
Home শিক্ষক / Teacher > অধ্যাপক মো: আতিয়ার রহমান / Professor Md. Atiar Rahman (1950)
এই পৃষ্ঠাটি মোট 100094 বার পড়া হয়েছে
অধ্যাপক মো: আতিয়ার রহমান / Professor Md. Atiar Rahman (1950)
অধ্যাপক মো: আতিয়ার রহমান
Professor Md. Atiar Rahman
Home District: Jessore
Professor Md. Atiar Rahman
Home District: Jessore
পারিবারি

যশোরের শিক্ষাঙ্গনে একটি অতি পরিচিত নাম অধ্যাপক মো: আতিয়ার রহমান। তিনি ১ এপ্রিল ১৯৫০ সালে যশোর জেলার সদর উপজেলার রুদ্রপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম মরহুম আলী বকস্ বিশ্বাস। ৪ ভাই ও ৬ বোনের মধ্যে আতিয়ার রহমান দ্বিতীয়।
শিক্ষাজীবন:
শিক্ষাজীবন শুরু হয় যশোর সদর উপজেলার রুদ্রপুর প্রাইমারী স্কুলে। পরবর্তীতে এস. এস. সি যশোর মুসলিম একাডেমি, এইচ. এস. সি. যশোর এম. এম. কলেজ এবং অর্থনীতিতে অনার্স, মাস্টার্স শেষ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে।
পেশাগত জীবন:
জনাব মোঃ আতিয়ার রহমান ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত যশোর সিটি কলেজের শিক্ষক এবং শিক্ষক নেতা ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি কুষ্টিয়া সরকারী কলেজে প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন। ১৬ বছর যাবৎ তিনি এম. এম. কলেজের শিক্ষক এবং ১২ বছর স্টাফ কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক এবং সংযুক্ত ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি যশোর শিক্ষাবোর্ডের উপ-কলেজ পরিদর্শক, বিদ্যালয় পরিদর্শক, ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও টেক্সবুক বোর্ড ঢাকা এর বিশেষজ্ঞ, উৎপাদন নিয়ন্ত্রক এবং সর্বোশেষ ঐ একই প্রতিষ্ঠানে সচিব পদে সুনামের সাথে চাকরি করেছেন। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও টেক্সবুক বোর্ডের সচিব পদে চাকরিরত অবস্থায় ২০০৭ সালে তিনি অবসরে যান। অবসরের পর তিনি ঢাকা আহসানিয়া মিশন কলেজের প্রিন্সিপাল ও পরে ঢাকা আহসানিয়া মিশনের পরিচালক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
নকল প্রতিরোধ ও দূর্নীতি দমনে ভূমিকা:
জনাব মো: আতিয়ার রহমান পরীক্ষায় নকল প্রতিরোধে অসাধারণ ভুমিকা রেখেছেন। সম্ভবত: এদেশের পাবলিক পরীক্ষায় নকল করতে গিয়ে তাঁর হাতেই সবচেয়ে বেশী পরীক্ষার্থী বহিষ্কৃত হয়েছে। এর সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার।
তাঁর নেতৃত্বে গঠিত ভিজিলেখ টিমের কাছে ১৯৮৮ সালে এইচ. এস. সি. পরীক্ষায় নকল করার দায়ে যশোর জেলার কেশবপুর কেন্দ্রে সকল পরীক্ষার্থী এবং ১৯৯৮ সালের ডিগ্রী পরীক্ষায় কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা কেন্দ্রে একদিনে ১৯১ জন পরীক্ষার্থী বহিষ্কৃত হওয়ার উদাহরণ রয়েছে। উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন নিজের ছোট ভাইকে নকলের দায়ে বহিষ্কার করে।
চাকুরীররত অবস্থায় তিনি সর্বক্ষেত্রে দূর্নীতি প্রতিরোধে শক্ত প্রাচীর গড়ে তোলেন। ৭ জুলাই ২০০২ সালে প্রথম আলো পত্রিকার খবর অনুযায়ী টেক্সবুক বোর্ডে তিনি ৯০ লক্ষ টাকার দূর্নীতি প্রতিহত করতে অসাধারণ ভুমিকা পালন করেন।
একাধিক চাঞ্চল্যকর ঘটনা তদন্তে তিনি অসাধারণ সফলতার প্রমাণ দিয়েছেন। তাঁর দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার, একজন সামরিক বাহিনীর নির্বাচিত অফিসার ও অন্য ঘটনায় একজন জেলা শিক্ষা অফিসার চাকুরীচ্যুত হয়েছেন। একই ঘটনায় উক্ত ইউএনও এবং তার ছেলের ১১ বৎসরের কারাদন্ড হয়েছে।
বিভিন্ন সংগঠনে দায়িত্ব পালন:
জনাব রহমান প্রায় দুই যুগ ধরে সরকারী কলেজ শিক্ষক সমিতি ও বি. সি. এম. সাধারণ শিক্ষা সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, সাংগঠনিক সম্পাদক এবং যুগ্ন মহাসচিব পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি এক সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেটের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি ১২ বছর যাবৎ যশোর জেলা রোভার স্কাউটসের সম্পাদক এবং ৯ বছর যাবৎ রোভার স্কাউটটের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ দফতর কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ স্কাউটসের জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে আঞ্চলিক প্রতিনিধি / কাউন্সিলর প্রতিনিধি পদে পর পর তিনবার নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি একজন লিডার ট্রেনার এবং অনেক প্রশিক্ষণ কোর্সে প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি অনেক মুট, জাম্বুরী, ক্যাম্পরী, কমডেকা প্রভৃতি সমাবেশে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি ঢাকাস্থ যশোর জেলা সমিতি ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চীপ স্কাউটসের নিকট থেকে ২০০৩ সালে দ্বিতীয় সর্ব্বোচ্চ পুরষ্কার রৌপ্য ইলিশ পদকে ভুষিত হয়েছেন। পর পর দুই বার তিনি বাংলাদেশ স্কাউটস এর জাতীয় কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সামাজিক কার্যক্রম:
জনাব আতিয়ার রহমান বিভিন্ন সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছেন। যশোরের পুলেরহাট হাইস্কুলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তাঁর সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি ঐ স্কুলের ম্যনেজিং কমিটির সদস্য, সহ-সভাপতি এবং সভাপতির দায়িত্ব দীর্ঘদিন ধরে পালন করেছেন। তিনি নিজগ্রাম রুদ্রপুরে একটি পোস্ট অফিস স্থাপন করেন। একই গ্রামে রম্নদ্রপুর হাই স্কুল এবং মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রী কলেজ স্থাপনে তিনি অসাধারণ ভুমিকা পালন করেন। খুলনা বিভাগীয় স্কাউট ট্রেনিং সেন্টার তাঁর নিজ ইউনিয়নের পুলেরহাটে স্থাপন করেছেন। বর্তমানে এটা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ট্রেনিং সেন্টার।
সর্বোপরি জনাব রহমান একজন কর্তব্যনিষ্ঠ, নীতিবান ও আদর্শ শিক্ষক। তিনি বিশিষ্ট সমাজসেবক ও মুক্তিযোদ্ধা। একজন সফল শিক্ষক।
বিবাহিত জীবন:
জনাব রহমান দুই কন্যা ও এক পুত্রের জনক। স্ত্রী শামসুন্নাহার (পারম্নল) একজন গৃহিণী। বড় কন্যা জুলফিয়া পারভিন (জবা) একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। ছোট কন্যা জাকিয়া নাসরিন (লিমা) আষ্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা। একমাত্র পুত্র বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইলেট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপ নিয়ে সেখানে অধ্যায়নরত।
তথ্যসূত্র:
সাক্ষাৎকার
সম্পাদনা:
মো: হাসানূজ্জামান (বিপুল)
সর্বোশেষ আপডেট:
মার্চ ২০১২