
Home দৃষ্টিপাত (Visibility) > বাঁধ দিয়ে নদীর বারোটা, নেতৃত্বে ক্ষমতাসীনেরা
এই পৃষ্ঠাটি মোট 84646 বার পড়া হয়েছে
বাঁধ দিয়ে নদীর বারোটা, নেতৃত্বে ক্ষমতাসীনেরা
যশোরের শার্শা উপজেলায় বেতনা নদীর ২০টি স্থানে বাঁশের বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালী ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) যশোর ও সাতক্ষীরা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদ থেকে বেতনা নদীর উৎপত্তি। সেখান থেকে এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সীমান্ত ঘুরে শার্শা উপজেলার ডিহি ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে সাতক্ষীরার কলারোয়া হয়ে আশাশুনি উপজেলায় কপোতাক্ষ নদের সঙ্গে মিশেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নারকেলবাড়িয়া, ফুলসরা, ডিহি, তেবাড়িয়া, গৌড়পাড়া, কন্দর্পপুর, কেরালখালী, বসন্তপুর, নিশ্চিন্তপুর, শিয়ালকোনা, হাঁসখালী, পুলপালা, কাজীর বেড়, কাঠ শিকড়া, নারায়ণপুর ও ত্রিমোহিনীসহ নদীর ২০টি স্থানে আড়াআড়ি বাঁধ দেওয়া হয়েছে। প্রভাবশালী ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এসব স্থানে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছেন। এতে এ নদী দিয়ে নৌকা ও ট্রলার চলাচল করতে পারছে না। একই কারণে স্বাভাবিকভাবে বিচরণ করতে না পারায় মাছের প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। এ জন্য মাছ কমে যাচ্ছে।
১৪ সেপ্টেম্বর নাভারণ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বারিপোতা-গাতিপাড়া সড়কের কাজীর বেড় সেতু থেকে উত্তর বুরুজবাগান পর্যন্ত নদীর দেড় কিলোমিটারে বাঁশের বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে। শার্শা ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের (কাজীর বেড়) সদস্য ও আওয়ামী লীগের কর্মী মোকলেসুর রহমানের নেতৃত্বে আদম আলী ও আমিনুর রহমান মাছ চাষ করছেন। পাহারার কাজে ব্যবহারের জন্য নদীতে কয়েকটি ডিঙি নৌকাও রাখা আছে।
এলাকাবাসী জানান, যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, তখন সেই দলের নেতা-কর্মীরা নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করেন। শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে এ অংশটি উন্মুক্ত ছিল। তখন নদীতে পাট পচানো, গোসল, মাছ ধরাসহ নানা ধরনের কাজ করত স্থানীয় লোকজন। কিন্তু এখন আর কাউকে নদীতে নামতে দেওয়া হয় না।
মোকলেসুর রহমান বলেন, ‘আমরা টাকা খরচ করে মাছ ছেড়েছি। সেখানে মানুষকে কেন নামতে দেব। তা ছাড়া শুধু যে আমরা নদীতে মাছ চাষ করছি, তা তো নয়। শার্শা উপজেলার যার বাড়ির সামনে দিয়ে বেতনা নদী গেছে, সে-ই বাঁধ দিয়ে মাছ ছেড়েছে।’
পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইমদাদুল হক জানান, এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। তবে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে কি না, তা যাচাইয়ের জন্য তাঁরা শিগগিরই সেখানে যাবেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, ২০০০ সালে বেতনা নদী দখলের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের তালিকা প্রস্তুত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তখন প্রভাবশালীদের হুমকি-ধমকির কারণে তা সম্ভব হয়নি। প্রশাসন উদ্যোগ নিলে তাঁরা সহায়তা করবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান জানান, তিনি এখানে কিছুদিন আগে যোগদান করেছেন। সরেজমিনে তদন্ত করে এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন।
সূত্র: যশোর নিউজ ২৪