
Home দৃষ্টিপাত (Visibility) > তুলারামপুরে তালের ডোঙার হাট
এই পৃষ্ঠাটি মোট 84586 বার পড়া হয়েছে
তুলারামপুরে তালের ডোঙার হাট
বাপে লাগায়/ পুত্রে খায়/ তার পুতে খায় বা না খায়। বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদগুলোর মধ্যে অন্যতম তালগাছ নিয়ে তৈরি একটি খনার বচন।
তালপাতার গান- ‘তোমার হাতপাখার বাতাসে, প্রাণ জুড়িয়ে আসে’, কিংবা ‘আমি মেলা থেকে তালপাতার এক বাঁশি কিনে এনেছি’। আর কবিতায় বিশ্বকবির ‘তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে …’।
শুধু কি গান-কবিতায়? কথিত আছে, তাল আর তালগাছের নাকি ৮০১ রকম ব্যবহার আছে। আফ্রিকা থেকে উড়ে আসা এ বৃক্ষটি শত বছর ধরে আমাদের কাছে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। সে কারণেই বোধহয় তৈরি হয়েছে এ প্রবাদের ‘শালিশ মানি, কিন্তু তালগাছ আমার।’
বহুবছর ধরে বাংলার গ্রামে-গঞ্জে তালগাছের আরও একটি ব্যবহার প্রচলিত। তা হলো ডোঙা। বেশিরভাগ এলাকায় এটি তালের ডোঙা নামেই পরিচিত। তালগাছকে সুনিপুণ কায়দায় কেটে অনেকটা ছোট নৌকার মতো করা হয়। মূলত মাছ ধরার কাজেই তা ব্যবহৃত হয়।
যশোর-নড়াইল সড়কের তুলারামপুর বাজারে এই তালের ডোঙার একটি হাট রয়েছে। কেবল বর্ষা মৌসুমে সপ্তাহের সোমবার ও শুক্রবার এই হাট বসে। সম্প্রতি হাটটিতে গিয়ে দেখা যায়, তালের ডোঙার কারিগররা প্রচুর ডোঙা তুলেছেন হাটে। তুলারামপুর এলাকার নিরঞ্জন (৪৫) এনেছেন দুটি ডোঙা। তিনি জানান, একটি বড় সাইজের তালগাছ থেকে দুটি ডোঙা তৈরি করা যায়। একটি তালগাছ কিনতে হয় আড়াই থেকে তিন হাজার টাকায়। ১৫-২০ দিন লাগে একটি ডোঙা তৈরি করতে। প্রতি ডোঙায় দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার মতো লাভ থাকে।
নিরঞ্জন জানান, বাপ-দাদাদেরও ডোঙা তৈরি করতে দেখেছেন তিনি। বছরের অন্যসময় ক্ষেতে শ্রম দেওয়া বা মাছ ধরার কাজ করলেও বর্ষা মৌসুমে তিনমাস তারা ডোঙা তৈরির কাজ করেন।
সূত্র:
গালিব হাসান পিল্টু
সূবর্ণভূমি
(www.subornobhumi.com)