
Home সাহিত্যিক / Litterateur > মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান / Mohammad Moniruzzaman (1936-2008)
এই পৃষ্ঠাটি মোট 87197 বার পড়া হয়েছে
মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান / Mohammad Moniruzzaman (1936-2008)
মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান
Mohammad Moniruzzaman
Home District: Jessore
পারিবা

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের নন্দিত গবেষক ও আধুনিক বাংলা কাব্যের উজ্জ্বলতম ব্যক্তিত্ব, গীতিকার, প্রাবন্ধিক, শিক্ষাবিদ ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ১৯৩৬ সালের ১৫ আগস্ট যশোর শহরের পশ্চিম প্রান্তে খড়কি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। খড়কীর মো: শাহাদৎ আলীর প্রথম পুত্র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। মা বেগম রাহেলা খাতুন।
১৯৬০ সালে তাঁর বিবাহ হয়। স্ত্রী রাশিদা জামান ঢাকা ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরী স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে ছিলেন। তিনিও কয়েকটি গ্রন্থের লেখিকা। জনাব মনিরুজ্জামানের এক মেয়ে ও এক ছেলে। কন্য একজন চিকিৎসক। বর্তমানে তিনি আষ্ট্রেলিয়ার সিডনী শহরে বসবাস করছেন। পুত্র শুভ একজন ইঞ্জিনিয়ার।
শিক্ষাজীবন :
১৯৫৩ সালে যশোর জিলা স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে ম্যট্রিকুলেশন পাশ করার পর মনিরুজ্জামান রাজশাহী সরকারী কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই ১৯৫৫ সালে আই. এস. সি পাশ করেন। ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় প্রথম শ্রেণীতে সম্মান এবং ১৯৫৯ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় প্রথম শ্রেণীতে এম. এ পাস করেন। ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে পি. এইচ. ডি ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৬৯-৭০ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা করেন।
পেশাগত জীবন :
১৯৫৯ সালে তাঁর এম. এ. পরীক্ষার রেজাল্ট বের হবার পরের দিনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষাকতার মাধ্যমে পেশাগত জীবনের সূচনা হয়। ১৯৬৯ সালে তিনি পি-এইচ, ডি ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি প্রফেসর পদে উন্নীত হন। ১৯৭৮-৮১ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার পালন করেন। তাঁর তত্ত্বাবধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ জন ছাত্র পি-এইচ ডি ডিগ্রী লাভ করেছেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পি-এইচ. ডি পরীক্ষক।
তাঁর শিক্ষকতা জীবনে তিনি ভ্রাম্যমান অধ্যাপক হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড, বোষ্টন, আইওয়া, শিকাগো ও বার্কেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং প্রফেশনাল এসোসিয়েট হিসাবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দায়িত্ব পালন করেন।
শিক্ষাকতা ছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা প্রশাসনসহ দেশ-বিদেশের শিক্ষা সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
সাহিত্যকর্ম :
৪০ এর দশকে ছাত্র জীবনেই তাঁর কবি প্রতিভার বিকাশ ঘটে। এ সময় থেকেই ঢাকার খ্যাতনামা পত্রিকাগুলিতে তাঁর লেখা কবিতাগুলি প্রকাশিত হতে থাকে। তাঁর কাব্যসংকলনের ১৫টি বই প্রকাশিক হয়েছে। ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান কাব্য সংগ্রহের মধ্যে ৬০০ এর বেশী কবিতা আছে। তিনি এক সময় আবৃত্তিও করতেন। তাঁর আবৃত্তির একটি ক্যাসেটও বের হয়েছিল।
তাঁর লেখা প্রথম কবিতা ‘এই আজাদী’ ১৯৫২ সালে ‘ইশারা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তাঁর প্রথম গুরুত্বপূর্ণ কবিতা ‘কৃষ্ণচূড়ার মেঘ’। কবিতাটি রচিত হয় ১৯৫৪ সালে এবং ১৯৬৮ সালে ‘শঙ্কিত আলোক’ নামক কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত হয়। কবিতাটির অংশবিশেষ :
এ সব রাত্রিকে ঢেকে দাও
সমুদ্রের বিশাল গহবরে, নয়ত উধাও
মেঘ ভরে আনো অবিশ্রাম
বর্ষার সংগীত।।
এক ঝাঁক নাম
মুখরিত সূর্য কাঁপে
সুদূর বিস্তৃত সেই একক সংলাপে।।
ইতিহাস তারা নয়
বিস্মৃতি বিলয়
তাদের প্রচ্ছন্ন করে রাখে না কখনো।।
- ১৯৬১ সালে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘দূর্লভ দিন’ প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটি সাহিত্যামোদীদের কাছে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়।
- ১৯৬৮ সালে ‘শঙ্কিত আলোক’, ‘বিপন্ন বিষাদ’, নামে দুইটি কাব্যগ্রন্থ তিনি রচনা করেন।
- ১৯৭৩ সালে ‘প্রতনু প্রত্যাশা’
- ১৯৭৩ সালে অনুবাদ কবিতা এমিলি ডিকিনসনের কবিতা।
- ১৯৭৬ সালে ‘ভালবাসার হাতে’, ‘ইচ্ছেমতী’
- ১৯৮৪ সালে ‘ভূমিহীন কৃষিজীবী ইচ্ছে তার’, ‘তৃতীয় তরঙ্গে’
- ১৯৮৪ সালে ‘সঙ্গী বিহঙ্গী’ প্রকাশিত হয়।
- ১৯৯০ সালে ‘কোলাহলের পর’
- ১৯৯২ সালে ‘ধীর প্রবাহে’
কবিতা লেখার সঙ্গে সঙ্গে অনেক গবেষণাধর্মী পুস্তকও তিনি রচনা করেছেন। এই গ্রন্থগুলির মধ্যে রয়েছে:
- ১৯৬২ সলে ‘আধুনিক কাহিনী কাব্যে মুসলিম জীবন ও চিত্র’,
- ১৯৬৫ সালে ‘আধুনিক বাংলা সাহিত্য’,
- ১৯৬৯ সালে ‘মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’,
- ১৯৭০ সালে ‘আধুনিক বাংলা কাব্যে হিন্দু মুসলমান সম্পর্ক’,
- ১৯৭০ সালে ‘বাংলা কবিতার ছন্দ,
- ১৯৭৮ সালে ‘বাংলা সাহিত্যে উচ্চতর গবেষণা’,
- ১৯৮১ সালে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের ইতিহাস’,
- ১৯৮৪ সালে ‘রবীন্দ্র চেতনা’,
- ১৯৮৫ সালে ‘আধুনিক বাংলা কবিতা প্রাসঙ্গিকতা ও পরিপ্রেক্ষিত’,
- ১৯৯২ সালে ‘ভাষা আন্দোলনঃ শিক্ষায় ভাষা পরিকল্পনা’ বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
সাহিত্যাঙ্গনে বিভিন্নমূখী প্রতিভার অধিকারী ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান সম্পাদনা করেছেন অনেকগুলি গবেষণামূলক গ্রন্থ ও পত্র পত্রিকা।
- ‘যশোরের লোক কাহিনী’,
- ‘প্যারীচাঁদ-রচানাবলী,
- ‘মধুসূদন কাব্য গ্রন্থাবলী,
- ‘মধুসূদন নাট্য গ্রন্থাবলী’,
- ‘নজরুল সমীক্ষণ’,
- ‘ঢাকার লোক কাহিনী’,
- দ্বিজেন্দ্র লাল রায়ের ‘সাজাহান’ নাটক (মুহম্মদ আব্দুল হাই সহযোগে যুগ্নসম্পাদনা)
- ‘মুহম্মদ এনামুল হক স্মারক গ্রন্থ’, ‘সৈয়দ আলী আহসান সংবর্ধনা গ্রন্থ’ (যৌথ সম্পাদনা)।
- ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয়ের ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণা পত্র ‘সাহিত্য পত্রিকা’ ১৫ বৎসর সম্পাদনা উল্লেখযোগ্য।
এ ছাড়াও তাঁর কবিতা ইংরাজী, ফরাসী, জার্মান, রুশ, হিন্দী, উর্দ্দু বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
সংগীত রচনা :
বাংলা সংগীত রচনার ক্ষেত্রে তাঁর কৃতিত্বপূর্ণ ভূমিকা বিশেষ স্মরণীয়। ১৯৫৫ সাল থেকে রেডিও বাংলাদেশের একজন নিয়মিত গীতিকার ছিলেন। তিরি ১৯৬৪ সালে প্রথম চলচ্চিত্রে ‘ডাকবাবু ছবি’র জন্যে গান রচনা করেছেন। এ ছবিতে সব গান গুলিই তিনি দুই দিনে রচনা করেন। তিনি রেডিও টেলিভিশন রেকর্ড ও চলচ্চিত্রের জন্যে তিরি প্রায় ৩০০০ গান রচনা করেছেন। তাঁর অসংখ্য দেশাত্ববোধক এবং আধুনিক গানের মধ্যে কয়েকটি কালজয়ী গানের কয়েক লাইন :
১) আমার দেশের মাটির গন্ধে
ভরে আছে সারা মন
শ্যামল কোমল পরশ ছড়ায়ে
নেই কিছু প্রয়োজন।।
--------------------------
২) প্রতিদিন তোমায় দেখি সূর্যরাগে
প্রতিদিন তোমার কথা হৃদয় জাগে
ও আমার দেশ
ও আমার বাংলাদেশ
---------------------------
২) তুমি কি দেখছ কভু
জীবনের পরাজয়?
দুঃখের দহনে করুন রোদনে
তিলে তিলে তার ক্ষয় ?
------------------------
৩) অশ্রু দিয়ে লেখা এ গান
যেন ভুলে যেও না।
একই বন্ধনে বাঁধা দু’জনে
এ বাঁধন খুলে যেও না।
১৯৬৭ সালে ‘অনির্বাণ’ ও ১৯৮৪ সালে ‘নির্বাচিত গান’ নামে তাঁর দুটি গীতি কবিতা সংগ্রহ প্রকাশিত হয়। ‘ডাকবাবু’, ‘চাওয়াপাওয়া’, ‘অলীবাবা’, ‘নতুন নামে ডাকো’, ‘এতটুকু আশা’, ‘পরশমনি’, ‘ধীরে বহে মেঘনা’ ছায়াছবিতে তাঁর লেখা গানগুলি বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
সম্মাননা :
অসাধারণ প্রতিভাধর সাহিত্যিক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান তাঁর সাহিত্য কর্মের স্বীকৃতি স্বরুপ দেশে ও বিদেশে পেয়েছেন একাধিক পুরষ্কার ও ভূষিত হয়েছেন বিভিন্ন সম্মানে।
সংগীত রচনা :
বাংলা সংগীত রচনার ক্ষেত্রে তাঁর কৃতিত্বপূর্ণ ভূমিকা বিশেষ স্মরণীয়। ১৯৫৫ সাল থেকে রেডিও বাংলাদেশের একজন নিয়মিত গীতিকার ছিলেন। তিরি ১৯৬৪ সালে প্রথম চলচ্চিত্রে ‘ডাকবাবু ছবি’র জন্যে গান রচনা করেছেন। এ ছবিতে সব গান গুলিই তিনি দুই দিনে রচনা করেন। তিনি রেডিও টেলিভিশন রেকর্ড ও চলচ্চিত্রের জন্যে তিরি প্রায় ৩০০০ গান রচনা করেছেন। তাঁর অসংখ্য দেশাত্ববোধক এবং আধুনিক গানের মধ্যে কয়েকটি কালজয়ী গানের কয়েক লাইন :
১) আমার দেশের মাটির গন্ধে
ভরে আছে সারা মন
শ্যামল কোমল পরশ ছড়ায়ে
নেই কিছু প্রয়োজন।।
--------------------------
২) প্রতিদিন তোমায় দেখি সূর্যরাগে
প্রতিদিন তোমার কথা হৃদয় জাগে
ও আমার দেশ
ও আমার বাংলাদেশ
---------------------------
২) তুমি কি দেখছ কভু
জীবনের পরাজয়?
দুঃখের দহনে করুন রোদনে
তিলে তিলে তার ক্ষয় ?
------------------------
৩) অশ্রু দিয়ে লেখা এ গান
যেন ভুলে যেও না।
একই বন্ধনে বাঁধা দু’জনে
এ বাঁধন খুলে যেও না।
১৯৬৭ সালে ‘অনির্বাণ’ ও ১৯৮৪ সালে ‘নির্বাচিত গান’ নামে তাঁর দুটি গীতি কবিতা সংগ্রহ প্রকাশিত হয়। ‘ডাকবাবু’, ‘চাওয়াপাওয়া’, ‘অলীবাবা’, ‘নতুন নামে ডাকো’, ‘এতটুকু আশা’, ‘পরশমনি’, ‘ধীরে বহে মেঘনা’ ছায়াছবিতে তাঁর লেখা গানগুলি বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
সম্মাননা :
অসাধারণ প্রতিভাধর সাহিত্যিক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান তাঁর সাহিত্য কর্মের স্বীকৃতি স্বরুপ দেশে ও বিদেশে পেয়েছেন একাধিক পুরষ্কার ও ভূষিত হয়েছেন বিভিন্ন সম্মানে।
- ১৯৭২ ও ১৯৭৩ সালে শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসাবে তিনি জহির রায়হান চলচ্চিত্র পুরষ্কার লাভ করেন।
- ১৯৭২ সালে কবিতার জন্যে তিনি ‘বাংলা একাডেমী পুরস্কার’ লাভ করেন।
- ১৯৮০ সালে তিনি মস্কো টেলিভিশনে রাদুগা পুরষ্কার পেয়েছিলেন।
- ১৯৮২ তিনি এশিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়নের যে রেডিও প্রাগ্রাম কম্পিটিশন হয়েছিল, সেখানে তিনি প্রথম পুরস্কার পেয়েছিলেন।
- ১৯৮২ সালে সাহিত্য সঙ্গীত নাট্য মহাসম্মেলনে মানিকগঞ্জে তাঁকে গুণী সংবর্ধনা দেয়া হয়।
- ১৯৮৪ সালে যশোর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার (কবিতা), লেখিকা সংঘ স্বর্ণপদক (কবিতা), কালুশাহ সাহিত্য পুরস্কার (গবেষণা), হাসান হাফিজুর রহমান স্বর্ণপদক (প্রবন্ধ), পান।
- ১৯৮৪ সালে চাঁদের হাট পদক (সাহিত্য),
- ১৯৮৭ সালে একুশে পদক (সাহিত্য),
- ১৯৮৮ সালে মাইকেল সাহিত্য পুরস্কার (গবেষণা),
- ১৯৮৯ সালে শিল্পী কামরুল হাসান পদক (সাহিত্য) ও
- ১৯৯১ সালে সাংবাদিক মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ স্বর্ণপদক (সাহিত্য) এবং
- ১৯৯২ সালে কবিতায় জসিমউদ্দীন পুরস্কার তাঁকে প্রদান করা হয়।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৬৯ সালে সার্টিফিকেট অব মেরিট ফর ডিস্টিঙ্গুইশড কনট্রিবিউশন টু পোয়েট্রি, ইন্টারন্যাশনাল হুজ হু ইন পোয়েট্রি, লন্ডন;
১৯৮২ সালে বিশ্ব সাহিত্যে অবদানের জন্যে ডিপ্লেমা ডিমেরিটো ইউনিভার্সিটা ডে লে আর্টি, ইতালি,
১৯৮২ সালে এশিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন বেতার অনুষ্ঠান প্রতিযোগীতা, কুয়ালালামপুর, প্রথম পুরস্কার (মটির গানঃ লেখক)।
১৯৮৩ সালে রাদুগা পুরস্কার, মস্কো, (মুক্তিযোদ্ধা ভিত্তিক টেলিভিশন সঙ্গীতালেখ্য ‘তোমাদের জন্য’ রচনা) ও আন্তর্জাতিক রোটারী ক্ষেত্রে অবদানের জন্যে দি রোটারী ফাউন্ডেশন অব রোটারী ইন্টারন্যাশনাল সাইটেশেন ফর মেরিটরিয়াস সার্ভিস’ এর সম্মানে ভূষিত করা হয়। ২০০৩ সালে যশোর সুরবিতান সংগীত একাডেমীর পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাঁকে গুণিজন সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ :
সমাজ সচেতন এই কবি ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠার দাবী আদায়ে এবং দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে এক গৌরবোজ্জ্বাল ভূমিকা পালন করেন। সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিচরণকারী ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এখনও নিরলসভাবে তাঁর সৃজনশীল সৃষ্টির মাধ্যমে ভাষা ও সাহিত্যে নিরন্তর অবদান অব্যাহত রেখেছেন।
পরলোক গমন:
দেশের এই কৃতি সন্তান দীর্ঘ দিন অসুস্থ থেকে ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তারিখে ঢাকা বারডেম হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মরদেহ তার প্রিয় কর্মস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নেয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ দেশের বহু বরেণ্য শিল্পী, সাহিত্যিক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক ও তাঁর অসংখ্য ভক্ত সেখানে উপস্থিত হয়ে ফুলের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর মরদেহ তাঁর প্রিয় জন্মভূমি যশোরে নিয়ে যাওয়া হয়। পারিবারিক গোরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হয়। মৃত্যুর দু’দিন পর মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান স্মরণে জাতীয় শহীদ মিনারে এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। দেশের অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গ সেখানে উপস্থিত হন।
১৯৮২ সালে বিশ্ব সাহিত্যে অবদানের জন্যে ডিপ্লেমা ডিমেরিটো ইউনিভার্সিটা ডে লে আর্টি, ইতালি,
১৯৮২ সালে এশিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন বেতার অনুষ্ঠান প্রতিযোগীতা, কুয়ালালামপুর, প্রথম পুরস্কার (মটির গানঃ লেখক)।
১৯৮৩ সালে রাদুগা পুরস্কার, মস্কো, (মুক্তিযোদ্ধা ভিত্তিক টেলিভিশন সঙ্গীতালেখ্য ‘তোমাদের জন্য’ রচনা) ও আন্তর্জাতিক রোটারী ক্ষেত্রে অবদানের জন্যে দি রোটারী ফাউন্ডেশন অব রোটারী ইন্টারন্যাশনাল সাইটেশেন ফর মেরিটরিয়াস সার্ভিস’ এর সম্মানে ভূষিত করা হয়। ২০০৩ সালে যশোর সুরবিতান সংগীত একাডেমীর পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাঁকে গুণিজন সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ :
সমাজ সচেতন এই কবি ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠার দাবী আদায়ে এবং দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে এক গৌরবোজ্জ্বাল ভূমিকা পালন করেন। সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিচরণকারী ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এখনও নিরলসভাবে তাঁর সৃজনশীল সৃষ্টির মাধ্যমে ভাষা ও সাহিত্যে নিরন্তর অবদান অব্যাহত রেখেছেন।
পরলোক গমন:
দেশের এই কৃতি সন্তান দীর্ঘ দিন অসুস্থ থেকে ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তারিখে ঢাকা বারডেম হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মরদেহ তার প্রিয় কর্মস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নেয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ দেশের বহু বরেণ্য শিল্পী, সাহিত্যিক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক ও তাঁর অসংখ্য ভক্ত সেখানে উপস্থিত হয়ে ফুলের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর মরদেহ তাঁর প্রিয় জন্মভূমি যশোরে নিয়ে যাওয়া হয়। পারিবারিক গোরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হয়। মৃত্যুর দু’দিন পর মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান স্মরণে জাতীয় শহীদ মিনারে এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। দেশের অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গ সেখানে উপস্থিত হন।
ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের লেখা কিছু গান
গানের কলি | সুর | শিল্পী |
|
আব্দুল আহাদ | সমবেত কণ্ঠে |
|
দেবু ভট্টাচার্য | রুনা লায়লা |
|
আব্দুল আহাদ | সমবেত কণ্ঠে |
|
ঐ | |
|
ঐ | |
|
ঐ | |
|
সাবিনা ইয়াসমিন | |
|
সমর দাম | হেমন্ত মুখপাধ্যায় |
|
সন্ধ্যা মুখপাধ্যায় | |
|
আব্দুল জব্বার | |
|
আলী হোসেন | শাহানাজ রহমতুল্লাহ |
|
আলী হোসেন | সাবিনা ইয়াসমিন |
|
দেবু ভট্টাচার্য | সাবিনা ইয়াসমিন |
|
রবিন ঘোষ | শাহানাজ রহমতুল্লাহ |
|
আলী হোসেন | সবিনা ও মাহামুদুন্নবী |
|
সত্য সাহা | সাবিনা ইয়াসমিন |
বাংলা সাহিত্যের উচ্চতর গবেষণার ক্ষেত্রে তাঁর যথেষ্ট অবদান রয়েছে। সাহিত্যের সকল ক্ষেত্রে তিনি তাঁর অবদান রেখেছেন। তাঁর কবিতা ইংরাজী, ফরাসী, জার্মান, রুশ, কাতার, জাপান, কোরিয়া, হিন্দী, উর্দু প্রভৃতি ভাষায় অনুদিত হয়েছে। দেশের শিক্ষা বোর্ডেও তাঁর কবিতা পাঠ্যক্রমভুক্ত করা হয়েছে। সংগীত রচনার ক্ষেত্রে তাঁর অবস্থান শীর্ষে। রেডিও ও টেলিভিশনে তাঁর রচিত গান নিয়মিত প্রচারিত হয়। তার সকল সাহিত্য কর্মে দেশপ্রেম পরিষ্ফুটিত হয়েছে। মো. মনিরুজ্জামানের প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৭০টির বেশী।
তথ্য সূত্র :
সাক্ষাৎকার
/
যশোরের যশস্বী শিল্পী ও সাহিত্যিক
লেখক : কাজী শওকত শাহী
সম্পাদনা :
মোঃ হাসানূজ্জামান বিপুল
শামিউল আমিন শান্ত
সর্বশেষ আপডেট :
অক্টোবর ২০১১