
Home যশোর জেলা / Jessore District > শার্শা উপজেলা / Sharsha Upazila
এই পৃষ্ঠাটি মোট 99991 বার পড়া হয়েছে
শার্শা উপজেলা / Sharsha Upazila
Sharsha Upazila, Jessore
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস :
ঘন বন-জঙ্গল বেষ্টিত দস্যুদের এলাকা ছিল শার্শা। এক সময় এখানকার জঙ্গলে সাত্বিক ঋষীদের আস্তানা ছিল। শার্শার খানবাহাদুর মো: জিন্নাতউল্লাহ ও জনাব আবু জাফর নূরুন্নবী বৃটিশ ও পাকিস্তান কালপর্বে এলাকার উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব। আজকের শার্শা থানাসদর এলাকা ছিল পথচারীদের জন্যে ভীতিপ্রদ। দলবদ্ধ না হয়ে পথচারীরা যেতে পারতো না। ডাকাত ও লস্করের ভয়ে পথচারীরা গোপনে মূল্যবান দ্রব্যাদি বহন

ভৌগোলিক অবস্থান :
৩৩৬.৩৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট শার্শা উপজেলা উত্তরে ভারতের পশ্চিম বঙ্গ এবং চৌগাছা উপজেলা, দক্ষিণে কলারোয়া উপজেলা, পূর্বে ঝিকরগাছা উপজেলা এবং পশ্চিমে ভারতের পশ্চিম বঙ্গ দ্বারা বেষ্ঠিত।
শহরের আয়তন ও জনসংখ্যা :
শার্শা শহর একটি মৌজা নিয়ে গঠিত। শহরের আয়তন ৩.০৮ বর্গ কিলোমিটার।
শহরের জনসংখ্যা ৩৫০০ প্রায়। এর মধ্যে পুরুষ ৫৪.১৯% এবং মহিলা ৪৫.৮১%। শহরের অধিবাসীদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৫২.৬%। শহরে একটি ডাকবাংলা রয়েছে।
নদ-নদী ও বিল :
প্রধান নদীসমূহ হচ্ছে বেতুয়া, কপোতাক্ষ ও ইছামতী।
উল্লেখযোগ্য বিলের মধ্যে রয়েছে ‘বনমান্দার বিল’।
প্রশাসন :
১৯১০ সালে শার্শা থানা স্থাপিত হয় এবং ৩ জুলাই ১৯৮৩ সালে এটিকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়। ১১টি ইউনিয়ন পরিষদ, ১৩৫ টি মৌজা এবং ১৭২টি গ্রাম নিয়ে এই উপজেলা গঠিত। উপজেলার প্রথম চেয়ারম্যান জনাব মো: আব্দুল মান্নান।
ঐতিহাসিক ঘটনাবলী :
মুক্তিযুদ্ধের সময় বেনাপোল সীমান্তের কাছে কাগজপুকুরে পাক বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে ১২জন মুক্তিযোদ্ধা নিহত হয়। পাক বাহিনী কাছাকাছি তিনটি গ্রাম লুটপাট করে।
গুরুত্বপূর্ণ/দর্শনীয় স্থান :
বেনাপোল স্থল বন্দর ও বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নুর মোহাম্মদ শেখের মাজার।
মুক্তিযুদ্ধের নিদর্শন :
স্মৃতিসৌধ ২টি।
জনসংখ্যা :
উপজেলার মোট জনসংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ ৭০ হাজার। এর মধ্যে পুরুষ ৫১%, নারী ৪৯%, মুসলমান ৯৭.০২%, হিন্দু ২.৮৫% এবং অন্যান্য ০.১৩%।
সাক্ষরতা :
গড় সাক্ষরতা ২৫.৫%। এর মধ্যে পুরুষ ৩২.৬% এবং মহিলা ১৭.৯%।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান :
কলেজ ১টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১০টি, জুনিয়র স্কুল ৫টি, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ৩টি, মাদ্রাসা ৩৭টি, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৯টি এবং বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৩টি।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান :
মসজিদ ১৩৬টি, মন্দির ৭টি এবং গীর্জা ২টি।
সাংস্কৃতিক সংগঠন :
ক্লাব ২৫টি, সিনেমা হল ৩টি, গণগ্রন্থাগার ১টি, গীতি নাট্যদল ৪টি, মহিলা সংগঠন ১টি, খেলার মাঠ ৪৮টি।
স্থানীয়ভাবে প্রকাশিত সংবাদপত্র ও সাময়িকী :
বেনাপোল বার্তা (বিলুপ্ত)
প্রধান পেশা :
কৃষি ৪৫.৩৭%, কৃষি মজুর ২৭.৭৩%, দিনমজুর (মজুরী শ্রমিক) ২.১০%, ব্যবসা বাণিজ্য ১০.১৯%, চাকুরী ২.৮৩%, পরিবহন ২% এবং অন্যান্য ৯.৭৮%।
ভূমির ব্যবহার :
চাষযোগ্য জমি ৩৩৬৩৫.২৬ হেক্টর, পতিত জমি ১৩১.৮৯ হেক্টর, একক ফসল ৪৫%, দ্বিফসল ২০%, ত্রিফসলী জমি ৩৫%, সেচের আওতায় আবাদযোগ্য জমি ৭০%।
ভূমি নিয়ন্ত্রণ :
কৃষকদের মধ্যে ২৪% ভূমিহীন, ৩৫% ক্ষুদ্র, ২৮% মাঝারী এবং ১৩% ধনী। মাথাপিছু জমির পরিমান ০.১৫ হেক্টর।
প্রধান ফসল :
ধান, পাট, গম, তিল, মসীনা ও সরিষা। বিলুপ্ত অথবা প্রায় বিলুপ্ত শস্যের মধ্যে রয়েছে তিন, নীল, মাসকলাই এবং তেউড়া।
প্রধান ফল :
আম, কাঁঠাল, কুল, নারিকেল ও আমড়া।
যাতায়াত ব্যবস্থা :
পাকা সড়ক ৭২ কিলোমিটার, আধা পাকা ১২০ কিলোমিটার, কাঁচা রাস্তা ১২০০ কি: মি:, রেলপথ ৩৫ কি: মি:। ঐতিহ্যগত পরিবহনের মধ্যে রয়েছে পাল্কী (বিলুপ্ত), ঘোড়ার গাড়ী (প্রায় বিলুপ্ত) ও নৌকা।
শিল্প কারখানা :
চিরুনী ও বোতাম কারখানা ১টি, চাল কল ১২১টি, আটার মিল ১৮টি, বরফ কারখানা ৭টি, ইস্পাত কারখানা ৪টি, তুলার কল ৬টি, বিস্কুট কারখানা ২টি এবং ছাপাখানা ৮টি। কুঠির শিল্পের মধ্যে রয়েছে তাঁত, স্বর্ণকার, কর্মকার, কুম্ভকার, কাঠের কাজ এবং ওয়েল্ডিং।
হাট, বাজার ও মেলা :
হাট ও বাজার ১৯টি এবং মেলা ২টি। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাভারণ, বেনাপোল, বাগ আঁচড়া, উলশী ও লক্ষণপুরের হাট।
প্রধান রপ্তানী :
খেজুরের গুড়।
এনজিও তৎপরতা :
তৎপরতা চালাচ্ছে এমন গুরুত্বপূর্ণ এনজিওগুলো হচ্ছে ব্র্যাক, আশা ও মহিলা সংঘ।
স্বাস্থ্য কেন্দ্র :
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১টি এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১১টি।
অন্যান্য তথ্য :
স্থলবন্দর ১টি (বেনাপোল), পুলিশ স্টেশন ২টি (শার্শা থানা ও বেনাপোল পোর্ট থানা), বিওপি ১৩টি, পশু করিডোর ২টি (বাগআঁচড়া, গোড়পাড়া), ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন ১টি, বন বিভাগ ১টি, এতিমখানা ৬ টি, ডাকঘর ৪টি, পরীক্ষামূলক ডাকঘর ১৩টি, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ১টি, প্রেসক্লাব ৩টি, বিদ্যুতায়িত গ্রাম ১৬০টি, সেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ৪২টি, পল্লবী বিদ্যুতায়ন বোর্ড অফিস ১টি, ভূমি রাজস্ব সংক্রান্ত আদর্শ গ্রাম ২টি, আবাসন প্রকল্প ১টি প্রস্তাব প্রেরিত হয়েছে।
তথ্য সূত্র :
বাংলা পিডিয়া ওয়েবসাইট
ও
যশোর ইতিবৃত্ত (মনোরঞ্জন বিশ্বাস)
অনুবাদ :
কামাল নাসের, আরটিভি।
সম্পাদনা :
মো: হাসানূজ্জামান (বিপুল)
সর্বশেষ আপডেট :
নভেম্বর ২০১১