
Home সাংবাদিক / Journalist > শরীফ আব্দুল হাকিম / Sharif Abdul Hakim
এই পৃষ্ঠাটি মোট 99873 বার পড়া হয়েছে
শরীফ আব্দুল হাকিম / Sharif Abdul Hakim
শরীফ আব্দুল হাকিম
Sharif Abdul Hakim
Home District: Narail
শিক্ষকতা দিয়ে চাকরিজীবন শুরু। ১৯৬০ সালে আইনপেশায় নিযুক্ত হন, সেইসাথে সাংবাদিকতা। ১৯৬২ সাল থেকে শুরু করে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দীর্ঘ ৪০ বছর দৈনিক ইত্তেফাক’র নিজস্ব সংবাদদাতা হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে তালিকাভুক্ত হন এবং নড়াইল জেলা বারে যোগদান করেন। ১৯৮৫ সাল হতে বাংলাদেশ বেতারের জেলা বার্তা পরিবেশক হিসেবে আমৃত্যু নিয়োজিত ছিলেন। জীবিত অবস্থায় তিনি বহু প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিলেন। নড়াইল প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করে গেছেন। একই সাথে বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি নড়াইল ইউনিটের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি এক বছর মেয়াদী নড়াইল আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন।
একজন শিক্ষানুরাগী হিসাবে সমাজে তার যথেষ্ট সুনাম ছিল। তিনি নড়াইল শহর প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মহিষখোলা আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে দুটি বিদ্যালয়েরই সরকারিকরণ হয়েছে। তিনি নড়াইল পাবলিক লাইব্রেরির দুই মেয়াদে সম্পাদক ও সহসভাপতি ছিলেন। তিনি তার নিজ গ্রাম দারিয়াপুরে ১৯৫৮ সালে জনতা লাইব্রেরি ও সমাজকল্যাণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৬ সালে নড়াইল শিল্পকলা একাডেমীর সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। ১৯৮৪ সালে তিনি নড়াইল উদিচি শিল্পী গোষ্ঠীর আহবায়ক হিসেবে সম্পৃক্ত ছিলেন। বরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের শিশুস্বর্গ -এর নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন।
শরীফ আব্দুল হাকিম ঈর্ষণীয় জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। জ্ঞান-বিজ্ঞানের যেকোন বিষয়ে তাঁর আগ্রহ ছিল অপরিসীম। তাঁর রচিত প্রবন্ধ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে এবং তা বিদগ্ধজনের প্রশংসা অর্জন করেছে। তিনি নড়াইল জেলার ইতিহাস নামে একটি প্রামাণ্য গ্রন্থের রচয়িতা। তার একটি ভ্রমণ-কাহিনী ও একটি প্রবন্ধের বই প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি বিজ্ঞানমনস্ক, প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক ও সংস্কারমুক্ত মনের অধিকারী ও লাইব্রেরি আন্দোলনের উদ্যোক্তা ছিলেন।
স্বাধীনতা-পূর্ব ১৯৬৬ থেকে যুদ্ধকালীন সময় পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তৎকালীন নড়াইল মহকুমা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বিশৃংখল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তিনি রাজনীতির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন এবং সকল প্রকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। তাঁর শখ ছিল বই পড়া, লেখা ও ভ্রমণ।
ব্যক্তিজীবনে তিনি তিন সন্তানের জনক। জৈষ্ঠ্যপুত্র শরীফ আশরাফউজ্জামান মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড -এর এমডি, মেঝ পুত্র ড. শরীফ আখতারুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ও কনিষ্ঠ পুত্র শরীফ আতিক-উজ-জামান খুলনা সরকারি বিএল কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক, স্ত্রী গৃহবধূ।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার হার্ট ফাউন্ডেশনে গত ১৬ জুলাই ২০০২ রাত এগারটায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তথ্য সূত্র:
ষাটের দশকে বৃহত্তর যশোরের সাংবাদিকদের সম্মাননা
আয়োজনে: প্রেসক্লাব, যশোর। তারিখ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১০
সংগ্রহ:
সিকদার খালিদ
সাংবাদিক, দৈনিক স্পন্দন