
Home নড়াইল জেলা / Narail District > নড়াইল জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ / Prominent persons of Narail District
এই পৃষ্ঠাটি মোট 91530 বার পড়া হয়েছে
নড়াইল জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ / Prominent persons of Narail District
নড়াইল জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ
Prominent persons of Narail District
সৈয়দ নওসের আলীঃ
বৃটিশ ভারতের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ। নড়াইল জেলার মির্জাপুর গ্রামে ১৮৯১ সালের আগস্ট মাসে এক

এস.এম. সুলতানঃ
নড়াইল শহরের উপকণ্ঠে মাছিমদিয়া গ্রামে ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম মেসের আলী। পিতা ছিলেন নড়াইলের জমিদারদের রাজমিস্ত্রি। এস.এম. সুলতানের ডাক নাম ছিল লাল মিয়া। নড়াইলের জমিদাররা সুলতানকে কলকাতা নিয়ে যান। জমিদার পরিবারের সাথে হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দী পরিবারের গভীর সম্পর্ক ছিল। সোহরাওয়ার্দী পরিবারের চিত্র সমালোচক জায়েদ সোহরাওয়ার্দীর কারণে সুলতান কলকাতা আর্ট কলেজে ভর্তির সুযোগ পান। কলকাতা আর্ট কলেজে তিনি বছর অধ্যয়ন করার পর, তিনি ভারতের বিভিন্ন স্থান ঘুরে বেড়াতে থাকেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় কাশ্মির হয়ে পাকিস্তান চলে যান। সে সময়ে লাহোরে তাঁর একটি একক চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। যার উদ্বোধন করেছিলেন ফাতেমা জিন্নাহ। তাছাড়া আমেরিকার ওয়াসিংটন, বোস্টন, শিকাগো, নিউইয়র্ক ও লন্ডন শহরে তার বেশ কয়েকটি একক চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৮৬ সালে তাঁর একক চিত্র প্রদর্শনী হয় ঢাকায়। বিশ্বখ্যাতির শীর্ষে যেয়েও তিনি সবসময় নড়াইলে বসবাস করেছেন। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন শিশুদের জন্য "শিশুস্বর্গ" যেটা পুর্ণাঙ্গরূপে ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৯৪ সালে ১০ অক্টোবর নড়াইলে ৭০ বছর বয়সে মারা যান।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখঃ
স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে বীরত্বের পরিচয় দিয়ে শহীদ হন এ রকম সাতজন মুক্তিযোদ্ধাকে বাংলাদেশ সরকার দেশের সর্বোচ্চ খেতাব বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করেন। এর মধ্যে একজন নড়াইল জেলার কৃতি সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ। জেলার সদর উপজেলার নড়াইল লোহাগড়া সড়কের পাশে দত্তপাড়া গ্রামের উত্তর দিকে অবস্থিত ছোট একটি গ্রাম ধুড়িয়া। ১৯৭১ সালে তৎকালীন ই.পি. আর (বর্তমান বিডিআর) এর ল্যান্স নায়েক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোর জেলার শার্শা উপজেলায় পাক হানাদার বাহিনীর সাথে এক সম্মুখ যুদ্ধে অসীম বীরত্বের পরিচয় দেন। ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ ঐ যুদ্ধে শহীদ হন।
মাতৃভূমি রক্ষার কঠিন দায়িত্ব তিনি কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। দলীয় অধিনায়ক হিসেবে তিনি নিজের জীবনটি বাঁচাতে পারতেন। সৈনিক জীবনের মহান ব্রতকে তিনি নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে সৈনিকদের রক্ষা করতে চাইলেন। আহত সিপাহী নান্নু মিয়াকে তিনি ফেলে গেলেন না। এক হাতে এলএমজি নিয়ে তিনি কাঁধে আহত সিপাহী নান্নু মিয়াকে তুলে নিলেন। সেই সাথে মেশিন গান থেকে অবিরাম গোলাবর্ষণ ছুড়তে থাকলেন। কিভাবে সঙ্গীদের নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ফেরা যায় এই চিন্তায় তিনি একই সঙ্গে যুদ্ধের এবং আত্মরক্ষার কৌশল পাল্টে ফেললেন। শত্রুদের গোলক ধাঁধাঁয় ফেলার জন্য ডাইনে বায়ে গুলি চালাতে চালাতে পিছু হটছেন। বিরামহীনভাবে গুলি চালাতে চালাতে অতি দ্রুত তাঁরা নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটতে থাকলেন। এমন সময় হঠাৎ ২ ইঞ্চি মর্টারের একটি গোলা এসে পড়লো তাঁর ঠিক ডান পাশে। গোলার আঘাতে তাঁর ডান হাঁটু ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। ডানকাঁধেও তিনি আঘাত পেলেন। জীবনের শেষ পরিণতির কথা তিনি বুঝতে পারলেন। মরণের পূর্বে টহল বাহিনীকে প্রতিরক্ষা ঘাঁটিতে পৌঁছে দেয়ার শেষ চেষ্টাটুকু তিনি করতে চাইলেন। ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদের কাঁধে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ ঘটছে। লাইট মেশিনগান হাতে তিনি গাছের গুঁড়িতে হেলান দিয়ে বসে আছেন। সহযোগী সিপাহী মোস্তফার দিকে এলএমজিটা বাড়িয়ে দিয়ে তাঁদেরকে পশ্চাদাপসরণ করার আদেশ করলেন। ‘শিগগীর নান্নু মিয়াকে কাঁধে তুলে নাও। তাড়াতাড়ি যাও প্রতিরক্ষা ঘাঁটিতে। আমি ততক্ষণে শত্রুদেকে প্রতিরোধ করি। আহত অধিনায়ককে রেখে মোস্তফা কিছুতেই যেতে রাজী হলেন না। কিন্তু নূর মোহাম্মদের নির্মম আদেশের কাছে তিনি হার মানলেন। ‘নান্নু মিয়াকে কাঁধে তুলে নাও, এই নাও এলএমজি। তোমার এসএলআরটা আমাকে দাও। এটা তোমার উপরওয়ালার হুকুম। তুমি সিপাহী, তোমার ল্যান্স নায়েকের হুকুম না মানলে তোমার কোর্টমার্শাল হবে। আমার দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখো, যেভাবে জখম হয়েছি তাতে আমি আর বাঁচবো না। যেভাবে রক্তপাত হচ্ছে, তাতে এখনই আমার সারা শরীর ঝিমঝিম করছে, চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। আমাকেসহ নিতে গেলে তোমরা দু’জনও মারা পড়বে। তিনজন মারা যাবার চেয়ে দু’জন বেঁচে থাকা ভালো নয় কি ? নান্নু মিয়ার জখম গুরুতর নয়, ও বেঁচে যাবে। কিন্তু আমি যে বাঁচবো না।
নূর মোহাম্মদ আহত অবস্থায় এলএমজিটা সাথে না নিয়ে স্টেনগানটা নিলেন। তিনি জীবনের শেষ মুহূর্তটি পর্যন্ত অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আহত অবস্থায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে তাঁর শরীর অবশ হয়ে আসলেও শত্রুদের ব্যাতিব্যস্ত রাখার জন্য গাছের গুঁড়িতে হেলান দিয়ে অবিরাম গতিতে গুলি করেই চলেছেন, যাতে শত্রুরা মোস্তফা ও নান্নুর দিকে মনোযোগ দিতে না পারে। অবিরাম রক্তক্ষরণে শরীর নিস্তেজ হয়ে আসতে থাকলেও সৈনিক জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি কর্তব্যবোধ থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্যুত হননি।
১৯৮৪ সালে তৎকালীন সরকার বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের বিধবা স্ত্রী ও ছেলে মেয়েদের জন্য যশোর শহরে এবং নড়াইল শহরে পাকা বাড়ী তৈরী করে দেন। এছাড়া যেখানে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শহীদ হয়েছিলেন সেইখানে সরকার একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেছে।
মোঃ ফাজেল মোল্লাঃ
জেলার পেড়লী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দানবীর হিসেবে কিংবদন্তি। সমাজসেবা, শিক্ষা বিস্তারে তার ভূমিকা ছিল অতুলনীয়। প্রথম মহাযুদ্ধের পর ১৯২০ সালের পরে এ অঞ্চলের মুসলমান সমাজ যখন দিন দিন সবক্ষেত্রে অবহেলিত হয়ে পড়েছিল- তখনই তিনি এগিয়ে আসলেন। বর্তমান নড়াইলে যেখানে জেলা পরিষদের অডিটরিয়ম ঐ স্থানে তার প্রচেষ্টায় মুসলমান ছাত্রদের লেখাপড়ার সুবিধার্তে মুসলিম বোর্ডিং নামে একটি আবাসিক হোস্টেল নির্মাণ করে দিয়েছিলেন। সে যুগে নড়াইল শহরে কোথাও গরু জবাই করা যেত না শুধুমাত্র ওখানে ছাড়া। গাজীরহাট হাজী নৈমুদ্দিন উচ্চবিদ্যালয় এবং পেড়লী থেকে ফুলতলা পর্যন্ত রাস্তাসহ আরও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি।
ব্রিগেডিয়ার হাশেম খান (পি,এস,সি):
লোহাগড়া উপজেলার আমাদা গ্রামের প্রসিদ্ধ খান বংশের সন্তান। তিনি ১৯৫৪ সালের ১ জানুয়ারি যশোর শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। মতিঝিল সরকারি হাইস্কুল, নটরডেম কলেজ ও চট্রগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে কৃতিত্বে সাথ পাশ করেন। ১৯৭৬ সালে আগস্ট মাসে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তিনি সেনাবাহিনীর অনেক গুরুত্বপূর্ন পদে দক্ষতার সাথে কাজ করেছেন। তিনি ডি,জি,এফ, আই তে কাজ করেছেন। জাতিসংঘের অধীন সেনাবাহিনী থেকে তিনি কিছুদিন মোজাম্বিক কর্মরত ছিলেন। সরকারি দায়িত্বে তিনি ভারত, চীন যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন। তার স্ত্রী, ২ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে। জনাব হাসেম খানের পিতা খালেক খান ছিলেন ডাক বিভাগের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা। বর্তমান সেনা কল্যাণ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে কর্মরত।
কাতেবুর রহমানঃ
একজন দক্ষ প্রশসনিক কর্মকর্তা। লোহাগড়া উপজেলার তালবাড়িয় গ্রামে তার জন্ম। ছাত্র জীবনে একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম, এ পাশ করার পর ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সিলিভ সার্ভিসে যোগ দেন। সে সময় থেকে সরকারের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। মন্ত্রীর সচিব, জেলা পরিষদের সচিব, জেলা ত্রান কর্মকর্তাসহ চাকরি জীবনে অনেক স্থানে কাজ করেছেন। সাতক্ষীরা, কুমিল্লা ও চট্রগ্রামের জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেছেন। মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক পদে ছিলেন তিনি। বর্তমানে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়ার যুগ্ম সচিবের দায়িত্বে আছেন। সরকারী কাজে তিনি বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন। তার প্রচেষ্টায় জেলার লোহাগড়া উপজেলার ছাত্রীরা হাইস্কুল পর্যায়ে লেখাপড়ার জন্য বৃত্তি পেয়ে আসছিল। তার এই কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ এখানকার একটি সমাজকল্যাণ সংস্থা ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ১৯৮৮ সাল তাকে সৈয়দ নওশের আলী স্মৃতি পদকে ভূষিত করে। তিনি এক জন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা।
ব্রিগেডিয়ার আবু বাকের (অবঃ):
জনাব বাকের (পি.এস.সি) লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সেনা বাহিনীতে থাকাকালীন অনেক গুরুত্বপূর্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। বার্মায় বাংলাদেশ দূতাবাসের মিলিটারী এ্যটাশে পদে দীর্ঘ তিন বছর কর্মরত ছিলেন। ১৯৯৬ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করার পর ঐ বছরেই বাংলাদেশ আওয়ামীলীদের রাজনীতিতে যোগদান করেন।
আব্দুল হাকীম:
কালিয়া থানার টোনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কোলকাতা মাদ্রাসা, সিটি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন। ইংরেজী ভাষা ও সাহিত্যে এম.এ এবং আইন বিষয় ডিগ্রী অর্জন করেন। কোলকাতা হাইকোর্টে আইন-ব্যবসা করেন। অবিভক্ত বাংলার আইন সভার সদস্য ছিলেন। ১৯৫৪ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে যুক্ত ফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে নড়াইল কালিয়া নির্বাচনী এলাকা হতে নির্বাচিত হন এবং প্রাদেশিক আইন সভার স্পীকার নির্বাচিত হন। তিনি একজন প্রখ্যাত পন্ডিত, আইনজীবি, সাংসদ সদস্য ও সাহিত্যিক ছিলেন। ১৯৬৮ সালে তিনি খুলনায় তার বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন।
রায় বাহাদুর যদুনাথ মজুমদারঃ
জেলার লোহাগড়ার বিশিষ্ট সরকার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন যশোর জজকোর্টের প্রখ্যাত আইনজীবি, সমাজসেবক, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও লেখক। লাহোর থেকে প্রকাশিত ‘‘ট্রিবিউন’’ পত্রিকার সম্পাদক, যশোর জেলা বোর্ডের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও যশোর মিউনিসিপ্যালিটির (পৌরসভা) নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। ১৯২০ সালের দিকে তিনি বহু স্বদেশী আন্দোলনের কর্মীকে বিনা পয়সার মামলা পরিচালনা করে কারাগার হতে মুক্ত হতে সহযোগিতা করেন। যশোর সম্মিলনী ইনস্টিটিউশন ও যশোর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। তাঁর বাড়ীতে বর্তমান লোহাগড়া কলেজ অবস্থিত।
সৈয়দ জাফরঃ
লোহাগড়া উপজেলার ধলাইতলা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের ১৯৩২ সালে তাঁর জন্ম। তিনি কৃতিত্বের সাথে ইতনা হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক, খুলনার বি.এল. কলেজ থেকে আই.এ এবং বি.এ পাশ করেন। ৬০ দশক থেকে সাংবাদিকতা শুরু করেন। প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবি বদরুদ্দিন ওমরের অনুপ্রেরনায় তিনি দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় সাব এডিটর হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। এর পর সিনিয়র সাব এডিটর ও সিনিয়ার রির্পোটার হিসাবে দৈনিক আজাদ পত্রিকায় যোগ দেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে কিছুদিন তিনি দৈনিক জনপদে সিনিয়ার স্টাফ রির্পোটার হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিব সরকার যখন চারটি পত্রিকা ছাড়া অন্য সকল পত্রিকা বন্ধ করে দেন তখন তিনি বেকার হয়ে পড়েন। সরকার তাকে উচ্চ পদে সরকার চাকুরি দিলেও তিনি তা গ্রহণ করেন নি। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাষনামলে রাজশাহী থেকে দৈনিক বার্তা নামে একটা প্রথম শ্রেণীর দৈনিকে সিনিয়ার স্টাফ রিপোটার হিসাবে যোগদান করেন। তিনি ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত দুইবার নির্বাচিত বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব ছিলেন। সাংবাদিক প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসাবে তিনি বিশ্বের বহু দেশে সফর করেছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার সফর সঙ্গী বেশ কিছু দেশ ভ্রমণ করেছেন। মজলুম জননেতা মরহুম মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানীর অত্যন্ত বিশ্বস্ত কর্মী ছিলেন তিনি। কমরেড আব্দুল হক, হাজী দানেশ, ত্বোয়াহা, মশিউর রহমান (যাদু মিয়া) প্রমুখ বামপন্থী নেতার সাথেও তার ছিল গভীর সম্পর্ক। সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে তিনি বেশ কয়েকটি সংগঠন থেকে পুরষকৃত হয়েছে। স্ত্রী, ১ ছেলে ও ১ মেয়ের পিতা।
অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ মিঞাঃ
নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মহিশাহ পাড়া গ্রামের এক ধনাঢ্য পরিবারের ১৯২০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ইতনা হাইস্কুল থেকে ১৯৩৫ সালে ম্যাট্রিক পাশ করেন। কৃষ্ণনগর কলেজ ও কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে বি.এ. পাশ করেন এবং এম. এ পাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ছাত্র জীবনে তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। ১৯৫০ সালের দিকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিভাগ খোলার পর তিনি ঐ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হন। ঐ পদে প্রায় ৫ বছর কর্মরত ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডীন ও স্যার সলিমুল্লাহ ছাত্রাবাসের প্রভোস্ট ছিলেন। দীর্ঘ ৪০ বছর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।
তিনি ছিলেন নড়াইল মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি। তাঁর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে নড়াইল ট্রেজারী ভেঙ্গে মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র লুট করে নেয়। পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যশোর সেনানিবাসসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তিনি বহু সমাজসেবামূলক কাজ করেছেন। লোহাগড়া কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। লোহাগড়ায় তিনি গরীব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে শিক্ষা ট্রাস্ট গঠন করেন। পরবর্তীতে শিক্ষাট্রাস্টটি ‘‘নূরমোহাম্মদ শিক্ষাট্রাস্ট’’ নামে নামকরণ করা হয়। নড়াইল জেলায় বিশেষ করে লোহাগড়া উপজেলার বহু লোককে চাকরির ব্যবস্থা করেছেন। তিনি ছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও জননেতা শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট বন্ধু। কোলকাতায় ছাত্র থাকাকালীন তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা এক ফজলুল হক, নেতাজী সুবাস বসু সহ অনেক খ্যাতিমান ব্যক্তির সান্নিধ্যে আসেন। বিশ্বের বহু দেশে সরকারী ও বেসরকারীভাবে তিনি সফর করেছেন। বেশ কয়েকটি গ্রন্থের রচয়িতা তিনি। তিন ছেলে ও দুই মেয়ের পিতা তিনি। ছেলেরা যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ পদে কর্মরত আছে।
মুন্সী ওলিয়ার রহমানঃ
নড়াইলের মির্জাপুর গ্রামে জন্ম। তিনি যশোর জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং বঙ্গীয় আইন সভার সদস্য ছিলেন। পেশার তিনি ছিলেন আইনজীবী। ১৯৬০ সাল তিনি নড়াইলে তার নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন। তাঁর তিন ছেলে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা।
মুন্সী সিরাজউদ্দীন আহমেদঃ
মুন্সী সিরাজউদ্দীন আহমেদ কালিয়া উপজেলার ইসলামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বৃটিশ ভারতের মুসলমানরা যখন শিক্ষা দীক্ষায় ছিল পশ্চাৎপদ তখন মুন্সী সিরাজউদ্দীন আহমদ আধুনিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি ভারতবর্ষের বহু এলাকা সফর করেছেন। হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ মাউলী ইউনিয়নের জনগণ এলাকার একমাত্র শিক্ষিত ব্যক্তি হিসেবে তাঁকে নড়াইল থেকে ধরে এনে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেন। অমায়িক ব্যবহারের অধিকারী মুন্সী সিরাজউদ্দীন আহমেদ। শেষ জীবনে নড়াইলে তাঁর নিজ বাস ভবনে বসবাস করেন এবং ১৯৮৮ সালে ইন্তেকাল করেন।
আব্দুল্লাহ হারুন পাশাঃ
নড়াইল জেলার কালিয়া থানার টোনা গ্রামে ১৯৪৩ সালের ২ এপ্রিল তাঁর জন্ম। পিতা একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ছিলেন। ১৯৬৬ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস (সি.এস.পি.) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। বিভিন্ন সময় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে কাজ করেন। রাষ্ট্রীয় কাজে আমেরিকা, কানাডা, বৃটেন, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, শ্রীলংকা, ভারত, নিউজিল্যান্ড পাকিস্তানসহ বহু দেশ সফর করেন। বন ও পরিবেশ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ছাড়া ও তিনি সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সচিব ও সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব পদে দায়িত্বপালন করেছেন। বর্তমানে অবসর জীবনযাপন করছেন।
ড. এনায়েত হোসেনঃ
নড়াইল জেলার ইতনা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম। ছাত্রজীবন থেকে একজন মেধাবী ছাত্র হিসেবে এলাকায় পরিচিত। বর্তমানে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বেশ কয়েকটি বই রচনা করেছেন।
মুন্সী হাসনুল ইকবালঃ
আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত প্রগতিশীল ধ্যান ধারণায় বিশ্বাসী হাসনুল ইকবালের জন্ম কালিয়া উপজেলার ইসলামপুর গ্রামে। নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে এইচ.এস.সি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ডিগ্রি লাভ করেন। তৎকালীন সময়ে তিনি বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ক্রিড়াবিদ হিসেবে বিবেচিত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন সময়ে তাকে অত্যাধিক বিনয়ী ও ভদ্রতার জন্য হিমাচল নম্র উপাধী দেওয়া হয়েছিল। তিনি পৃথিবীর বহুদেশ ভ্রমণ করেছেন। বাংলাদেশকে বৈদেশিক ঋণমুক্ত করার আন্দোলনে প্রতিক স্বরূপ তিনি মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণের তাঁর অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের সামনে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তিনিই বাংলাদেশের একমাত্র বৈদেশিক ঋণমুক্ত ব্যক্তি। বর্তমানে তিনি ঢাকায় ব্যবসার সাথে জড়িত।
ড. মহেন্দ্রনাথ সরকারঃ
১৮৮২ সালে লোহাগড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। কোলকাতা সংস্কৃত কলেজ, প্রেসিডেন্সী কলেজ ও কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন তিনি। সে যুগে তিনি ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন দার্শনিক।
শেখ দেওয়ানত উল্লাহঃ
জেলার লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গ্রামের অধিবাসী ছিলেন। ফরাসী ভাষায় উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন এবং মুঘল শাসননামলে কাজী (বিচারক) ছিলেন।
হাতেম আলী খানঃ
নড়াইল পৌর এলাকার বরাশুলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পাকিস্তান আমলে পূর্ব পাকিস্তানের সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন। কালনা থেকে বর্তমানে লোহাগড়া লক্ষ্মীপাশা হয়ে যে পাকা সড়ক যশোর গিয়েছে তা ১৯৬৪ সালে হাতেম আলী খানের প্রচেষ্টায় তৈরি হয়েছে। হাতেম আলী উপমহাদেশের বিশিষ্ট জননেতা মরহুম সৈয়দ নওশের আলী সাহেবের জামাতা এবং বামপন্থী নেতা হায়দার আকবর খান রনো’র পিতা। ১৯৯৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর তিনি ঢাকায় ইন্তেকাল করেন।
ডাঃ ফরহাদ পারভেজঃ
জেলার কালিয়া উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামে জন্ম। ছাত্র থাকাকালীন প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। কয়েক বছর বিদেশে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে ঢাকায় একটি ক্লিনিক করে কাজ করছেন। তার স্ত্রী ও একজন চিকিৎসক। জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সাথে স্বক্রিয় জড়িত। নড়াইল-১ আসনে দুবার মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়েছিলেন।
ইঞ্জিনিয়ার এস. এম. মাহমুদুর রহমানঃ
জেলার মংগলহাটা গ্রামের অধিবাসী। বর্তমানে কাশিপুরে বসবাস করেন। প্রসিদ্ধ মুসলিম পরিবারের সন্তান। তার দাদা ছিলেন ইংরেজ আমলে এ অঞ্চলের একজন বিশিষ্ট মাওলানা। বর্তমান তিনি ঢাকায় সেনাকল্যাণ সংস্থায় কর্মরত।
এম.এ. মান্নান মল্লিকঃ
নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুরে জন্ম। বর্তমানে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে কর্মরত।
গৌতম মিত্রঃ
জেলার শোলপুর গ্রামে বর্ধিষ্ণু মিত্র পরিবারে জন্ম। যশোর শিক্ষা বোর্ড থেকে মেধা তালিকায় এস.এস.সি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ পাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের সভাপতি ছিলেন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ছিলেন। ৯০ সালের গণআন্দোলনের দিনগুলিতে তার অগ্রনী ভূমিকা ছিল। কয়েকবার কারাবরনও করেছেন। ১৯৯১ সালে নড়াইল-১ আসন থেকে বিএনপি দলীয় মনোনয়ন পেয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করেছিলেন। বর্তমানে ঢাকায় ব্যবসা বাণিজ্য করেন এবং পাশাপাশি রাজনীতিতেও স্বক্রিয়।
মুন্সী রুহোল কুদ্দুস (বাবলু):
পাচুড়িয়ায় আদিবাস। বর্তমানে লক্ষ্মীপাশায় বসবাস করেন। পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত। জাতিসংঘের অধিনে হাইতিতে পুলিশ বাহিনীর সদস্য হিসাবে বেশ কিছুদিন কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে আছেন।
বি.এম. রেজাউল করিমঃ
জেলার চরমল্লিকপুরে জন্ম। খুলনায় কর্মরত। বাংলাদেশ ক্যাবল ফ্যাক্টরীতে একাধিকবার নির্বাচিত সি.বি.এ. সভাপতি।
নাজমুল আলমঃ
জেলার পাচুড়িয়া গ্রামে জন্ম। বর্তমানে লোহাগড়ায় বসবাস করেন। বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগদান করে বর্তমানে সাব জজ পদে কর্মরত আছেন।
সাজ্জাদুর রহমানঃ
নড়াইলের লক্ষ্মীপাশায় বসবাস করেন। বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগদান করে বর্তমান সাব জজ পদে আছেন।
এস.এম. সরওয়ার রহমানঃ
জেলার লোহাগড়া উপজেলার মহিশাহ পাড়া গ্রামে জন্ম। লোহাগড়া হাইস্কুল, দৌলতপুর কলেজ ও সর্বোশেষ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্সসহ এমএসসি পাশ করেন। ছাত্রাবস্থা থেকে প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। ১৯৭৮ সালে জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল গঠিত হলে তিনি সেই সংঠনের জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জিয়াউর রহমানের সাথে অনেক জনসভায় বক্তৃতা করেছেন। ১৯৮৫ সালে গোয়েন্দা সংস্থা ডি.জি.এফ.আই তে সহকারী পরিচালক পদে যোগদান করেন। দীর্ঘ নয় বছর চাকরি করার পর স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে কিছুদিন একটি সংবাদ সংস্থায় কাজ করেন। ঢাকাস্থ নড়াইল যুব পরিষদ, নড়াইল ফাউন্ডেশন ও বৃহত্তর যশোর জাতীয়তাবাদী ফোরামের সভাপতি। যুক্তরাজ্য, ভারত সহ অনেক দেশ সফর করেছেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা তিনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় কালনা ও ভাটিয়াপাড়া যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন। বর্তমানে জাতীয়তাবাদী দলের একজন সক্রিয় নেতা।
মুন্সী আসাদুজ্জামানঃ
লোহাগড়া উপজেলার শরশুনা গ্রামের সন্তান। সত্তরহাজারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৪৬ সালে বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য পদে নির্বাচন করেন।
মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান শামীমঃ
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার ইসলামপুর গ্রামে ১৯৭২সালে জন্ম। তিনি নড়াইল জেলা স্কুল থেকে লেখাপড়া শেষ করে খুলনা বিএল কলেজ থেকে এম.এস.এস. ডিগ্রি লাভ করেন। ছাত্রজীবেনে তিনি ইসলামী ধরার ছাত্র আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি জেলা পর্যায়ে ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। বর্তমানে তিনি ঢাকায় কম্পিউটার ব্যবসার সাথে জড়িত।
আঃ মালেকঃ
লোহাগড়া উপজেলার ডিক্রিরচর গ্রামের সন্তান। তে-ভাগা আন্দোলন ও কংগ্রেসের একজন নেতা ছিলেন। তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত উকিল ছিলেন।
নূরউদ্দিন সরদারঃ
ইতনা গ্রামের সন্তান। বৃটিশ আমলে ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট ছিলেন। তার পুত্র আলতাব উদ্দিন লেহাগড়া কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
সদর উদ্দিনঃ
লোহাগড়া উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের বাহিরপাড়া গ্রামের সন্তান। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান ছিলেন। বর্তমানে অবসরে আছেন। একজন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা।
লেঃ মতিউর রহমানঃ
লোহাগড়া থানার মাকড়াইল গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। অল্প বয়সে ক্যান্সারে মারা যান। তিনি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামী ছিলেন। ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি টি.সি.বি. ও ভোগ্য পণ্য সংস্থার চেয়ারম্যান ছিলেন।
আলতাফ হোসেন সিকদারঃ
নড়াইল সদর উপজেলার বোড়ামারা গ্রামের সন্তান। প্রথম জীবনে চাকরি করেন। তিনি ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৬৬ সালে মুসলিম লীগের মনোনয়নে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
খন্দকার আব্দুল হাফিজঃ
মির্জাপুর গ্রামের সন্তান। ছাত্র জীবনে বি.এল কলেজে ভি.পি নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ১৯৭০ সালে ও ১৯৭৩ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে নড়াইলের গভর্নর মনোনীত হন।
এখলাছ উদ্দিন আহমদঃ
অকুতভয় সাহসী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী নেতা। কালিয়া উপজেলার বেন্দার চর গ্রামে জন্ম। ১৯৭৩ সালে সাংসদ নির্বাচিত হন। তিনি কালিয়া পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হন। ১৯৮৫ সালে তাকে পুত্র সহ গুলি করে হত্যা করা হয়।
মোল্লা মকবুল হোসেনঃ
লেহাগড়া উপজেলার মরিচ পাশা গ্রামে জন্ম। বি.এন.পি মনোনীত ১৯৭৯ সালে সাংসদ সদস্য ছিলেন। প্রথম দিকে বাম রাজনীতিক ছিলেন। স্থানীয় পাবলিক লাইব্রেরী, লোহাগড়া কলেজ এবং স্কুলে তার অনেক অবদান রয়েছে।
শরীফ খসরুজ্জামানঃ
লোহাগড়া উপজেলার বাবরা গ্রামে জন্ম। বিশিষ্ট শরীফ পরিবারের সন্তান। বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুজিব বাহিনীর কমান্ডার হয়ে এলাকায় আসেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়নে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
ধীরেন্দ্রনাথ সাহাঃ
কালিয়া থানার বারই পাড়া গ্রামের সন্তান। আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে ২বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী।
শরীফ নূরুল আম্বিয়াঃ
জেলার ভবানীপুর গ্রামে জন্ম। একজন প্রকৌশলী। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ছাত্র লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন। খুব মেধাবী ছাত্র ছিলেন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। জাসদের মনোনয়নে নড়াইল- ১ আসনে ৯১ ও ১৯৯৬ সালে জাতীয় সাংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।
সেখ আসাদঃ
জেলার পাইকমারী গ্রামে জন্ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আশির দশকের প্রথম দিক থেকে লেখাপড়া শেষ করে মুক্তি যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীর সান্নিধ্যে এসে রাজনীতি শুরু করেন। জেনারেল ওসমানীর প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় জনতা পার্টির স্বয়ংক্রিয় একজন নেতা হিসাবে কাজ শুরু করেন। জেনারেল ওসমানীর মৃত্যুর পর জাতীয় জনতা পার্টির একটি অংশের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে ও ১৯৯৬ সালে নড়াইল- ২ আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।
শেখ নওশের আলমঃ
জেলার ইতনা গ্রামে জন্ম। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সময়ে কর্মকর্তা ছিলেন। বর্তমানে ঢাকায় শিপিংয়ের ব্যবসার সাথে জড়িত।
সরদার ফিরোজ আহমেদঃ
জেলার ইতনা গ্রামের সন্তান। আশির দশকের গোড়ার দিকে উত্তরা ব্যাংক কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) বিশিষ্ট নেতা ছিলেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারের সময় সারাদেশে ব্যাংক কর্মচারীদের আন্দোলনের সময় তিনি চাকরিচ্যুত হন। পরবর্তীতে তিনি চাকরি পেয়েও যোগদান করেননি। বর্তমানে ঢাকায় একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। ইতনা হাইস্কুলসহ অনেক সামাজিক সংস্থার সাথে জড়িত।
মাহফুজুর রহমান (লুলু):
লোর ইতনা গ্রামে জন্ম। ছাত্রাবস্থায় একজন প্রতিবাদী ছাত্রনেতা ছিলেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় তিনি মুজিব বাহিনীর একজন কমান্ডার ছিলেন। বর্তমানে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক পদে কর্মরত।
অ্যাডভোকেট এ. কে. এম. ফরিদুজ্জামান ফরহাদঃ
জেলার লোহাগড়া উপজেলার করফা গ্রামে জন্ম। বর্তমান লোহাগড়ার অধিবাসী। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি। ঢাকাস্থ যশোর সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকসহ অনেক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মকান্ডের সাথে জড়িত।
অধ্যাপক রেজাউল হকঃ
জেলার মংগলহাটা গ্রামে জন্ম। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (শিক্ষা) পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়ে সরকারী কলেজে শিক্ষকতায় যোগ দেন। বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ভূগোল বিভাগে অধ্যাপনা করছেন।
হেমন্ত সরকারঃ
প্রখ্যাত কমিউনিস্ট ও তে-ভাগা আন্দোলনের নেতা। নড়াইল সদর উপজেলার বড়েন্দা গ্রামের সন্তান। বহু বছর আত্মগোপন করে থেকে কমিউনিস্ট রাজনৈতিক মতাদর্শ চর্চা করেছেন। ১৯৯৮ সালে নড়াইলে মৃত্যুবরন করেন।
রসিক লাল ঘোষঃ
তে-ভাগা ও কৃষক আন্দোলন এবং বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের বিশিষ্ট নেতা। পাকিস্তান আমলে ২০ বছর কারা ভোগ করেছেন। গত ১৯৯৮ সালে ৮৩ বছর বয়সে নড়াইলে মারা যান।
বিমল বিশ্বাসঃ
বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক। স্বাধীনতার পর কয়েক বছর কারা ভোগ করেছেন। জেলার সদর থানার গোবরা গ্রামে জন্ম তার জন্ম।
হায়দার আকবর খান রণোঃ
ছোটবেলা হতে ঢাকা শহরে বেড়ে উঠা। পিতা ও মাতার বাড়ি নড়াইল। ষাটের দশকের মাঝামাঝির দিকে তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট ছাত্র নেতা। খুব মেধাবী ছাত্র ছিলেন। বামপন্থী রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় পলিটব্যুরোর সদস্য। রাজনৈতিক কারনে মাঝে মধ্যে নড়াইল সফরে আসেন। তার স্ত্রী হাজেরা সুলতানাও একজন বিশিষ্ট বামপন্থী মহিলা নেত্রী। প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ও সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ নওশের আলীর নাতি তিনি।
এম,জি,হাফিজঃ
ব্যারিস্টার এম, জি, হাফিজ জেলার কালিয়া উপজেলার পীরওলিস্তান গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। বাল্যকালে পিতাকে হারিয়ে কঠোর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে লেখাপড়া করেন। যা কিংবদন্তীতুল্য। তিনি গাজীরহাট হাজী নৈমুদ্দিন হাইস্কুল ও ভিক্টোরিয়া কলেজে লেখাপড়া শেষ করে করাচী চলে যান এবং স্নাতক ও ল-ডিগ্রী অর্জন করেন। তারপর ইংল্যান্ডে চলে যান এবং ব্যারেস্টারী পাশ করে সেখানেই আইন ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে লন্ডন প্রবাসী এম.জি হাফিজ প্রবাসে থেকেও দেশের কথা ভুলে যাননি। মানুষের সাথে মিশে তাদের সুখ-দুঃখের শরীক হন। অর্থ সম্পদ দান করে তিনি লোকজনের অভাব অনটন দুর করতে এবং নৈমিত্তিক প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করেন। এলাকায় দানশীলতার জন্য তিনি ব্যাপক পরিচিতি ও সুখ্যাতি লাভ করেছেন।
ফরিদ-উদ-দাহারঃ
প্রখ্যাত কমিউনিস্ট নেতা। ইংরেজী ভাষা ও সাহিত্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে পত্র-পত্রিকায় লেখা লেখি করতেন। বহুবার কারাবন্দী হন। ১৯৭৬ সালে মারা যান। নড়াইল শহরে বাড়ী।
ডাঃ সাইফুদ্দাহারঃ
বিশিষ্ট কমিউনিস্ট নেতা ফরিদউদ্দাহারের ভাই ডাঃ সাইফুদ্দাহার। তিনি একজন প্রখ্যাত সমাজবাদী, অর্থনীতির প্রবক্তা এবং একজন প্রখ্যাত লেখক। ১৯৯৬ সালে ঢাকায় মারা যান। তার মৃত্যুতে দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ জানাজায় উপস্থিত ছিলেন।
সাইফ ফাতেউর রহমানঃ
নড়াইলে জন্ম। নড়াইল শহরের বিশিষ্ট আইনজীবি ও সাবেক সংসদ সদস্য সাইফ হাফিজুর রহমানের ভাই। দেশের একজন বিশিষ্ট কৃষি বিজ্ঞানী। তার কয়েকখানা মৌলিক গ্রন্থ রয়েছে।
উলফা আরা আয়েশা খানমঃ
নড়াইল শহরে জন্ম। গ্রামের বাড়ী জেলার শরশুনা গ্রামে। ১৯৯৮ সালে জাতীয় পার্টি থেকে মহিলা আসনে জাতীয় সংসদ সদস্যা নির্বাচিত হন। বর্তমানে একজন আইনজীবি।
এডভোকেট শেখ হাফিজুর রহমানঃ
জেলার লোহাগড়া উপজেলার কুমড়ী গ্রামে জন্ম। বর্তমানে লক্ষ্মীপাশায় বাস করেন। ছাত্র অবস্থায় প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলে জড়িয়ে পড়েন। স্বাধীনতার পর লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সবসময় তিনি কৃষকের স্বার্থে আন্দোলন করেন। ১৯৯০ সালে লোহাগড়ায় স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তিনি অগ্রনী ভূমিকা পালন করেন। স্বল্পকালীন সময়ে তিনি লক্ষ্মীপাশা ও কাশিপুরে ভূমিহীন আন্দোলন শুরু করেছিলেন। বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক দলের জেলা কমিটির সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সৈয়দ গোলাম মোস্তফাঃ
জেলার লোহগাড়া উপজেলার নওয়াগ্রামে জন্ম। একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের একজন বিশিষ্ট আইনজীবি।
সায়েদ আলী খানঃ
কালিয়া উপজেলার মুলশ্রী গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি শেখ মুজিবের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। ১৯৯২ সালের জুলাই মাসে মারা যান।
আবুল বাশার শিকদারঃ
কালিয়া উপজেলার মুলশ্রী গ্রামে জন্ম। ১৯৭৯ সালে বিএনপির মনোনয়নে নড়াইল-১ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
কাজী গোলাম মোস্তফাঃ
নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গ্রামে জন্ম। একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। বর্তমানে শুল্ক বিভাগের সহকারী কালেক্টর পদে অধিষ্ঠিত। তিনি একজন শিক্ষানুরাগী ও সমাজ সেবক। ইতনা কলেজ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে তার ভূমিকা যথেষ্ট এবং উক্ত কলেজে নানা ধরনের সহযোগিতা করে আসছেন।
মুন্সি মোজাহার উদ্দিনঃ
মুন্সি মোজাহার উদ্দিন কালিয়া উপজেলার টোনা গ্রামের বিখ্যাত মুন্সি পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি নড়াইলের তে-ভাগা আন্দোলনের উপর মূল্যবান গান রচনা করেন।
অ্যাডভোকেট ওমর ফারুকঃ
জেলার লক্ষ্মীপাশা গ্রামের অধিবাসী। ছাত্র থাকাকালীন প্রগতিশীল রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) এর তিনি একজন বিশিষ্ট নেতা হিসাবে জেলায় রাজনীতি শুরু করেন। বর্তমান বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনি একজন আইনজীবি।
মমিনুর রহমানঃ
লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের সন্তান। অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত দায়রা জজ। তার রচিত বেশ কিছু গ্রন্থ রয়েছে। বর্তমান তিনি যশোর শহরে বসবাস করেন।
মোদাচ্ছের মুন্সিঃ
নড়াইল জেলার চাঁদপুর গ্রামে জন্ম। নড়াইলের তে-ভাগা আন্দোলনের অন্যতম নেতা। কৃষক নেতা হিসেবে মাওলনা ভাসানীর বিশেষ সহচার্য লাভ করেন।
ডাঃ এম এ ওহাবঃ
নড়াইলের মাছিমদিয়ার সন্তান। একজন বিশিষ্ট শৈল্য চিকিৎসক, পিজি হাসপাতালের অধ্যাপক। লন্ডন থেকে চিকিৎসা শাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন। গ্রামে পিতার নামে একটি হাসপাতাল করেন।
মোঃ আবুতালেবঃ
কালিয়া উপজেলার পেড়লী গ্রামে জন্ম। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। বি. সি. এস পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে কর্মজীবন শুরু করেন। চাকরি সূত্রে বিশ্বের বহু দেশ সফর করেছেন। বর্তমানে উক্ত বিভাগের উপ-পরিচালক পদে অধিষ্ঠিত আছেন।
আব্দুস সালাম মোল্যাঃ
কালিয়া উপজেলায় জন্ম। বিশ্ববিখ্যাত নৃত্য শিল্পী উদয় শংকরের একজন সহকারী ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি বিশিষ্ট নৃত্য শিল্পী হিসেবে বিদেশ সফর করেন। বর্তমানে তাকে লক্ষ্মীপাশায় অ্যাডভোকেট সেখ হাফিজুর রহমানের বাড়ীতে মাঝে মাধ্যে আসতে দেখা যায়।
দেওয়ান হাফিজুর রহমানঃ
লোহাগাড়া উপজেলার আড়িয়ারা গ্রামের প্রসিদ্ধ দেওয়ান (ফকির) পরিবারে জন্ম। বর্তমানে লোহাগড়ার পোদ্দার পাড়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। জয়পুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সমাজসেবক। একটি গ্রন্থেরও লেখক।
মনিরুল ইসলাম (পিকুল):
লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুরে জন্ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে বিসিএস প্রশাসক সার্ভিসে যোগদান করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সরকারের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি করেছেন। বর্তমানে সচিবালয়ে কর্মরত।
পবিত্র কুমার সাহাঃ
লোহাগড়া কলেজ পাড়ার বাসিন্দা। যশোরের নওয়াপাড়ায় একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক। নওয়াপাড়া পাইলট হাইস্কুলের কার্যনির্বাহী পরিষদের সম্পাদক।
বাসুদেব ব্যাসার্জিঃ
ইতনা গ্রামের প্রসিদ্ধ উচ্চ বর্ণের হিন্দু পরিবারে জন্ম। অল্প বয়সে চট্টগ্রাম গিয়ে ব্যবসা শুরু করেন এবং কিছুদিনের মধ্যে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠিত হন। এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ গরীব দুঃখীদেরকে সাহায্য করেন।
ডঃ সামা সাঈদঃ
লোহগাড়া উপজেলার শরশুনা গ্রামের অধিবাসী। বর্তমানে নড়াইল শহরে স্থায়ী বাসিন্দা। কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শরৎ সাহিত্যের উপর গবেষণা করে পি.এইচ.ডি ডিগ্রী অর্জন করেন।
আফরোজা পারভীনঃ
নড়াইল শহরে জন্ম। একজন বিশিষ্ট লেখিকা। বর্তমান সরকারের একজন কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত আছেন।
ডাঃ শরীফ আনোয়ার হোসেনঃ
জেলার লোহাগড়া উপজেলার পাচুড়িয়া গ্রামে জন্ম। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একজন চিকিৎসক। লন্ডনে বসবাস করেন। প্রতিবছর গ্রামের বাড়ী এসে মাসব্যাপী দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত রোগীদের স্বল্প ফী-তে চিকিৎসা করেন।
এম. আকতার হোসেনঃ
লোহাগড়া উপজেলার মঙ্গলহাটা গ্রামের সন্তান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক।
সৈয়দ মোঃ ফরহাদ আলীঃ
নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার করফা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি আজীবন সাহিত্যসেবী ও শিক্ষক ছিলেন। চল্লিশ ও তিরিশ দশকে তার বহু কবিতা আনন্দবাজার, যুগান্তর, বসুমতি ও আজাদ পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশ হতো।
ডঃ রথীন্দ্রনাথ বোসঃ
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। সদর উপজেলার কমলাপুর গ্রামের সন্তান তিনি।
ডঃ শরীফ নূরুল আহকামঃ
সদর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের সন্তান। যুক্তরাষ্ট্রের পিটার্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক। রাজনীতিবিদ শরীফ নূরুল আম্বিয়ার ভাই।
ডঃ আব্দুর রহমানঃ
সদর উপজেলার কামালপ্রতাপ গ্রামের সন্তান। অষ্ট্রেলিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক।
স.ম. আনোয়ারুজ্জামানঃ
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। লোহাগড়া উপজেলার এগারনলী গ্রামের সন্তান। এক সময়ে লোহাগড়া কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। এর আগে লোহগড়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন মুজিবনগর শিক্ষক সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন।
মোঃ ওয়াহিদুর রহমানঃ
জন্ম ইতনা গ্রামে। লোহাগড়া কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। তিনি বিশিষ্ট সমাজসেবী ও শিক্ষাবিদ।
কাজী আঃ ওহাবঃ
ইতনার সন্তান। সুপ্রিম কোর্টে আইন ব্যবসা করেন। কিছু দিন তিনি ডেপুটি এ্যাটার্নি জেনারেল ছিলেন।
এম. সাইদুজ্জামানঃ
জেলার মংগলহাটা গ্রামে জন্ম। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন যুগ্ম সচিব পদে কর্মরত।
এ.এফ.পি মহিউদ্দিনঃ
একজন দক্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা। দেশে এবং বিদেশে সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। বর্তমানে চীনের রাজধানী বেইজিং এ কর্মরত আছেন। লোহাগড়া উপজেলায় মংগলহাটা গ্রামে পৈত্রিক নিবাস, কিন্তু ছেলে বেলা কেটেছে ইতনা গ্রামে। তার পিতা মমতাজ উদ্দিন ছিলেন তিরিশ দশকের দিকে একজন শিক্ষিত ব্যক্তি। গ্রামের মানুষকে লেখাপড়ায় উদ্বুদ্ধ করা ও গ্রাম্য দলাদলি থেকে বিরত রাখতে কাজ করতেন তিনি।
শৈলেন চন্দ্র নাথ সাহাঃ
নড়াইলের গোবরা গ্রামে জন্ম। একজন প্রকৌশলী। ঢাকায় অনেক সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত।
শৈলেন চক্রবর্তীঃ
জেলার বাতাসী গ্রামে জন্ম। ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন) এ চাকরিতে যোগদান করার পর থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে শ্রম মন্ত্রণালয়ে কর্মরত।
তথ্য সূত্র :
নড়াইল জেলার অতীত ও বর্তমান
লেখক : আকরামুজ্জামান মিলু
সম্পাদনা :
মো: হাসানূজ্জামান বিপুল