
Home নড়াইল জেলা / Narail District > নড়াইল সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯২৯)
এই পৃষ্ঠাটি মোট 100050 বার পড়া হয়েছে
নড়াইল সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯২৯)
চিত্রা বিধৌত নড়াইল জেলার অন্যতম নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নড়াইল সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়টি ১৯২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় নড়াইল টাউন বালিকা বিদ্যালয় নামে। এই সময় নিন্ম প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসাবে স্থানীয় জমিদারদের জমিতে (বর্তমান স্থানে) বিদ্যালয়টির সূচনা হয়। ১৯৩১ সালে বিদ্যালয়টি উচ্চ প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ে উন্নীত হয়। ১.২৪ একর জমির উপর ১৯ কক্ষ বিশিষ্ট দ্বিতল ও ত্রিতল ভবন, প্রধান শিক্ষিকার দ্বিতল বাস ভবন, সহকারী প্রধান শিক্ষিকার বাস ভবন ও প্রাচীর বেষ্টিত কয়েকটি গৃহ নিয়ে বিদ্যালয়টির অবস্থান। ১৯৩৬ সালে বিদ্যালয়টিতে একটি সেমি পাকা গৃহ র্নিমাণের কাজ শুরু করা হয় এবং বিদ্যালয়টিকে মধ্য ইংরাজী বিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়।
বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা মরহুম মোজাহার উদ্দীন চৌধুরী ও মরহুম মুন্সি ওয়ালিউর রহমান। মরহুম মোজাহার উদ্দীন চৌধুরী ছিলেন ব্রিটিশ আমলে নড়াইলের প্রথম মুসলিম আইনজীবি, তৎকালীন মুসলিম লীগের সদস্য এবং একজন বিশিষ্ট সমাজসেবী। নড়াইল মির্জাপুর গ্রামের কৃতী সন্তান মরহুম মুন্সি ওয়ালিউর রহমান ছিলেন একাধারে একজন উকিল, যশোর জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইন পরিষদের সদস্য। ১৯৬০ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বিদ্যালয়টির প্রথম প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন স্বর্গীয় সচীন্দ্র ভৌমিক।
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের ফলে বহু প্রতিষ্ঠিত হিন্দু সম্প্রদায় এ দেশ ত্যাগ করায় বিদ্যালয়টির অচলাবস্থা দেখা দেয়। কিন্তু স্থানীয় নেতৃবৃন্দ যথেষ্ট কষ্ট স্বীকার করে বিদ্যালয়টির উন্নয়নের গতিধারাকে অব্যাহত রাখেন। পরবর্তীতে বিদ্যালয়টিকে মাধ্যমিক পর্যায়ে উন্নীত করা হয় এবং ১৯৫৩ সালে বিদ্যালয়টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসাবে সরকার কর্তৃক স্বীকৃতি লাভ করে। মোহাম্মদ ওয়ারেশ আলী চৌধুরী নড়াইলের মহাকুমা প্রশাসকের দায়িত্বভার গ্রহণ করে বিদ্যালয়টির ব্যাপক উন্নিত সাধন করেন। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও সাহায্য সহযোগিতার কৃতজ্ঞপাশে আবদ্ধ হয়ে বিদ্যালয়টি তার প্রথমা কন্যা দিলরুবার নামে নামকরণ করা হয় “দিলরুবা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়” ১৯৭০ সালে বিদ্যালয়টিকে সরকারীকরণ করা হলে এর পূর্বের নামটিকে বির্সজন দিয়ে বিদ্যালয়টির নাম রাখা হয় “নড়াইল সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়”। বিদ্যালয়টি উন্নয়নের ক্ষেত্রে যে সমস্ত বিদ্যানুরাগী ব্যক্তির বিশেষ অবদান আছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নড়াইলের প্রাক্তন মুন্সেফ বাবু মনীন্দ্র নাথ, প্রাক্তন মহকুমা প্রশাসক খান সাহেব এফ, এম, হক, বিদ্যালয়টির প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, মোঃ আব্দুস সালাম, মোঃ আব্দুল জলিল, এ্যাডভোকেট খায়রুজ্জামান ও বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুর রশিদ প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। ১৯৮৭ সালে রাষ্ট্রপতি হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ কর্তৃক বিদ্যালয়টির ছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য একটি বড় ধরনের বাস প্রদান করা হয়। বিদ্যালয়টি নড়াইল জেলার নারী শিক্ষার একটি প্রাচীনতম ঐতিহ্যময় বিদ্যাপীঠ।
তথ্য সূত্র :
শিক্ষালয়ের ইতিকথায় যশোর
লেখক : কাজী শওকত শাহী
সম্পাদনা :
মোঃ হাসানূজ্জামান বিপুল
শামিউল আমিন শান্ত