
Home সাহিত্যিক / Litterateur > সাদেকা শফিউল্লাহ / Sadeka Shafiullah (1936 -)
এই পৃষ্ঠাটি মোট 84911 বার পড়া হয়েছে
সাদেকা শফিউল্লাহ / Sadeka Shafiullah (1936 -)
সাদেকা শফিউল্লাহ
Sadeka Shafiullah
Home District: Jessore
পারিবারিক প

বিশিষ্ট গল্পকার, ঔপন্যাসিক, ঊর্ধ্বতন প্রাক্তন সরকারী কর্মকর্তা সাদেকা শফিউল্লাহ যশোর শহরে ১৯৩৬ সালের ৬ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষা বিভাগীয় কর্মকর্তা সাহিত্যানুরাগী পিতা মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ এবং তাঁর মাতার নাম সোফিয়া শহীদ।
১৯৫৪ সালে সাদেকা সফিউল্লাহর বিবাহের বছর। স্বামী শফিউল্লাহ ছিলেন সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তাঁর দুই সন্তন। বড় মেয়ে রীতা আলী আমেরিকা প্রবাসী এবং পুত্র সাব্বির শফিউল্লাহ কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ। ঢাকার গ্রীন রোডের আল আমীন রোডে নিজস্ব বাড়ীতে অবস্থান করে সাহিত্য সাধনা করে চলেছেন।
শিক্ষাজীবন:
বাল্যকালে তাঁর লেখাপড়ার হাতেখড়ি হয় পারিবারিক পরিবেশে পিতার নিকট। পরবর্তীতে গৃহশিক্ষক সুরেস মাস্টারের আগ্রহে ও ব্যবস্থাপনায় আনুষ্ঠানিক শিক্ষারম্ভ হয় যশোর রেল রোডস্থ রামকৃষ্ণ আশ্রমের বিদ্যালয়ে।
বিদ্যালয় পরিদর্শক পিতার চাকরিকালীন বদলীজনিত কারণে তিনি বিহার, মেদিনীপুর, রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে লেখাপড়ার বিভিন্ন অধ্যায়গুলি অতিবাহিত করার পর নিজ জেলা যশোরের মধুসূদন তারাপ্রসন্ন স্কুলে ভর্তি হন এবং সেখানে কিছুদিন পড়াশোনার পর মায়ের অসুস্থাতার কারণে অনিয়মিতভাবে ১৯৫১ সালে দ্বিতীয় বিভাগে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
১৯৫৪ সালে তিনি যশোর এম. এম. কলেজে আই. এ তে ভর্তি হন। পারিবারিক কারণে পড়াশোনার অসুবিধা হলে তিনি অনিয়মিতভাবে ১৯৫৭ সালে আই. এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬২ সালে একই কলেজ থেকে অনিয়মিতভাবে ডিগ্রী ও ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় এম. এ ডিগ্রী লাভ করেন।
সাহিত্যচর্চা:
শৈশবকাল থেকেই সাদেকা শফিউল্লাহর সাহিত্যপ্রীতি ও সাহিত্যানুরাগ প্রতিফলিত হতে থাকে। ১৯৪৭ সাল থেকে তাঁরা পারিবারিকভাবে হাতে লেখা ‘ঝংকার’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করতেন। এই পত্রিকায়ই তাঁর প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে যশোরের বিশিষ্ট সমাজসেবী ও লেখিকা বেগম আয়েশা সরদার কর্তৃক সম্পাদিত ‘শতদল’ পত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়। পিতার সাথে প্রায়ই তিনি অবলাকান্ত মজুমদার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ‘সাহিত্য সংঘে’র সাহিত্য আসরে যোগ দিতেন। সেখানে সাহিত্য সংক্রান্ত ব্যাপারে কৃতিত্ব প্রদর্শন করায় মাত্র ১৬ বছর বয়সেই তিনি ‘সাহিত্যরত্ন’ উপাধি পান। পরবর্তীকালে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তাঁর লেখা গল্প, প্রবন্ধ ও রম্য রচনা প্রকাশিত হতে থাকে। ১৯৮৬ সালে যশোর থেকে ‘চাঁদের হাট পদক’, ‘সুহৃদ স্বর্ণপদক, ‘নন্দিনী সাহিত্য পদক’ এবং ওয়ার্ড হুজ হতে ইনটেলেকচুয়াল হিসেবে অন্তর্ভুক্তি ও সনদপ্রাপ্তি লাভের গৌরব অর্জন করেন।
তিনি বেশ কিছু পত্রিকা সম্পাদনাসহ বেশ কয়েকটি নাটকও রচনা করেন, যা টেলিভিশনে প্রচারের মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। বেতার ও টেলিভিশনের উপস্থাপিকা হিসাবে তিনি দীর্ঘদিন এ মাধ্যমের সাথে জড়িত ছিলেন।
প্রকাশিত গ্রন্থ:
যশস্বী লেখিকা সাদেকা শফিউল্লাহর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা পঁচিশ। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থগুলির মধ্যে: ‘নিষিদ্ধ সুখের যন্ত্রণা’, ‘যুদ্ধ অবশেষে’, ‘অনুভূতির রং’, ‘শর্ত্তহীন নৈঃশব্দে’, ‘জাম্পার পো পো’, ‘কলংকের সুগন্ধ অক্ষম বৈঠক’, ‘চয়ন’, ‘ক্রান্তিকাল’, ‘ডায়েরীর পাতা থেকে’, ‘শেষ গোধুলিতে’, ‘যুদ্ধে যুদ্ধে জীবন’, ‘সীমাবদ্ধ সীমানা’, ‘ছোটদের হাসির গল্প’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
১৯৬৩ সালে সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরে সমাজকল্যাণ সংগঠিকা হিসেবে যোগদানের মধ্যদিয়েই তাঁর চাকরি জীবনের সূচনা হয়। সমাজকল্যাণ দপ্তরে চাকুরিকালীন তিনি বিভাগীয় মাসিক পত্রিকা ‘সমাজকল্যাণ বার্ত্তা’ সম্পাদনাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনার দায়িত্ব পালন করেন।
কর্মজীবন:
১৯৮১ সালে তিনি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে উপ-পরিচালকের দায়িত্বে নিয়োজিত হন এবং ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ শিশু একাডেমী পরিচালকের দায়িত্বভার পালন করেন। সাদেকা শফিউলস্নাহ বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্কিত বিভাগের উপ-সচিব পদসহ অত্যনত্ম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। এই খ্যাতিমান সাহিত্যিক ১৯৯৪ সালে উক্ত দায়িত্ব থেকে অবসর গ্রহণের পর ‘বাঁচতে শেখা’ নামক সংস্থার চেয়ারম্যান-এর দায়িত্বসহ আন্তর্জাতিক, জাতীয় অসংখ্য সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন।
তথ্য সূত্র:
যশোরের যশস্বী, শিল্পী ও সাহিত্যিক
লেখক: কাজী শওকত শাহী
সম্পাদনা:
মোঃ হাসানূজ্জামান (বিপুল)
শামিউল আমিন শান্ত
সর্বশেষ আপডেট:
অক্টোবর ২০১১