
Home দৃষ্টিপাত (Visibility) > অস্তিত্বের সংগ্রামে কেশবপুরের হনুমান
এই পৃষ্ঠাটি মোট 17241 বার পড়া হয়েছে
দেশের অন্য কোথাও খুব একটা দেখা না গেলেও যশোরের কেশবপুরে প্রায় ৪০০ হনুমান বাস করে। কেশবপুরের ভবঘুরে প্রজাতির কালোমুখী হনুমান বাঙালিদের কাছে নতুন করে পরিচয় করে দেবার মত কিছু নয়। জাতীয় ইলেট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার কল্যাণে এই হনুমান কাহিনী ইতোমধ্যে দেশের মানুষ জেনে গেছে। এমনকি এসব হনুমানের কথা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে গেছে। বর্তমানে শ্রীরামচন্দ্রের ঘনিষ্ঠ অনুচর এককালের ‘গ্রেট মাঙ্কি’ বলে খ্যাত লংকা বিজয়ী বীর হনুমান কালের আবর্তে আজ বিলুপ্ত হতে চলেছে। প্রজাতি বিলুপ্তির ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে বাংলাদেশ থেকে ৩০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আরও ১৮টি প্রজাতি বিলুপ্ত হতে চলেছে।
গত কয়েকশ’ বছর যাবৎ কেশবপুর সদর ও পার্শ্ববতী এলাকার ১০-১৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিরল প্রজাতির এই হনুমান বসবাস করছে। বেসরকারি সংস্থা পিসের হিসেব মতে, বর্তমানে ওই এলাকায় প্রায় ৪০০ হনুমান রয়েছে। কেশবপুর বাজারের সাহাপাড়া, পশু হাসপাতাল, উপজেলা অফিস, শ্রীগঞ্জ বাজার, ব্রহ্মকাঠি, রামচন্দ্রপুর প্রভৃতি এলাকা হনুমানদের বিচরণক্ষেত্র। কিন্তু আশ্রয়, খাদ্য সংকট, প্রতিকূল আবহাওয়া ও বৈরী পরিবেশের শিকার হয়ে বিলুপ্তির চরম শিখরে চলে এসেছে এরা। অথচ নিকট অতীতেও এই হনুমানগুলো বাংলাদেশের জীববৈচিত্রের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হতো।
বিবর্তন :
নৃ-তত্ত্ববিদদের মতে প্রায় ৪ কোটি বছর আগে হনুমান প্রজাতির জন্ম। জন্মলগ্ন থেকে তারা নানা ঘাত প্রতিঘাত অতিক্রম করে বংশ পরস্পরায় পৃথিবীতে টিকে আছে। আচার-আচরণ ও বুদ্ধিমত্তায় প্রাণীকূলের অনেক প্রজাতির তুলনায় এরা উন্নত। আমাদের বাংলাদেশে এদের ৮টি প্রজাতি বিপদজনক অবস্থা অতিক্রম করছে। প্রজাতিগুলো হচ্ছে বানর, লজ্জাবতী বানর, উল্টোলেজী বানর, লজ্জাবতী বানর, কালোমুখো হনুমান বা ভবঘুরে হনুমান, মুখপোড়া বা লাল হনুমান, কালোমুখো হনুমান ও উল্লুক। পৃথিবীর একমাত্র বাংলাদেশের কেশবপুরে এবং ভারতের নদীয়া জেলাতে এ কালোমুখ ভবঘুরে হনুমান বসবাস করে।
সংগ্রামী জীবন :
৩০/৪০ বছর আগে প্রায় ৫ সহস্রাধিক হনুমান কেশবপুরের গ্রামাঞ্চলে গাছে, ডালে, জঙ্গলে নির্ভয়ে চলাচল করতো। কিন্তু এই সংখ্যা এখন ৪/৫ শ’তে নেমে এসেছে। বিলুপ্তির এ হার অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ থেকে এই প্রজাতি অদূর ভবিষ্যতে হারিয়ে যাবে। জানা যায়, কেশবপুরের এই কালোমুখো বা ভবঘুরে হনুমানগুলো মূলত তীব্র খাদ্যাভাবে অস্তিত্বের সংকটে রয়েছে। বেশ কিছুদিন থেকে এখানকার হনুমানগুলো দেশান্তরী হতে শুরু করেছে। হনুমান এক সময় যে পরিবেশে বাস করত, বংশ বৃদ্ধির প্রক্রিয়া চালাত তা এখন আর অবশিষ্ট নেই। তাই এই হনুমান খাদ্যের অভাবে জীবন বাঁচানোর তাগিদে দেশান্তরী হচ্ছে। এক সময় কালোমুখী হনুমানগুলোর জন্য এ অঞ্চলে প্রচুর ফলজ ও বনজ বৃক্ষ ছিল। প্রজননকালীন সময় এবং গর্ভকালীন আশ্রয়ের জন্য প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি প্রাচীন সমবটবৃক্ষে পরিপূর্ণ ছিল এ এলাকা। বর্তমানে মানুষের অপরিণাদর্শী কর্মকান্ডে হনুমানকুল আশ্রয়হীন ও বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এতে বংশ বিস্তার হ্রাস পেতে পেতে হনুমানের সংখ্যা হাতে গোনার পর্যায়ে চলে এসেছে।
জীবনযাপন ও আচার-আচরণ :
প্রজাতিগত দিক দিয়ে হনুমানের মধ্যে কয়েকটি শ্রেণী রয়েছে। এই প্রজাতি আদিম যুগ থেকে মনুষ্য জীবনধারার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এদের আচার-আচরণ খাদ্যাভ্যাস, যৌন মিলন, সন্তান জন্ম সবই মনুষ্য জীবনের ভিত্তির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু পরিবেশগত কারণে এরা আজ দুর্গম জঙ্গলের বাইরে এসে অসহায় জীবনযাপন করছে। মহাভারতের রামভক্ত কেশবপুরের হনুমানের বর্তমানে নেই খাবার, নেই আশ্রয়, নেই শীত নিবারণের ব্যবস্থা। প্রজনন আর গর্ভকালীন নিরাপত্তার জন্য নেই প্রয়োজনীয় বনাঞ্চল। মোট কথা, তাদের নানা সমস্য প্রকট আকার ধারণ করেছে। এই অবস্থায় এসব হনুমানের বংশ বিস্তার কমতে শুরু করেছে। চাহিদা অনুযায়ী খাবার না পেয়ে তারা ক্রমেই হিংস্র হয়ে উঠছে। ফসলের ক্ষেত বা ফলবাগানে হামলা চালিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
কথা বলতে না পারলেও এসব হনুমানের অনুভূতি শক্তি প্রায় মানুষের কাছাকাছি। তাই কেশবপুরের মানুষের সাথে রয়েছে তাদের সখ্যভাব। তারা মানুষের কাছ থেকে বাদাম কলা ইত্যাদি নিয়ে খায়। এরা মানুষকে বিভিন্নভাবে বিনোদন দেয়। আবার কখনো কখনো মানুষের দ্বারা উত্যক্ত হয়ে হিংস্র হয়ে ওঠে। তারা বিচারের জন্য থানা পুলিশ পর্যন্ত যায়। বিচার না পেলে ফসলের ক্ষেত ও ফলজ গাছের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। এই হনুমান সাধারণত লম্বায় ২৪ ইঞ্চি থেকে ৩০ ইঞ্চি এবং উচ্চতায় ১২ ইঞ্চি থেকে ২০ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই প্রজাতির হনুমান ৫ বছর বয়স থেকে ৬ মাস অন্তর বাচ্চা প্রসব করে। এদের গড় আয়ু ২০-২৫ বছর। শারীরিক ওজন ৫-২৫ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। মুখের ন্যায় হাত ও পায়ের পাতা কালো। চলাফেরা করার সময় এরা লেজ উঁচু করে চলে। তবে গাছে বসলে তারা লেজ ঝুলিয়ে দেয়। কলা, পেঁপে, আম, আমড়া, সফেদা, জাম্বুরা, মূলা, বেগুন ইত্যাদি ফলমূল, শাক-সবজি গাছের মুকুল, কচিপাতা, বাদাম এবং বিস্কুট এদের প্রিয় খাদ্য। কেশবপুর উপজেলা পরিষদের সীমানা দেয়াল, কেশবপুরের পশু হাসপাতাল, রামচন্দ্রপুর, বক্ষকাটি, বালিয়াডাঙ্গা, মধ্যকূল ও ভোগতী গ্রামে এদের বিচরণ বেশি। এরা সাধারণত একজন পুরুষ হনুমানের নেতৃত্বে দলবদ্ধভাবে চলাচল করে। প্রতিটি দলে ১০/১৫ থেকে ৬০/৭০টি হনুমান থাকে। এদের প্রতিটি সদস্য দলপতির নির্দেশ মেনে চলে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দলপতি অন্য কোন পুরুষ সদস্যকে তার দলে সহ্য করে না। যদি কোন পুরুষ হনুমান দলে ডুকে পড়ে এবং দলপতি তা টের পেলে তাকে হত্যা করে। তাই প্রসূতি তার পুরুষ সন্তানটিকে নিয়ে দলপতির নাগালের বাইরে পালিয়ে বেড়ায়, যতদিন না সে দলপতির আক্রমণ প্রতিহত করার ক্ষমতা অর্জন করে। এরা খাদ্য অন্বেষণে সারাদিন চলাফেরা করে। এরা সচরাচর উঁচু গাছপালা পরিবেষ্টিত বনে, গাছের মগডালে নিরাপদ আশ্রয়ে রাত্রিযাপন করে।
নির্মম পরিণতির শিকার :
কেশবপুরে বিরল প্রজাতির কালোমুখো হনুমান (কমন ল্যাংগার) আজ বিলুপ্তির পথে। এদের সংরক্ষণে গৃহীত হচ্ছে না কোন সরকারী উদ্যোগ। প্রকট খাদ্যভাব, অভয়ারণ্যের অভাবে মিলনের অন্তরায় ও প্রজনন ক্ষমতা হ্রাসের কারণে কেশবপুরের হনুমানের সংখ্যা দিন দিন কমছে। এখানকার স্বল্প হনুমান এখন ক্ষুদার তাড়নায় মানুষের ঘরে ঢোকে, দোকান থেকে কলা রুটি নিয়ে দৌড় দেয়, নষ্ট করে সবজি ক্ষেত, এমনকি কলাভর্তি ট্রাকে লাফ দিয়ে উঠে চলে যায় অন্যত্র। খাদ্যাভাবের সুযোগে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যক্তি পাকা কলার মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খেতে দেয়। ভবঘুরে হনুমানেরা এই কলা খেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ে। তখন তারা বস্তাবন্দি করে দেশ-বিদেশে আকাশচুম্বি মূল্যে পাচার করে দেয় এই সব হনুমান। গত কয়েক বছর আগে কীটনাশক ছিটানো আমের মুকুল খেয়ে ৮টি হনুমানের মৃত্যু হয়েছে বলে পশুসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। এ নিয়ে গত প্রায় দু’বছর বিভিন্ন কারণে মারা গেল ১৫টি হনুমান। স্থানীয় পশুসম্পদ বিভাগ মৃত হনুমানের ময়না তদন্ত সম্পন্ন করে। হনুমানের ময়না তদন্তের সময় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিল। অসংখ্য হনুমান অশ্রুস্বজল দৃষ্টিতে ঘিরে ফেলেছিল তাদের দীর্ঘ দিনের সাথীর ময়না তদন্তের দৃশ্য দেখতে। বন বিভাগ সূত্র জানায়, গত বছর জানুয়ারি মাস থেকে এ পর্যন্ত ৪১টি হনুমান বিভিন্ন কারণে মারা গেছে। হনুমান পাচার রোধে ফরেস্টার আবুল বাশার কেশবপুরের একজন হনুমান পাচারকারির বিরুদ্ধে ২০০৫ সালের ৩১ জানুয়ারি স্থানীয় থানায় মামলা দায়ের করলেও হনুমান পাচার রোধ সম্ভব হচ্ছে না।
এনজিও সমাচার :
গত দেড়-দু’বছর ধরে বেসরকারি সংগঠন পিস হনুমানদের জন্য প্রতিদিন ৫০ কেজি খাদ্য (কলা, বেগুন ও রুটি) সরবরাহ করে আসছে। পিসের স্থানীয় কর্মকর্তা মনোরঞ্জন দে জানান, সরবরাহকৃত খাদ্য প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। কেশবপুরের ভবঘুরে হনুমান সংরক্ষণ ও পরিচর্যার জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে পোভার্টি ইলিমিনেশণ অ্যাসিস্ট্যান্স সেন্টার ফর এভরিহোয়্যার (পিস) নামে একটি বেসরকারী সংগঠন দায়িত্ব পায়। আর্থ-সামাজিক প্রতিষ্ঠান ‘পিস’ বিপন্ন এ প্রজাতির অস্তিত্ব রক্ষায় প্রতিদিন সকাল-বিকাল দু’বার কলা, বেগুন, রুটি ও বাদাম খাবারের ব্যবস্থা করলেও অর্থাভাবে তাও প্রায় স্থবির। আবার এসব এনজিও’র বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ রয়েছে। কার্যক্ষেত্রে যারা হনুমান সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি মূলতঃ বাণিজ্যিক। এসব এনজিওর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, বিদেশ থেকে কাড়ি কাড়ি টাকা সাহায্য এনে তা নিজেদের পকেটস্থ করে। এখন সরকারীভাবে বিরল প্রজাতির হনুমানদের রক্ষার জন্য জোর দাবি উঠেছে। বিগত দিনের কয়েকটি সম্মেলনে কেশবপুরের মানুষের প্রত্যাশা ছিল ব্যাপক। তাদের প্রত্যাশা, সরকারীভাবেই সব কিছু করা হোক, কোন এনজিওর হাতে যেন এসব ছেড়ে দেয়া না হয়। তাহলে হনুমান বাঁচবে না, কেশবপুর থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
অভয়ারণ্যের পদক্ষেপ :
বিরল প্রজাতির কালোমুখো হনুমান সংরক্ষণে কেশবপুরের মধ্যকূল গ্রামে ৩৪ বিঘা জমির ওপর অভয়ারণ্য করা হচ্ছে। ২০০৫ সালের ৮ এপ্রিল শুক্রবার কেশবপুরে হনুমান সংরক্ষণে র্যালি পরবর্তী বক্তব্যে বাংলাদেশ স্কাউটস প্রধান সাবেক পরিকল্পনা সচিব এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মিহির কান্তি মজুমদার একথা বলেন। বক্তব্যে স্কাউটসের চেয়ারম্যান ও সাবেক পরিকল্পনা সচিব ফজলুর রহমান বলেন, বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে যাতে হনুমান মারা না যায় তার ব্যবস্থা করা হবে।
শেষ কথা :
এক সময়ের জীব বৈচিত্রের চারণভূমি হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ কালের বিবর্তনে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্তির কাল অতিক্রম করছে। কিন্তু প্রতিটি জীবই বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, একটি প্রজাতির বিলুপ্তি হলে অন্য দশটি প্রজাতি তার নির্ভরশীলতা হারায়। ফলে ঐ প্রজাতিগুলোও বিলুপ্তির পর্যায়ে চলে আসে। তাই কেশবপুরের এই হনুমান প্রজাতি রক্ষায় কাল বিলম্ব না করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া দরকার। তা না হলে এই বিরল প্রজাতিটি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আর এজন্য সরকারের পাশাপাশি আমাদেরও রয়েছে নৈতিক দায়িত্ব।
ফ্ল্যাশ ব্যাক :
বিভিন্ন সময়ে হনুমান পাচার রোধ, খাদ্যাভাব নিরসন এবং অভয়ারণ্যের আশ্বাস সম্বলিত অনেক মিটিং সেমিনার হয়েছে। গত ২০০৪ সালের ৮ জানুয়ারি পোভার্টি ইলিমিনেশন অ্যাসিস্ট্যান্স সেন্টার ফর এভরিহোয়ার (পিস) কেশবপুরে আয়োজন করে ‘বন্যপ্রাণী বাঁচাও, পরিবেশ বাঁচাও’ শীর্ষক এক সেমিনার। অনুষ্ঠানে সাবেক পরিবেশ ও বন মন্ত্রী শাজাহান সিরাজ প্রধান অতিথি এবং সাবেক পরিবেশ ও বন মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। পিসের পক্ষ থেকে বিরল প্রজাতির এই হনুমান সংরক্ষণে অভয়ারণ্য গড়ে তোলাসহ সরকারিভাবে তাদের খাদ্য সরবরাহের দাবি জানানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন পরিবেশ মন্ত্রী হনুমান সংরক্ষণে পরিকল্পিত বনাঞ্চল গড়ে তোলাসহ খাদ্য সরবরাহের জন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হবে বলে জানান। কিন্তু গত কয়েক বছরে এ লক্ষ্যে কিছুই করা হয়নি বলে জানা গেছে।
আইইউসিএন বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. আইনুন নিশাত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. বদরুল আমিন ভূইয়া, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. মফিজুল কবির, কৃষি বিশেষজ্ঞ ড. মোঃ সদরুল আমিন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম গত বছর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মাসুদ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘ন্যাচারাল হেভিটেশন এন্ড কনজারভেশন অব কেশবপুর লেঙ্গুর’ শীর্ষক এক সেমিনারে দ্রুত এই প্রজাতিকে রক্ষা এবং বংশ বৃদ্ধির জন্য কেশবপুর অভয়ারণ্য এবং প্রাকৃতিকভাবে এদের খাদ্যাভাব সৃষ্টির ওপর জ্ঞানগর্ভ উপদেশ দিয়েছিলেন। সেই সাথে হনুমান পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেন। এক সময় হনুমানের অভয়ারণ্য ছিল কেশবপুরে। ৬/৭ হাজারের বেশি হনুমান তাদের অন্যতম খাদ্য কেওড়া ফলের চাহিদা মেটাতো। কিন্তু কালের আবর্তে সে রামও নেই, সে অযোধ্যাও নেই। এক সময়ের নদী বিধৌত সুন্দরবন লাগোয়া এই উপজেলায় নদী সংলগ্ন ছিল বিস্তীর্ণ কেওড়া বন। কিন্তু নদীর নাব্যতা হারানোর সাথে সাথে গাছ গাছালি কেটে নদীর জমি বেদখল হয়ে বনরাজি নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু বিরল কালোমুখ হনুমানের খাদ্যাভাব পূরণ এবং বংশ রক্ষায় কোন সরকারই বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় দুর্লভ এই প্রাণীকূলের অস্তিত্ব আজ বিলীন হতে চলেছে।
তথ্য সূত্র :
প্রথম আলো
১০ই ফেব্রুয়ারী ২০০৫
সংগ্রহ : হাবিব ইবনে মোস্তফা
সম্পাদনা :
মো: হাসানূজ্জামান বিপুল
সিরাজুল ইসলাম
ছবি : ফিরোজ গাজী
মো: হাসানূজ্জামান বিপুল
হাবিব ইবনে মোস্তফা
সর্বশেষ আপডেট :
০১.০৪.২০১১
More Photo and information
# Languora (Hanuman) next door to extinction
http://www.youtube.com/watch?v=ieoL3R9QJbY
# http://www.ntnu.edu/biology/keshabpur-upazila-jessore-district
# http://www.panoramio.com/photo/29439531
# http://www.facebook.com/hanuman.keshabpur
# http://www.mirabilis.ca/archives/001589.html