যশোর পৌর পার্ক (যশোর শহর) / Municipal parks in Jessore (Jessore city)
যশোর পৌর পার্ক (যশোর শহর)
Municipal parks in Jessore (Jessore city)
সংস্কার করলে শহরের মানুষের চিত্যবিনোদনের
আদর্শ স্থান হতে পারে যশোর পৌর পার্ক
প্রায় দেড়শ’ বছরের পুরনো শহর যশোর। পৌরসভার প্রতিষ্ঠা ১৮৬৪ সাল। এখানে রয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ ক্যান্টনমেন্ট। রয়েছে শিক্ষা বোর্ড। বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, বিমান বন্দরসহ অসংখ্য ছোট-বড় সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এতো কিছুর পরও লক্ষাধিক মানুষের বসবাসের এই শহরে চিত্যবিনোদনের জন্য নেই মান সম্মত কোন পার্ক।
শহরের মধ্যে একমাত্র পৌরপার্ক নামে একটি পার্ক রয়েছে। যেখানে ছিনতাইকারী, মাদকসেবীদের আড্ডাই বেশি। দুটি পুকুর আছে। অনেক গল্প রয়েছে পুকুর দুটি নিয়ে। কেউ সাতরে একপাশ থেকে আরেকপাশে যেতে পারে না বলেও জনশ্রুতি আছে। তবে তা কতোটুকু সত্য তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। পুকুর দুটিতে হুইল বড়শি দিয়ে মাছ ধরেন অনুমতি প্রাপ্তরা। মাঝে মাঝে অনেক বড় মাছ ওঠে কারো কারো বড়শিতে। সেগুলো আবার স্থানীয় পত্রিকাই ছবিসহ প্রতিবেদনও হয়।
পার্কটির পুকুর পাড়ে নারকেলগাছ বেষ্টিতো। পুকুর পাড়ের নারকেল গাছের পাশে বসে থাকতে দেখা যায় কপোত-কপোতীদের। পুকুর দুটি বেশ বড় হওয়ায় দুর থেকে দেখতে অনেকটা লেকের মত মনে হয়। দুটি পুকুর পাশাপশি থাকলেও একটি থেকে আরেকটিতে যাওয়া যায়। এই যাওয়ার পথে উপর দিয়ে নির্মাণ করা আছে দৃষ্টি নন্দন ছাদ ওয়ালা একটি সেতু। যেখানে বসে সময়ও কাটানো যায়।
নারকেল গাছ ছাড়াও অন্যান্য বনজ গাছও আছে এখানে। পার্কটির পূর্ব পাশে একটি মাঝারি আকারের মঞ্চ আছে। পহেলা বৈশাখ আসলে এই মঞ্চে আয়োজন করা হয় বৈশাখী উৎসবের। বাঙালির এই উৎসব উপভোগ করতে এ দিন পার্কটিতে ঢল নামে হাজারও নারী-পুরুষের। এছাড়া অন্য সময় সখ করে এখানে সপরিবারে কাউকে সচারচার খুরতে আসতে দেখা যায়না।
পার্কটির পাশের এম এম কলেজ ও আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজের কিছু ছাত্র-ছাত্রীদেরই দেখা যায় আড্ডা দিতে। একটি বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে পার্কটিকে ‘ধুমপান মুক্ত এলাকা’ ঘোষনা দিয়ে সাইন বোর্ড টানানো হলেও বেলা ডোবার পর পার্কটি চলে যায় মাদক সেবীদের নিয়ন্ত্রনে। সরেজমিন গিয়ে দর্শনার্থীদের মুখ থেকে এমন অভিযোগও শোনা গেছে যে, অনেক সময় ঘুরতে আসা মানুষের কাছ থেকে মোবাইল ফোন সেট ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটে। রাতে অসামাজিক কার্যকলাপও ঘটে এখানে।
তবে এতো কিছুর মধ্যেও এখানে রয়েছে একটি ঐতিহাসিক স্মৃতি চিহ্ন। তা হচ্ছে, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজ হাতে মুক্তিযুদ্ধে যশোরের শহীদ মসিয়ূর রহমান স্মরণে একটি স্মৃতি ফলক স্থাপন করেছিলেন। যেটা এখন অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে। বাউন্ডারী ওয়াল ও কাটাতার দিয়ে পার্কটির চারদিক ঘেরা। তবে পূর্বপাশে অবস্থিত গেট দিয়ে প্রবেশ করে পেছন পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া যায়।
সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে নতুন করে পার্কটি সংস্কার করে নানা রঙ্গের ফুল গাছ লাগিয়ে সাজাতে পারলে এটি শহরের মানুষের চিত্যবিনোদনের একটি আদর্শ স্থান হতে পারে বলে মনে করেন শহরবাসী অনেকেই। বর্তমান পৌর মেয়র মারুফুল ইসলাম তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এই পার্কটি সংস্কার করবেন এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
যেকোন প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন: ০১৭১৮৯২৭১০৩ / ০১৯৬৪৬৬৪৮৪৪
তথ্য সংগ্রহ ও সম্পাদনা:
তরিকুল ইসলাম তারেক
তথ্য সম্পাদক, যশোর. ইনফো
মোবাইল: ০১৯১৬৪১৫১৩২
চিত্রগ্রাহক:
মো: হাসানূজ্জামান (বিপুল)
শেখ কবিরুল আহসান