়ে যাবার সময় তার মনে হচ্ছিল তিনি কিছুটা স্লো মোশনে পড়ছেন।
তার জীবনের আর একটি স্মরণীয় ঘটনা - অভিনয় করতে গিয়ে একটি ছবিতে তার একটি শর্ট ছিলো এমন যে প্রবীন অভিনেতা খলিল পানিতে ডুবে যাবার সময় তিনি পানিতে সাঁতার কেটে খলিলকে উদ্ধার করবেন। পরিচালক তাকে বলে দিলেন শর্টটি এক টেকেই ওকে করতে হবে। এই কঠিন দৃশ্যের অভিনয়টি করতে গিয়ে কাদায় তার পা আটকে যায়। তখন তিনি পাও তুলতে পারছিলেন না আবার কাটও বলতে পারছিলেন না। ঐ মুহুর্তে তিনি একটি ডুব দিয়ে পা ছাড়িয়ে নিয়ে খলিলকে উদ্ধার করে নিয়ে আসলেন। শর্টটি ওকে হয়ে যায়। কিন্তু ঐ মুহুর্তে তার এই কাদায় পা আটকে যাবার ঘটনা কেউ বুঝতে পারেননি। তখন তিনি উপরে উঠে এসে সবাইকে ঘটনাটি বললে সবাই বেশ মজা পেল।
তথ্য সূত্র : সাক্ষাৎকার
সম্পাদনা :
মোঃ হাসানূজ্জামান (বিপুল)
সর্বশেষ আপডেট :
ফেব্রুয়ারি ২০১২