
Home যশোর বিভাগের দাবিতে আন্দোলন (Jsr Division Movement) > ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের সংবাদ / Human Chain in front of the National Press Club in Dhaka demanding Jessore division
এই পৃষ্ঠাটি মোট 97286 বার পড়া হয়েছে
ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের সংবাদ / Human Chain in front of the National Press Club in Dhaka demanding Jessore division
আমরা বৃহত্তর যশোরের ৮০ লাখ মানুষ, ব্রিটিশ ভারতের প্রথম জেলা, মুক্তিযুদ্ধের প্রথম স্বাধীন জেলা, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত, বিপ্লবী বাঘা যতীন, সমাজ সংস্কারক মুন্শী মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ, বাউল সম্রাট লালন শাহ, কবি গোলাম মোস্তফা, বিশ্ববিখ্যাত নৃত্যশিল্পী উদয় শঙ্কর, রাজনীতিবিদ সৈয়দ নওশের আলী ও শহীদ মশিয়ুর রহমান, বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান এর জেলা, ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ যশোরকে বিভাগ করার জন্যে বিনীত দাবি জানাচ্ছি। আমাদের দাবির পক্ষে যৌক্তিক যেসব কারণ রয়েছে তা আপনার কাছে সবিনয়ে উপস্থাপন করছি।
১। ১৭৮১ সালে যশোর ব্রিটিশ ভারতের মধ্যে প্রথম জেলার মুকুট পরে। ব্রিটিশ সাহেব মি. টিলম্যান হেঙ্কেল এই জেলার প্রথম জজ ও ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিট্রেট এর দায়িত্ব পালন করেছেন। বৃহত্তর খুলনা, বৃহত্তর কুষ্টিয়া, বৃহত্তর ফরিদপুর, এমনকি ইছামতির পূর্বপার ভারতের ২৪ পরগণার কিছু অংশ যশোর জেলার অধীন ছিল। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর দেশের মধ্যে যশোর জেলা প্রথম শত্রুমুক্ত হয়। ২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর আপনি যশোরকে প্রথম ডিজিটাল জেলার ঘোষণা দেন। প্রাকৃতিক বিপর্যয়মুক্ত এই জেলায় বর্তমানে রেলওয়ে জংশন, বিমানবন্দর, এশিয়ার সর্ববৃহৎ বেনাপোল স্থলবন্দর, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, দু’টি কাস্টমস কমিশনার কার্যালয়, কেন্দ্রীয় কারাগার, কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র, সেনানিবাস, বিমান ঘাঁটি, বিজিবি’র দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিওন সদর দপ্তর, দু’টি মেডিকেল কলেজ, বৃহৎ স্টেডিয়াম, বিসিক শিল্পনগরী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ১৭৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত অবিভক্ত বাংলার প্রথম বারভবনসহ সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কয়েকটি বিভাগীয় কার্যালয় রয়েছে। সহসাই দেশের প্রথম হাইটেক পার্কের যাত্রা শুরু হবে এ জেলা থেকে। পুলেরহাটে আদ-দ্বীনের ৮শ’ শয্যাবিশিষ্ট বিশেষায়িত হাসপাতাল এখন নির্মাণাধীণ। যশোরের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী দেশের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার মধ্যে উন্নত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। কলকাতা ও ঢাকার সঙ্গে রেল যোগাযোগের ব্যবস্থাও রয়েছে। খুলনা ও যশোরের মধ্যখানে অবস্থিত শিল্পনগরী নওয়াপাড়ার সাথে নৌ-পথে সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিরাজমান। এতগুলো অবকাঠামোগত সুবিধা থাকার পরও যশোর বিভাগ হিসাবে মর্যাদা পাবার জন্য সর্বোচ্চ বিবেচনার দাবি কি রাখেনা ?
২। যশোর জেলা খাদ্যশষ্য, মাছ, সবজি ও ফুল উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা। যশোরের ৩ লাখ ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে বছরে ২ হাজার ৫শ’ কোটি টাকার ১১ লাখ ৪১ হাজার মেট্রিক টন ধান ও গম উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে উদ্বৃত্ত থাকে ৫ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশষ্য। সবজি উৎপাদিত হয় এক হাজার কোটি টাকার। ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে ৫ লাখ মেট্রিক টন সবজি ফলে। স্থানীয় চাহিদা ৩ লাখ মেট্রিক টন। বাকি ২ লাখ মেট্রিক টন উদ্বৃত্ত সবজি দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়। এক হাজার হেক্টর জমিতে বছরে ৩শ’ কোটি টাকার ফুল উৎপাদিত হয়। এই ফুল দেশের সব জেলায় যায়। এমনকী এখন কিছু ফুল বিদেশেও যাচ্ছে। মাছ উৎপাদনে যশোর আরও এগিয়ে। ৪১ হাজার চাষযোগ্য জলাশয় ও ১৯ হাজার উন্মুক্ত জলাশয়ে বছরে মাছ উৎপাদিত হয় ২ হাজার কোটি টাকা মূল্যের এক লাখ ১৮ হাজার মেট্রিক টন। ২৫ লাখ মানুষের চাহিদা ৪৫ হাজার মেট্রিক টন। উদ্বৃত্ত ৭৪ হাজার মেট্রিক টন মাছ ভারতসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। এ কারণে ফসল উৎপাদনে উদ্বৃত্ত যশোর বিভাগ হওয়ার যোগ্যতা রাখে।
৩। যশোর থেকে ঝিনাইদহ, মাগুরা, নড়াইল, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা দূরত্বের দিক থেকে কাছে। যশোরকে বিভাগ করা হলে ঐ জেলাগুলির প্রশাসনিক কর্মকান্ড পরিচালনা সহজতর হবে। যশোরের বাড়তি সুবিধা হচ্ছে এক সময়ের ১৭৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত ৩৬০ দরজার দ্বি-তল কালেক্টরেট ভবন। এই ভবনটি খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের চেয়েও বৃহৎ। কাজেই যশোর বিভাগ হলে এই ভবন থেকেই বিভাগীয় সব দাপ্তরিক কর্মকান্ড পরিচালনা করা সম্ভব। তাতে বিভাগীয় কার্যালয় ভবন নির্মাণের জন্যে সরকারের এক টাকাও খরচ হবে না। বেনাপোল বন্দর থেকে বছরে যে ৩ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয় যশোর বিভাগ হলে সেখান থেকে কিছু টাকা খরচ করা যেতে পারে। সুতরাং বিভাগ হওয়ার যোগ্যতার মাপকাটিতে যশোর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |