
Home সাহিত্যিক / Litterateur > মোহাম্মদ শামছুজ্জামান / Md. Shamszzaman (1961) (Additional Director General, Bangladesh Railway)
এই পৃষ্ঠাটি মোট 84845 বার পড়া হয়েছে
মোহাম্মদ শামছুজ্জামান / Md. Shamszzaman (1961) (Additional Director General, Bangladesh Railway)
মোহাম্মদ শামছুজ্জামান
Mohammad Shamszzaman
Home District: Jessore, Jhikargacha

মোহাম্মদ শামছুজ্জামান যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার ঝিকরগাছা গ্রামে (কাটাখাল) এক সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। জন্ম তারিখ আনুমানিক ২৬ ভাদ্র, বাংলা ১৩৬৮ সাল। পিতার নাম মরহুম আব্দুর রউফ মণ্ডল ও মাতা সুপিনা খাতুন। জামানের পিতা ১৯৪৭ এর দেশ বিভাগের পূর্বে বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ (অধুনা বাগদা) থানার অন্তর্গত মালিপোতা গ্রামের অধিবাসী ছিলেন। বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে এই গ্রামের পাশের কয়েকটি গ্রামের নাম উল্লেখ পাওয়া যায়। পিতামহের নাম এলাহি বক্স মণ্ডল, প্রপিতামহ পিয়ার আলী মণ্ডল। মাতুলালয় বনগাঁ থানার পাইকপাড়া গ্রামে, মাতামহের নাম হাজী সাহাজউদ্দিন বিশ্বাস। পিতামাতার দশ সন্তানের মধ্যে জামান চতুর্থ। তবে প্রথম পুত্রসন্তান।
জনাব শামছুজ্জামান ১৯৮৮ সালে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার প্রাক্তন গণপরিষদের সদস্য ও বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম স্বাক্ষরদাতা মরহুম ক্যাপ্টেন ডাঃ আবুল কাশেম এর বড় নাতিন রিদওয়ানা আলমের সাথে পরিণয় সূত্রে অবদ্ধ হন। রিদওয়ানা আলম শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত । জনাব জামানের একমাত্র সন্তান শাদমান জামান এর বয়স ১৮ বৎসর ও চট্টগ্রাম মেডিক্যোল কলেজের ১ম বর্ষের ছাত্র।
শিক্ষাজীবন:
তিনি ঝিকরগাছা সরকারী গার্লস হাই স্কুলে (মোবারকপুর) প্রাথমিক শিক্ষা (১৯৭০), ঝিকরগাছা বদরুদ্দিন মুসলিম হাইস্কুলে এসএসসি (১৯৭৬), ঝিকরগাছা শহীদ মশিয়ুর রহমান ডিগ্রী কলেজে এইচএসসি (১৯৭৮) প্রথম বিভাগে পাশ করেন। এরপর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ঢাকাতে ১৯৮৩ সালে যন্ত্র-প্রকৌশলে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।
চাকরি ও প্রশিক্ষণ:
১৯৮৩ সালের অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন এর খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলস লিমিটেডে যোগ দিয়ে কর্মজীবনের সূচনা হয়। এরপর তিনি ১৯৮৪ সালের মার্চে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডে যোগদান করে ঠাকুরগাঁও ও ঢাকাতে চাকরি করেন। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষার মাধ্যমে তিনি ১৯৮৫ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে বাংলাদেশ রেলওয়েতে যোগদান করেন। তিনি বিগত ২৫ বৎসর যাবত রেলওয়ের লালমনিরহাট, পাকশী, ঢাকা, সচিবালয়, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও পাহাড়তলীতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ যথা সহকারী যন্ত্র প্রকৌশলী, বিভাগীয় যন্ত্র প্রকৌশলী, সিনিয়র সহকারী সচিব, কর্মব্যবস্থাপক, অতিরিক্ত প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী, বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (কারখানা), প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী/উন্নয়ন, প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী/পশ্চিম ও প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী/পূর্ব পদে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হিসেবে কর্মরত। তিনি বিসিএস রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যাডারের সরকারী বেতনক্রম ৩য় গ্রেডভূক্ত কর্মকর্তা।
তিনি রেলওয়েতে যোগদানের পর এ পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সাভার, চট্টগ্রামস্থ রেলওয়ে ট্রেনিং একাডেমীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মৌলিক ও মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি পশ্চিম জার্মানী সরকারের বৃত্তি নিয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণে ১৩ মাসের প্রোগ্রামে ১৯৮৯ সালে সেখানে গমন করেন। পরবর্তীতে ২০০৫ সালেও ২ মাসের জন্য জার্মানীতে প্রশিক্ষন গ্রহণ করেন। এর আগে ১৯৯৩ সালে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহায়তাপুষ্ঠ প্রোগ্রামে ২ মাসের প্রশিক্ষণে ভারতের লক্ষৌতে গমন করেন। তিনি প্রশিক্ষণের সময় জার্মানীর বিস্তৃত অংশ, হল্যান্ড, বেলজিয়াম, লুক্মেমবার্গ এবং ভারতের বিভিন্ন অংশ ভ্রমণ করেন। ২০০৮ সালে ১০ দিনের জন্য চীন ও সিঙ্গাপুর ভ্রমণ করেন।
সামাজিক কর্মকান্ড:
তিনি নিম্মোক্ত সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত -
- যশোর-বেনাপোল রেল লাইন পুনঃ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা পালন।
- চট্টগ্রামস্থ রেলওয়ে মেনস স্টোরের নির্বাচিত পরিচালক।
- চট্টগ্রামস্থ রেলওয়ে এমপ্রয়ীজ হাউজিং সোসাইটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক।
- বাংলাদেশ রেলওয়ে এমপ্রয়ীজ কো-অপারেটিভ স্টোর্সের বর্তমান সভাপতি।
- চট্টগ্রাম যশোর সমিতির সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে "কপোতাক্ষ" প্রকাশনা।
- বিগত ২০০০-২০০৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ রেলওয়ে স্পোর্টস কন্ট্রোল বোর্ডে সম্পাদক/হকি হিসেবে ঢাকার প্রিমিয়াম ডিভিশনে রেলওয়ে হকি দল পরিচালনা করা। এছাড়া রেলওয়ে স্পোর্টস উপলক্ষ্যে স্যুভিনির সম্পদনা।
- ২০০৯-১০ সালের বাংলাদেশ রেলওয়ে স্পোর্টস কন্ট্রোল বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন।
- ইনষ্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইবি) এর জীবন ফেলো। চট্টগ্রামস্থ ২টি আইইবি’র জাতীয় কনভেনশনে স্মরণিকা সম্পাদনার দায়িত্ব পালন।
- বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার্সের জীবন ফেলো।
- বুয়েট এলামনাই এসোসিয়েশনের জীবন ফেলো।
- ঝিকরগাছার লাউজানির "অন্বেষা পাঠাগার" এর জীবন সদস্য।
- বুয়েট’৮৩ ক্লাবের জীবন সদস্য।
- ঢাকাস্থ ঝিকরগাছা ফাউন্ডেশন এর জীবন সদস্য।
- নড়াইলের শরীফ ফাউণ্ডেশনের জীবন সদস্য।
- ঝিকরগাছা যশোর থেকে প্রকাশিত সাহিত্য পত্রিকা 'মরাল' ও 'পড়শি' প্রকাশনায় জড়িত।
- বৃহত্তর যশোর ওয়েবসাইট (www.jessore.info) এর প্রথম আজীবন সদস্য।
- যশোর সমিতি ঢাকা এর আজীবন সদস্য।
সাহিত্যকর্ম:
সরকারী চাকরি ও পেশার বাইরে তিনি একজন কথাশিল্পী, কবি ও প্রাবন্ধিক। বিগত ১৯৮৯ সাল থেকে ঢাকার "দৈনিক আজকের কাগজ’", "নতুন ঢাকা ডাইজেস্ট", "পাক্ষিক পালাবদল’", "দৈনিক সংবাদ’’ মাসিক "কালিকলম’’ পত্রিকায় ছোট গল্প, কবিতা ও নিবন্ধ প্রকাশিত হয়ে আসছে। ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রামে "দৈনিক আজাদী" এবং যশোরে "দৈনিক কল্যাণ’" ও "গ্রামের কাগজে" গল্প, কবিতা ও নিবন্ধ প্রকাশিত হচ্ছে। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে "কথা", ঝিকরগাছা যশোর হতে "পড়শি", সৈয়দপুর শিল্প সাহিত্য সংসদ হতে প্রকাশিত "নবারূণ", কোটচাঁদপুর হতে "কহন", যশোর থেকে "মরাল" এবং পাবনা থেকে "খেয়া" নামক ছোট কাগজে গল্প ও নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। আইইবি এর সম্মেলন উপলক্ষ্যে প্রকাশিত স্মরণিকাতে গল্প, কবিতা ও কারিগরী প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। ঢাকাস্থ বাংলা একাডেমীর বই মেলায় ২০০২ ও ২০০৫ সালে শ্রাবণ প্রকাশনী হতে প্রকাশিত গল্প গ্রন্থের নাম যথাক্রমে "স্বপ্নের দোলাচল" এবং "খালপাড়ের পদাবলী"। ২০০৭ সালের বই মেলায় "বানভাসি একজন" নামক কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। আগামী ২০১১ এর বই মেলায় শ্রাবন প্রকাশনী থেকে ১টি ছোট গল্প "তুখাম্বিরির গন্ধ" ও সংঘ প্রকাশনি থেকে ১টি কবিতার বই "ঘুমন্ত" চাঁদ’ প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। তার সেরা ১০টি গল্পের ইংরেজীতে অনুবাদ গ্রন্থ 'Reflection into Tears' প্রকাশের অপেক্ষায় আছে।
সম্মাননা:
২০০৪ সালে ঝিকরগাছা লাউজানি গ্রামের "অন্বেষা পাঠাগার" হতে গল্প লেখক হিসেবে সম্বর্ধনা এবং ২০০৬ সালে 'ঝিকরগাছার সুশীল সমাজ' হতে সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য সম্বর্ধনা ও সম্মাননা পদক দেয়া হয়েছে। ঝিকরগাছা, যশোর হতে প্রকাশিত 'পড়শি’ পত্রিকার ৩য় সংখ্যা কথাশিল্পী মোহাম্মদ শামছুজ্জামান সংখ্যা হিসেবে প্রকাশ পেয়েছে।
তথ্য সূত্র : সাক্ষাৎকার
সর্বশেষ আপডেট:
জানুয়ারী ২০১২