
Home সাহিত্যিক / Litterateur > হোসেন উদ্দীন হোসেন / Hossain Uddin Hossain (1941)
এই পৃষ্ঠাটি মোট 87283 বার পড়া হয়েছে
হোসেন উদ্দীন হোসেন / Hossain Uddin Hossain (1941)
হোসেন উদ্দীন হোসেন
Hosenuddin Hosein
Home District: Jessore, Jhikargacha
.jpg)
ইতিহাসবিদ, উপন্যাসিক, কবি ও সাংবাদিক হোসেন উদ্দিন হোসেন ১৯৪১ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি যশোর জেলার ঝিকরগাছা থানার অন্তর্গত কৃষ্ণনগর গ্রামে এক বনেদী কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম কলিম উদ্দীন এবং মাতার নাম মরহুম আরিছন নেছা।
১৯৬৩ সালে ঝিকরগাছা থানার অন্তর্গত লাউজনি লক্ষীপুর গ্রামের মেয়ে হাসিনা আক্তারের সাথে তাঁর বিবাহ হয়। তিনি ২ পুত্র এবং ২ কন্যার জনক। বর্তমানে গ্রামে থাকেন এবং কৃষি পেশায় নিযুক্ত।
শিক্ষাজীবন:
হোসেনউদ্দিন হোসেনের প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি হয় কৃষ্ণনগর গ্রামে পল্লীমঙ্গল সমিতির প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন ঝিকরগাছা উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে। দশম শ্রেণী পর্যন্ত তিনি এই বিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেন। ১৯৫৭ সালে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধিনে তিনি প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়ে ম্যাট্রিক পাশ করেন। ১৯৫৯ সালে একই বোর্ড থেকে প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়ে আই-এ পাশ করেন।
সাহিত্যকর্ম:
প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি তাঁর কোন আস্থা না থাকায় একাডেমিক শিক্ষা তিনি এখানেই শেষ করেন। শৈশবকাল থেকে হোসেনউদ্দীন হোসেন কবিতা লিখতে শুরু করেন। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি একটি হাতে লেখা পত্রিকা প্রকাশ করেন। তাঁর প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় ১৯৫৫ সালে কোলকাতার দৈনিক লোকসেবক পত্রিকায় ছোটদের বিভাগে। এরপর পর্যায়ক্রমে কোলকাতা ও ঢাকার বিভিন্ন পত্রিকায় নিয়মিত তাঁর গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ প্রকাশিত হতে থাকে। পত্রিকাগুলোর মধ্যে রয়েছে দৈনিক লোকসেবক, দৈনিক বাংলা, দৈনিক জনতা, দৈনিক সত্যযুগ, চাঁদের হাট, সংবাদ, কালের পাতা, সমকাল, ইত্তেফাক, জনকন্ঠ, ভোরের কাগজ, যুগান্তর, আজকের কাগজ, নয়াদিগন্ত, মাসিক সাহেন, মাসিক পূবালি, সাপ্তাহিক বিচিত্রা, ভারত বিচিত্রা, শৈলী, কলকাতা থেকে প্রকাশিত নন্দন, ক্রান্তি, কোরক, গ্রন্থসাথী, রাজশাহী থেকে প্রকাশিত চিহ্ন, নন্দন, গল্পকথা, শাশ্ববিধী, বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত উত্তরাধিকারসহ বহু পত্রপত্রিকা।
হোসেনউদ্দীন হোসেনের প্রকাশিত মোট গ্রন্থের সংখ্যা মোট ১৭টি। গ্রন্থসমূহ হচ্ছে:-
যশোরাদ্যদেশ (১৯৭৪), যশোর জেলার কিংবদন্তী (১৯৭৪)- ১ম খন্ড, যশোর জেলার কিংবদন্তী (১৯৭৯)- ২য় খন্ড, অমৃত বৈদেশিক (১৯৭৫), ভলতেয়ার ফ্লবেয়ার কলসত্ব এয়ী উপন্যাস ও যুগমানস (১৯৮৮), ঐতিহ্য আধুনিকতা ও আহসান হাবীব (১৯৯৪), বাংলার বিদ্রোহ (২০০৩) ১ম খন্ড, বাংলার বিদ্রোহ (২০০৬) ২য় খন্ড, নষ্ট মানুষ উপন্যাস (১৯৭৪), প্লাবন এবং একজন উপন্যাস (১৯৭৯), সাধুহাটির লোকজন উপন্যাস (২০০১), ইঁদুর ও মানুষেরা উপন্যাস (২০০৮), সোনালি জলের কাঁকড়া উপন্যাস (২০১১), FLOOD AND A NOOH উপন্যাস (২০০৫), সমাজ সাহিত্য দর্শন প্রবন্ধ (২০১০), রণক্ষেত্রে সারাবেলা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি (২০১২), লোকলোকোত্তর গাঁথা কিংবদন্তী (২০১২), উনাশির শ্রেষ্ঠগল্প সম্পাদনা (১৯৭৯) এবং মরাল সম্পাদনা (২০০৮ সাল থেকে প্রকাশিত হচ্ছে)।
সম্মাননা ও সাহিত্য পুরস্কারঃ
চাঁদের হাট পদক- ১৯৯০।
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ স্মৃতি পদক- ১৯৯৬।
বিজয় দিবস পদক- ১৯৯৭।
মাইকেল মধুসূদন একাডেমী পদক- ২০০১।
কোলকাতা বিধান নগর (সল্টলেক) মেলা পদক- ২০০৪।
কন্ঠশীলন সম্মাননা পদক- ২০০৬।
গুনীজন সম্মাননা পদক- ২০০৬।
এম, এল হাই স্কুল সম্মাননা পদক- ২০০৬।
ক্যাম্ব্রিজ স্বর্ণপদক (ইংল্যান্ড)- ২০০৬।
কপোতাক্ষ সম্মাননা পদক- ২০০৭।
আয়েসা জব্বার সম্মাননা পদক- ২০০৭।
বিবর্তন আজীবন সম্মাননা পদক- (ঢাকা) ২০১০।
বইমেলা সম্মাননা পদক- (যশোর ইনস্টিটিউট) ২০১০।
বইমেলা সম্মাননা পদক- (মনিরামপুর) ২০০৮।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক সম্মাননা পদক- ২০১০।
শিমুল পলাশ সম্মাননা পদক- (কলকাতা) ২০০৩।
লিটল ম্যাগাজিন সম্মাননা পদক- (কলকাতা) ২০০৩।
২০০৬ সালে হোসেনউদ্দীন হোসেনকে ক্যাম্ব্রিজ, ইংল্যান্ড থেকে Top-100 writers হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়। কোলকাতার রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১০ সালে বাংলা বিভাগে হোসেনউদ্দীন হোসেনের ইঁদুর ও মানুষেরা উপন্যাসটি এম, এ ক্লাসে পাঠ্যসূচী করা হয়েছে।
পেশাগত জীবন:
হোসেনউদ্দীন হোসেন ৬০ দশকে সাংবাদিকতা পেশা গ্রহণ করেন। দৈনিক সংবাদে কিছুকাল কাজও করেন। এক বছর পর এই পেশা থেকে সরে সাহিত্য সেবায় যুক্ত হন। তিনি ১৯৬৮ সালে যশোর থেকে প্রকাশিত পাক্ষিক নতুন দেশ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন। এই পত্রিকাটি ১৯৭১ সালের ২০ মার্চ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছিল।
যুদ্ধে অংশগ্রহণ:
১৯৬৫ সালে হিন্দুস্তান পাকিস্তান যুদ্ধে হোসেন উদ্দীন হোসেন স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণ করেন। তিনি এই সময় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে গেরিলা প্রশিক্ষণ নেন। তাঁকে যুদ্ধের মধ্যে ক্যাপ্টেন পদে উন্নত করা হয়। ১৯৬৭ সালে তিনি স্বেচ্ছায় সেনাবাহিনী থেকে ফিরে আসেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেন এবং কয়েকটি সফল অভিযান পরিচালনা করেন।
তথ্য সূত্র:
সাক্ষাৎকার
সর্বশেষ আপডেট:
জানুয়ারী ২০১২