
Home দৃষ্টিপাত (Visibility) > যশোরে পাঁচ রত্নগর্ভা মা’কে সম্মননা
এই পৃষ্ঠাটি মোট 84593 বার পড়া হয়েছে
যশোরে পাঁচ রত্নগর্ভা মা’কে সম্মননা
যশোরের পাঁচজন মাকে রত্নগর্ভা সম্মাননায় ভূষিত করেছে যশোরের সাংস্কৃতিক সংগঠন শেকড়।বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে পাঁচ নারীকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যায় যশোর টাউন হল ময়দানের রওশন আলী মঞ্চে রত্নগর্ভা মায়েদের এ সম্মাননা দেওয়া হয়।
সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন- বেগম নুরুন নাহার, সালেহা খানম, মরহুমা শাহিদা খাতুন বেনু, ফিরোজা খাতুন ও মণিপ্রভা অধিকারী।
বিশ্ব মা দিবস উদযাপন পর্ষদের আহ্বায়ক হাবিবা শেফার সভাপতিত্বে রত্নগর্ভা মায়েদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুস সাত্তার।বিশেষ অতিথি যশোর পৌরসভার মেয়র মারুফুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যশোর ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক শেখ রবিউল আলম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি হারুণ অর রশিদ, বাঁচতে শেখ নির্বাহী পরিচালক অ্যাঞ্জেলা গোমেজ, কবি ও সাংবাদিক ফখরে আলম, উলাসী সৃজনী সংঘের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার আজিজুল হক মনি প্রমুখ।
শেকড় যশোরের ২০১৩ সালের সম্মাননাপ্রাপ্ত রত্নগর্ভা মায়েরা হলেন-
বেগম নুরুন নাহার: যশোরের সাবেক সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেনের স্ত্রী বেগম নুরুন নাহার। তাঁর দুই ছেলে ও পাঁচ মেয়ে সন্তানের সবাই উচ্চশিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত। বেগম নুরুন নাহারের বড় মেয়ে রওশন জাহান সাথী বর্তমানে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য।
বাকি চার মেয়ের মধ্যে আফরোজা জাহান বিথি ও জাকিয়া সুলতানা ইতি শিক্ষকতা, তাসলিমা বেগম তমালী আইনজীবী, ফারহানা সুলতানা নীলা ঢাকা কার্ডিয়াক সেন্টারের ফার্মেসিতে কর্মরত। এছাড়া দুই ছেলের মধ্যে মোস্তাক হোসেন শিম্বা যশোর কলেজের অধ্যক্ষ ও ছোট ছেলে মারুফ হোসেন খোকন সাবেক পৌর কাউন্সিলর ও ব্যবসায়ী।
শাহিদা খাতুন বেনু: শাহিদা খাতুন বেনুর ১২ ছেলে মেয়ের সবাই উচ্চ শিক্ষিত হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে অবদান রেখে চলেছেন। তাঁর আট ছেলের মধ্যে তৌহিদুর রহমান আইনজীবী, তৌফিকুর রহমান সাবেক গ্রুপ ক্যাপ্টেন (বর্তমানে মরহুম), সাবেক অধ্যাপক তকলীমুর রহমান(মরহুম), যশোর শিবোর্ডের সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর তসদিকুর রহমান, ডা. তাহমিদুর রহমান বর্তমানে সৌদিতে কর্মরত, মরহুম তারিফুর রহমান, ডা. তাসফিকুর রহমান বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী।
চার মেয়ের মধ্যে যশোর শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রওশন আকতার, আবুধাবিতে কর্মরত প্রকৌশলী নাজমুন নিগার, এমএ পাস গৃহিনী শামসুন্নাহার ও যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত রুবিনা রহমান।
ফিরোজা খাতুন: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সুন্দরপর গ্রামের আতিয়ার রহমানের স্ত্রী ফিরোজা খাতুন আট সন্তানের জননী। তাঁর সন্তানের স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত।আট সন্তানের মধ্যে দাউদ-উর-নূর চৌধুরী খুব বেশি পড়ালেখা করনেনি। বাকি সাত ছেলে মেয়ের মধ্যে বিএডিসির অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতাউল সাফরু চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা পারভীন আফসানা চম্পা, শাহজালাল ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাজ্জা-তুজ-জুম্মা, ইংল্যান্ড প্রবাসী ডা.সাঈদ উদ্দিন কিসলু চৌধুরী, ঝিকরগাছার শহীদ মশিয়রি রহমান কলেজের অধ্যক্ষ পাভেল চৌধুরী, আমেরিকা প্রবাসী ডা. শুভ চৌধুরী, ঢাকা বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ফিরোজ মাহমুদ চৌধুরী।
মণিপ্রভা অধিকারী: নড়াইলের বাকড়ী গ্রামের হরবিলাস অধিকারীর স্ত্রী মণিপ্রভা অধিকারী। তাঁর ১২ সন্তানের সবাই উচ্চ শিক্ষিত হয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন সন্তানেররা। মণিপ্রভা অধিকারীর ১২ সন্তানের মধ্যে রানী অধিকারী পেশায় শিক্ষক, কানুরঞ্জন অধিকারী সরকারি কর্মকর্তা, বীনাপাণি অধিকারী চিকিৎসক, মৃণালীনি অধিকারী ব্যাংক কর্মকর্তা, অর্চনা অধিকারী চিকিৎসক, অমিত অধিকারী শিক্ষক, স্বপ্না অধিকারী চিকিৎসক, রত্না অধিকারী শিক, মুক্তা অধিকারী শিক্ষক ও সঞ্চিতা অধিকারী মিষ্টি চিকিৎসক।
সালেহা খানম: যশোর শহরের ষষ্ঠীতলা এলাকার সালেহা খানমের আট ছেলে-মেয়ের সবাই উচ্চ শিক্ষিত হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। তার সন্তানদের মধ্যে বড় ছেলে মামুনুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স মাস্টার্স সম্পন্ন করে বর্তমানে লন্ডন প্রবাসী। বাকি তিন ছেলে মাহফুজুর রহমান এনজিওতে কর্মরত, ডা তৌহিদুল ইসলাম কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে কর্মরত ও মরহুম আরিফুল ইসলাম এমএ পাস ছিলেন।
মেয়েরা হলেন- ডা. মাহবুব আরা খানম লন্ডন প্রবাসী, ডা.শাহেদ আরা খানম লন্ডন প্রবাসী, মহসিন খানম সরকারি বিএল কলেজের শিক ও ছোট মেয়ে মানছুরা খানম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস।
শেকড় যশোর গত ৩ বছর ধরে বিশ্ব মা দিবসে রত্নগর্ভা মায়েদের সম্মননা প্রদান করে আসছে। সে ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে মা দিবসে দুইদিনে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিল মা সমাবেশে, মায়ের গল্পবলা, মায়েদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।